For English Version
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
হোম

ভিজিডির ৯ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

Published : Monday, 28 June, 2021 at 11:03 AM Count : 187

কক্সবাজার জেলার পেকুয়ার রাজাখালী ইউনিয়নের ভিজিডির তালিকাভুক্ত ১৯০ জন উপকারভোগীর সঞ্চয়ের প্রায় ৯লাখ ১২ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে । 
উপকারভোগীরা প্রাপ্য টাকার  জন্য পরিষদ কার্যালয়ে আসা যাওয়া করতে করতে এক প্রকার ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। 

হতদরিদ্র এসব উপকারভোগী নারীর দুই বছরের সঞ্চয়ের টাকা আত্মসাত হয়েছে বলে ভূক্তভোগীরা জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে উপকারভোগীরা গনস্বাক্ষর করে ইউপির সচিব আল-আমিন ও ইউপির চেয়ারম্যান ছৈয়দ নুরের ব্যক্তিগত সহকারী (এপিএস) মোহাম্মদ আলীকে অভিযুক্ত করে ইউএনও বরাবরে লিখিত নালিশ দিয়েছেন।

পেকুয়ার ইউএনও মোতাছেম বিল্যাহ জানান, রাজাখালী ইউনিয়ন পরিষদের আওতাভুক্ত বেশ কিছু ভিজিডির উপকারভোগী নারী এ সম্পর্কিত বিষয়ে আমাকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। আমি মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে বিষয়টি দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধানের নির্দেশনা দিয়েছি। রাজাখালী ইউপির সচিবকে আমি ফোন দিয়েছি তবে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
সুত্র জানায়, ২০১৮-১৯ থেকে ২০২০ অর্থবছরে সরকার রাজাখালী ইউনিয়নে ১৯০ জন মহিলাকে দুই বছরের জন্য ভিজিডির তালিকাভুক্ত করে। প্রতিজন নারী প্রতিমাসে ৩০ কেজি করে খাদ্যশস্য পেয়ে থাকে। এ দিকে ভিজিডির তালিকাভুক্ত নারীদের প্রত্যেকের অনুকুলে সঞ্চয়ী দুইশত টাকা জামানত রাখার নিয়ম রয়েছে। ওই নিয়মের ভিত্তিতে প্রতিজন মাসওয়ারী দুইশত টাকা সঞ্চয়ী জামানাত দেন।

উপকারভোগীরা জানায়, প্রতিমাসে চাল উত্তোলনের সময় স্ব-স্ব ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ দিয়ে আমাদের কাছ থেকে সঞ্চয়ী দুইশত টাকা তুলে ইউপি সচিব ও চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত সহকারী আলীর কাছে টাকা জমা দেন। ২০১৮ থেকে ২০২০ দুই অর্থ বছরে প্রতিজন উপকারভোগী মাসিক ২০০ টাকা হারে প্রতি জন নারী সঞ্চয়ী টাকা ৪ হাজার ৮০০শত টাকা। সেই হিসেবে ১৯০ জন উপকারভোগীর ৯ লক্ষ ১২ হাজার টাকা সঞ্চয়ী রয়েছে। ভিজিডির দুই বছর মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেই সঞ্চিত টাকাগুলি উপকারভোগীদের অনুকূলে ছাড়করণ করা হয়। 

জানা গেছে, প্রত্যেক উপকারভোগীর জন্য স্ব-স্ব নামে ব্যাংক একাউন্ট রয়েছে। প্রতিমাসের দুইশত টাকা এশিয়া ব্যাংক রাজাখালী শাখায় তাদের একাউন্টে নিজেরাই জমা দেয়ার কথা। কিন্তু রাজাখালী ইউপিতে এর নিয়ম মানা হয়নি। তারা গ্রামপুলিশ দিয়ে টাকা আদায় করে আত্মসাত করে।

এ দিকে দুই অর্থ বছরের ভিজিডির মেয়াদকাল ৬ মাস আগে শেষ হয়েছে। তবে উপকারভোগীরা এখনও সঞ্চিত টাকা ফেরত পাননি। উপকারভোগী বুলবুল আক্তার, বেবী আক্তার, রোকসানা, সানজিদা ইয়াসমিনসহ আরো অনেকে বলেন, সঞ্চয়ী টাকার জন্য একাধিকবার পরিষদে গিয়েছেন। চেয়ারম্যান ও সচিবের কাছে গিয়ে কোন ধরনের সমাধান পাইনি। একজন আরেকজনের উপর চাপিয়ে দিয়ে এড়িয়ে যান। এখন টাকাগুলি আত্মসাতের চেষ্টা করা হচ্ছে। আমাদের জন্য এ টাকা অনেক বড়। সচিব ও চেয়ারম্যানের পিএস আলী টাকাগুলি আত্মসাতের পাঁয়তারা করছে।

রাজাখালী ইউপির ৩ নং ওয়ার্ড সদস্য আনোয়ার হোসেন জানান, অনেক মহিলা এ বিষয়ে আমাদেরকে বিরক্ত করছে। আসলে এরা তো গরীব। টাকাগুলি না পেলে আমাদের বদনাম হবে।

ইউপির ৯নং ওয়ার্ড সদস্য বাদশা মিয়া বলেন, প্রায় ছয় মাস পার হয়েছে অথচ তারা এখনো সঞ্চয়ী টাকা পায়নি। এটা দুঃখজনক। আপনারা গরীরের পক্ষ হয়ে একটু লেখালেখি করুন।

উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা জাকের হোসেন জানান, কিছু টাকা আমাদের হাতে আছে। তবে টাকার বড় অংক ইউনিয়ন পরিষদ জানবে কোথায় রয়েছে।

ইউপির চেয়ারম্যান ছৈয়দ নুরের ব্যক্তিগত সহকারী (এপিএস) মোহাম্মদ আলী জানান, আসলে তারা কেন আমার নাম বলছে। আমি পরিষদের দায়িত্বশীল কেউ নই। দফাদার ও এনজিও মাঠকর্মী এক মহিলা টাকা তুলে সচিবকে জমা দেন। পরবর্তীতে ওই টাকা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কাছে জমা করেন। এখানে চেয়ারম্যান আর আমার কোন হাত নেই। তবে তিনি জানান, ব্যাংকে ১৩ মাসের টাকা জমা আছে। আত্মসাতের সুযোগ নেই।

ইউপি সচিব আল আমিন বলেন, আমি পরিষদে নতুন এসেছি। আগের সচিব বিষয়টি জানবেন। টাকা ফেরত দেয়ার কথা তাদেরকে আশ্বস্ত করেছি। কিছু টাকা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ও কিছুু টাকা ব্যাংকে আছে। ইউপির চেয়ারম্যান ছৈয়দ নুর জানান, টাকা কোথায় আছে সেটি বের করবো। অবশ্যই সঞ্চয়ের টাকা মহিলাদের কাছে ফেরত দেব।

এনইউ/এনএন

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,