For English Version
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
হোম

গভীর সমুদ্রেও মিলছে না ইলিশ

Published : Monday, 28 June, 2021 at 10:39 AM Count : 221

ফাইল ছবি
ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার ঢালচর ইলিশ ঘাট থেকে প্রায় পঁয়ত্রিশ কিলোমিটার দূর গভীর সমুদ্র। অন্তত আড়াই ঘণ্টা ট্রলার চালিয়ে সেখানে পৌঁছাতে হয়। যেখানে সাধারণত কারো যাওয়া হয় না; কেবল জেলেরাই যান জীবিকার প্রয়োজনে। এ যেন এক যুদ্ধ। এ জন্য প্রস্তুতিও কম নয়। খাবার রান্নার জন্য প্রয়োজনীয় সদাই কেনা, ইঞ্জিন চালাতে তেল, ইলিশ সংরক্ষণের জন্য পর্যাপ্ত বরফ- সবকিছু নিয়ে ট্রলারে উঠতে হয়। এমনকি খাবার পানিও নিতে হয় স্থল থেকে। 

অথচ কেমন ইলিশ মিলবে? কখন ফেরা হবে স্থলে? আদৌ ফেরা হবে কিনা- জানা থাকে না জেলেদেরও। জীবিকার তাগিদে স্বজনদের ছেড়ে সমুদ্রে মাছ ধরতে এসে জেলেরা একেবারেই অহসায়। এমনকি ট্রলার বিকল হয়ে গেলেও তাদের উদ্ধারে সাহায্য পাওয়া কঠিন।

ঢালচরের তৈয়ব আলী মাঝির বলেন, পূর্ণিমার চাঁদ হেলে পড়েছে পশ্চিমের আকাশে। সমুদ্রে ইলিশের জাল ফেলা হয়েছে অনেক আগেই। এরই মধ্যে জাল টানার সময় হয়ে এলো। সমুদ্রে উত্তাল ঢেউ। নোনাজলের ঝাপটা এসে ভিজিয়ে দিচ্ছে ট্রলারের সবকিছু। জাল টানার জন্য জেলেরা নিজ নিজ অবস্থান নিলেন। শুরু হলো জাল টানা। কেবিনের ওপরে ট্রলারের হাল ধরে থাকা মাঝি থেকে শুরু করে সকলের চোখ জালের দিকে। কই? ইলিশের তো দেখা নেই অনেকক্ষণ জাল টানার পর দুয়েকটি ইলিশের দেখা মিলল।

চরফ্যাশন উপজেলার ঢালচর বাংলাদেশের সর্বদক্ষিণে সমুদ্র মোহনার একটি দ্বীপ ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নে অন্তত ৯৫ শতাংশ মানুষ মাছ ধরার ওপরে নির্ভরশীল। ইলিশের মৌসুমে এই এলাকাটি জমজমাট হয়ে ওঠে। শুধু ঢালচরের জেলে কিংবা ইলিশ ব্যবসায়ী নয়, এখানে এই সময় বিভিন্ন এলাকা থেকে জেলে, ইলিশ ব্যবসায়ী, বরফ ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ আসে। দিনের পর দিন ইলিশ শূন্য থাকায় হতাশাগ্রস্ত এই সব মানুষ । 
অন্যদিকে নদীতে ইলিশ শূন্য থাকায় চরফ্যাশনের জেলে পাড়ার ৪০ হাজার জেলে ঘাটে বসেই বেকার সময় কাটাচ্ছেন। দাদনের বোঝা ভারি হয়ে উঠায় চৌদ্দ পুরুষের পেশা ছেড়ে পালিয়ে গেছে প্রায় ১০ হাজার জেলে। দাদনভুক্ত জেলেরা পালিয়ে যাওয়ায় আড়ৎ মালিকদের সহস্রাধিক ট্রলার ঘাটে পড়ে আছে। ফলে চরফ্যাশন উপকূলের মাছঘাটের ট্রলার এবং জেলেদের কেন্দ্র করে প্রায় ৭০০ কোটি টাকার বিনিয়োগের ভবিষ্যৎ নিয়ে আড়ৎমালিক, কেরিংপার্টি আর শহরকেন্দ্রিক মোহাজনরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। 

চরফ্যাশন উপকূলে ঢালচর, সামরাজ, খাজুর গাছিয়া, বেড়িভাঙ্গা, কাঙ্গালী, তিলখালী, বেতুয়া, পাতিলা, মনুরা, ডাকাতিয়া, বকসী, কচ্চপিয়াসহ ছোট বড় ২০টি ঘাটে ইলিশের এই মৌসুমে ৩০ থেকে ৪০ হাজার জেলে রয়েছে। মৌসুমের শুরু থেকে আজ পযর্ন্ত একটানা ইলিশ শূন্যতার কারণে হতাশ জেলেরা এখন ঘাটে বসেই অলস সময় কাটাচ্ছে। 

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মিনার হোসেন মারুফ জানান, জাটকা সংরক্ষণে সরকার এই এলাকার ৪০ হাজার ২৬৪ জন জেলের মধ্যে এবার মাত্র ১৯ হাজার  ৩৩ জনকে ৪০ কেজি করে চাল বরাদ্ধ দেওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এত কিছু বরাদ্দ হওয়ার পরও জেলেরা জাটকাসহ পোনা ধ্বংস করছেন। সে জন্যই বড় ইলিশ পাচ্ছেন না।‘শুধু ভোলা নয়, বিভিন্ন জেলা থেকে খবর পেয়েছি, নদীতে ইলিশসহ সব মাছেরই আকাল। জুন-জুলাই-আগস্ট ইলিশের মৌসুম হলেও ভরা মৌসুম সেপ্টেম্বর-অক্টোবর। আশার কথা হচ্ছে, নদীতে মাছ আসবে। তবে এ জন্য পর্যাপ্ত বৃষ্টি ও ঢেউ দরকার।’

-এসএফ/এনএন

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,