নবীনগরে পরীক্ষামূলক ভাবে গ্যাস উত্তোলন শুরু
Published : Thursday, 5 March, 2020 at 10:40 AM Count : 240
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের একটি কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলন শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ৭টা থেকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কূপ থেকে পরীক্ষামূলকভাবে গ্যাস উত্তোলন শুরু করে। পরবর্তী ৩৬ ঘণ্টা পরীক্ষামূলক ভাবে গ্যাস উত্তোলন করা হবে।
রাষ্ট্রীয় তেল গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স) ওই কূপে অনুসন্ধান চালিয়ে গ্যাসের সন্ধান পায়। যে চাপে এখান থেকে গ্যাস উত্তোলন হচ্ছে তাতে বেশ আশাবাদী হয়ে উঠেছেন সংশ্লিষ্টরা। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দুই একদিনের মধ্যে এখানে আসতে পারেন বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, নবীনগরের লাউর ফতেহপুর ইউনিয়নের হাজীপুর গ্রামে অবস্থিত নতুন এ কূপটি শ্রীকাইল গ্যাস ফিল্ডের অন্তর্ভূক্ত। শ্রীকাইল পূর্ব-১ নামে ওই কূপ থেকে প্রতিদিন ১২ থেকে ১৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন সম্ভব হবে। প্রসেস প্লান্টের মাধ্যমে শোধন করে এ গ্যাস জাতীয় গ্যাস ফিল্ডে সরবরাহ করা হবে। তবে এ ক্ষেত্রে কিছু সময় লাগবে। কেননা, কুমিল্লা জেলার অন্তর্গত শ্রীকাইল গ্যাস ক্ষেত্রটি ওই কূপ থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে।
নতুন এ কূপে গ্যাস পাওয়ায় নবীগরের মানুষের মাঝে আনন্দ বিরাজ করছে। তারা মনে করছে, এটি মুজিববর্ষে প্রকৃতির সেরা উপহার। ওই কূপ থেকে পাওয়া গ্যাস নবীনগরে সরবরাহের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন এলাকার মানুষ। শ্রীকাইল পূর্ব-১ গ্যাস কূপটি খননে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৭০ কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০১৭ ও ২০১৮ সালে ওই এলাকায় ত্রি-মাত্রিক ভূতাত্ত্বিক জরিপ পরিচালনরা করে গ্যাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। ২০১৯ সালের ২৮ অক্টোবর গ্যাসের অস্তিত্ব পেয়ে সেখানে খনন কাজ শুরু করে বাপেক্স। খনন কাজ শেষ হয় এ বছরের ৩১ জানুয়ারি। এরপর বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হয়। মঙ্গলবার রাতে একটি পাইপের মুখে আগুন দিয়ে গ্যাসের চাপ পরীক্ষা করা হয়।
শ্রীকাইল পূর্ব-১-গ্যাস প্রকল্পের খনন কর্মকর্তা মুহাম্মদ মহসিন আলম জানান, প্রাথমিকভাবে কূপটিতে গ্যাসের চাপ বেশ ভালো পাওয়া যাচ্ছে। আরো অধিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর প্রসেস প্লান্টে এই গ্যাস প্রক্রিয়াজাত করে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হবে।
শ্রীকাইল পূর্ব-১ গ্যাস ক্ষেত্রের প্রকল্প পরিচালক সৈয়দ মুহাম্মদ কবীর জানান, মঙ্গলবার রাতে কূপের পাইপের মুখে আগুন দিয়ে এর চাপ পরীক্ষা করা হয়। ৩৬ ঘণ্টা পর্যন্ত চাপের পরীক্ষা করা হবে।
বাপেক্সের মহাব্যবস্থাপক (ভূ-তত্ত্ব) মো. আলমগীর হোসেন জানান, মাটির নীচে প্রায় ৩ হাজার ৮০ মিটার গভীরে গ্যাসের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। গ্যাসের রিজার্ভ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। কূপ থেকে দৈনিক ১২ থেকে ১৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
নবীনগর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মনিরুজ্জামান জানান, মুজিববর্ষে এটা আমাদের জন্য প্রকৃতির অনন্য সেরা উপহার। আমরা খুব খুশি। আশা করছি এ কূপ থেকে উত্তোলিত গ্যাসের সুবিধা নবীনগরের মানুষ পাবে। এখান থেকে নবীনগরে গ্যাস দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ করছি।
-ডিএইচ/এমএ