অসময়ে তরমুজ চাষ করে সফল কৃষকরা
Published : Friday, 11 December, 2020 at 3:45 PM Count : 505
গতানুগতিক ফসলে লাভ না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন ভোলার কৃষকরা। তাই ভাগ্য বদলাতে এবার অসময়ে তরমুজ চাষ করে সফলতার মুখ দেখছেন তারা।
উন্নত কৃষি-প্রযুক্তি ব্যবহার করে যেমন ফলন ভালো হচ্ছে, তেমনি দামও পাচ্ছেন সন্তোষজনক। তাই ব্ল্যাক বেবি জাতের তরমুজ চাষে ফের আশার আলো দেখতে শুরু করেছেন জেলার কৃষকরা।
সরেজমিনে ভোলা সদর, দৌলতখান ও বোরহানউদ্দিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষার তারতম্য না থাকায় গতানুগতিক ফসলে ক্ষতির সম্মুখিন হয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন ভোলার কৃষকরা। গত বছর ভোলায় প্রথমবারের মতো অসময়ে ব্ল্যাক বেবি তরমুজ চাষ করে সফলতা পায় দৌলতখান উপজেলার চরপাতা গ্রামের বেকার যুবক সৌরভ হাওলাদার। তার এই সাফল্যের পেছনে প্রেরণা যুগিয়েছে গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থা। কম খরচে বেশি ফলন ও বাজারে চাহিদা থাকায় তার দেখাদেখি বেবি তরমুজ চাষে অন্যরাও আগ্রহী হতে শুরু করে।
এ বছর পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থার নিকট থেকে বীজ, প্রশিক্ষণসহ নানা উপকরণ নিয়ে জেলার ৬০ জন চাষি ৬ একর জমিতে মাচা পদ্ধতিতে ব্ল্যাক বেবি তরমুজ আবাদ করেন। দেশি তরমুজ চাষের অর্ধেক খরচ বেবি তরমুজে। মাচায় চাষ করায় তরমুজ নষ্ট হবার কোন সম্ভাবনা থাকে না। আর ভালো ফলনে কৃষকের মুখে হাসি ফোটে। দুই মাসেই এ তরমুজ বিক্রির করতে পারেন তারা। বাজারে ভালো দামও পান। এসব তরমুজ দেখতে সুন্দর ও খেতে সুস্বাদু হওয়ায় আশপাশের মানুষ ক্ষেত থেকেই কিনে নেন।
বোরহানউদ্দিন উপজেলার সাচরা গ্রামের চাষি স্বজল ভাওয়াল ও চান মিয়া জানান, এমন তরমুজ আমরা কখনো দেখিনি। গ্রামীণ জন উন্নয়ণ সংস্থা থেকে আমারা বীজ, সার ও প্রশিক্ষণ নিয়ে ১০ শতাংশ জমিতে ব্ল্যাক বেবির চাষ করি। লাভও হয় ভালোই। ১০ শতাংশ জমিতে ১৫ হাজার টাকা খরচ করে এ বছর ৩৫ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করেন তারা।
একই উপজেলার রাম কেশব গ্রামের কৃষক মিথিল চৌধুরীও ব্ল্যাক বেবি জাতের তরমুজ চাষ করেছেন। তিনি বলেন, বিগত সময়ে বৈরী আবহাওয়ার কারণে গতানুগতিক ফসল চাষে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি। তাই এ বছর ৮ শতাংশ জমিতে ব্ল্যাক বেবি তরমুজ চাষ করেছি। ফলনও ভালো হয়েছে। ৮ শতাংশ জমিতে ১২ হাজার টাকা খরচ করে ৩০ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করেছি।
তাদের দেখাদেখি এলাকার কৃষক ছিদ্দিক বেপারী, জাকির হোসেন ও শহিদুল বেপারীসহ অনেকেই সামনের বছর এ জাতের তরমুজ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন মহিন বলেন, ভোলায় এক সময় ব্ল্যাক বেবি তরমুজ চাষ হতো না। ২০১৯ ও ২০২০ পর পর দুই বছর বীজ, সার ও প্রশিক্ষণ দিয়ে কৃষকদের সহায়তা করেছি। চলতি বছর কৃষকরা ব্ল্যাক বেবি তরমুজ চাষে ব্যাপক সফলতা অর্জন করেছে। এছাড়া বাজারে বিক্রি করেও ভালো দাম পায়। ফলে আগামী বছর অনেক কৃষক নিজ উদ্যোগে এই তরমুজ চাষে এগিয়ে আসবে বলে আশা করছি।
-এএম/এমএ