১৯ বছর পর হারানো ছেলেকে ফিরে পেলেন মা
Published : Saturday, 26 June, 2021 at 10:39 AM Count : 129
ছোটবেলায় লঞ্চঘাটে হারিয়ে যাওয়ার দীর্ঘ ১৯ বছর পরে মাকে খুঁজে পেয়ে এখন আনন্দে দিন কাটছে হকার (সংবাদপত্র বিক্রেতা) সোলায়মান ও মা আমেনা বেগমের।
বরগুনা প্রেস ক্লাবের সদস্য জাহাঙ্গীর কবীর মৃধা সোলায়মানের হারিয়ে যাওয়ার ঘটনা জানতে পেরে গত ১৮ জুন ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। এরপর বেতাগী উপজেলার পার্শ্ববর্তী আমড়াগাছিয়া এলাকায় ২২ জুন তার মায়ের সন্ধান মেলে। সে দিনই দু'জনের প্রথম সাক্ষাৎ করেন।
জানা গেছে, সংবাদপত্র বিক্রেতা হিসেবে পরিচিত মুখ সোলায়মান। কিন্তু ২৬ বছরের এই দরিদ্র তরুণের জীবনের গল্পটা ছিল সবার অজানা। কোথায় তার বাড়ি, কোথায় তার বাবা-মা কিছুই জানতো না সোলায়মান।
সোলায়মানের বাবা চট্টগ্রামে দিনমজুরের কাজ করে সপরিবারে বসবাস করতেন। এখন থেকে ১৯ বছর আগে (২০০২ সাল) বাবা বেল্লাল হোসেন ও মা আমেনা বেগমের বনিবনা না হওয়ায় স্বামীর নির্যাতনের শিকার হয়ে সাত বছরের ছোট্ট শিশু সোলায়মানকে নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে বরগুনার বেতাগীতে বাবার বাড়ির উদ্দেশ্য রওয়ানা দেন আমেনা বেগম।
জানা যায়, চাঁদপুর লঞ্চঘাট এসে মায়ের কাছ থেকে হারিয়ে যান সোলায়মান। সেই থেকে শুরু হয় মা-ছেলের বিচ্ছিন্ন জীবনের করুণ কাহিনী। ছেলেকে হারিয়ে কোথায়ও খুঁজে না পেয়ে পথে পথে ঘুরতে থাকেন আমেনা বেগম। আত্মীয়-স্বজনদের বাড়ি বাড়ি ঘুরে ছেলের খোঁজে অনেকটা মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন তিনি।
শিশু সোলায়মানকে চাঁদপুর লঞ্চ ঘাটে কাদঁতে দেখে আলম মোল্লা ও হাফিজা বেগম দম্পতি দেড় বছর লালন পালন করে বরগুনা সরকারি শিশু পরিবারে ভর্তি করে দেন। সেখান থেকে সোলায়মান কারিগরি শিক্ষায় উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে। পেশা হিসেবে বেছে নেন সংবাদপত্র বিক্রি।
সোলায়মান বলেন, আল্লাহর কাছে অনেক শুকরিয়া ১৯ বছর পরে হলে মাকে কাছে পেয়ে আমি এখন ভালোই কাটাচ্ছি। মা আমেনা বেগমও খুশীতে আত্মহারা।
আমেনা বেগম বলেন, ‘অনেক দিন পর অইলেও ছেলেরে পাইয়া সুহেই আছি (অনেক দিন পর হলেও ছেলেরে পেয়ে সুখেই আছি)। য্যারা লইয়া আইছে হেগো আল্লায় বাঁচাইয়া রাহুক (যারা নিয়ে আসছে তাদের আল্লায় বাঁচাইয়া রাহুক)।’
সোলায়মানের হারিয়ে যাওয়া মাকে খুঁজে পেতে যারা কাজ করেছেন তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন বরগুনা প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি জাফর হোসেন হাওলাদার, যমুনা টেলিভিশনের বরগুনা প্রতিনিধি ফেরদৌস খান ইমন, ক্যামেরাপার্সন সিফাত ও রুবেল।
-এসকে/এমএ