ফল রক্ষার নামে পাখি শিকার
Published : Monday, 17 May, 2021 at 1:05 PM Count : 393
মেহেরপুরের গাংনীর বিভিন্ন স্থানে মৌসুমি ফল লিচুর রক্ষার নামে কারেন্ট জালের ব্যবহার বেড়েছে। এতে করে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি ওই জালে আটকা পড়ে মারা যাচ্ছে।
স্থানীয় বন বিভাগের নীরবতায় বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা অবাধে পাখি শিকার করছেন বলে মতামত ব্যক্ত করেছেন অনেকে।
তবে উপজেলা প্রশাসন বলছেন, বিষয়টি দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা গেছে, লিচু গাছের উপরে কারেন্ট জাল বিছিয়ে রাখা হয়েছে। কোথাও কোথাও গোটা লিচু বাগানের চারিদিক কারেন্ট জাল টাঙানো রয়েছে। বিভিন্ন বাগানে টাঙানো জালে জীবিত ও মৃত পাখি ঝুলছে। আবার কোথাও কোথাও পড়ে আছে পাখির মৃতদেহ। কোন কোন বাগান মালিক আবার পাখি শিকার করে তার মাংস খান।
মেহেরপুর বার্ডস ক্লাবের সদস্য ও পাখি সংরক্ষণকারী মাজেদুল হক মানিক বলেন, পাখি প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করে। কিছু কিছু পাখি অর্থাৎ নিশাচর জাতীয় পাখি বিষাক্ত সাপ ও ইঁদুর খেয়ে ফসল রক্ষা করে। ফসলের উপর থেকে বিরুপ প্রভাব ও প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার্থে প্রকৃতির বন্ধু পাখি রক্ষায় প্রশাসনকে এখনই
পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানাই।
গাংনী ভিটাপাড়ার মাঠে লিচু বাগান মালিক হেলাল বলেন, পাখি শিকারের কোন উদ্দেশ্য নয়, পাখিরা বাগানের ফল খেয়ে ও নষ্ট করে। এদের কবল থেকে ফল রক্ষার্থে কারেন্ট জাল ব্যবহার করা হয়েছে।
পাখি শিকার একটি জঘন্যতম অপরাধ স্বীকার করে গাছ থেকে জাল সরিয়ে নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
হেমায়েতপুর লিচু বাগানের মালিক আনারুল ইসলাম বলেন, তিনি জাল টাঙিয়েছিলেন কিন্তু কয়েকটি বাঁদুড় মারা যাবার পর জাল খুলে নিয়েছেন। ক্ষুধার্ত পাখিরাই শুধু নয়, অনেক নিরীহ পাখি যারা তপ্ত রোদ থেকে বাঁচার জন্য ছায়া খোঁজে তারাও জালে আটকা পড়ে। আমি কোন পাখি মেরে ফেলেনি।
মেহেরপুর জেলা বার্ডস ক্লাবের সভাপতি ও পাখি গবেষক এম এ মুহিত বলেন, এখনই যদি এই সংস্কৃতি বন্ধ না করা যায় তাহলে বিশাল পরিবেশগত সমস্যা তৈরি
করবে এবং কোন এক সময় এই স্বর্গীয় উপহার পাখি বিলুপ্ত হবে।
মেহেরপুর চুয়াডাঙ্গা সড়কে অয়ন ফিলিং স্টেশনের নিকট একটি ফলের বাগানে কারেন্ট জালে আটকা পড়ে পাখির মৃত্যু দেখে এই পাখি গবেষক অবজারভারের সঙ্গে আলাপকালে হতাশার এ কথা বলেন।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আর এম সেলিম শাহনেওয়াজ বলেন, পাখি শিকার জঘন্যতম অপরাধ। এলাকায় গিয়ে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
-এমআর/এমএ