For English Version
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
হোম

বিভিন্ন দেশে কেন গাঁজাকে বৈধতা দেয়া হচ্ছে?

Published : Wednesday, 12 December, 2018 at 8:54 PM Count : 589

গাঁজার ব্যবহার বিষয়ে বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশের নীতিমালা ও মানসিকতার পরিবর্তন হচ্ছে।  মেক্সিকোর নতুন সরকার গাঁজার 'বিনোদনমূলক ব্যবহার'কে বৈধতা দেয়ার পরিকল্পনা করছে। একই ধরণের পরিকল্পনা রয়েছে লুক্সেমবার্গের পরবর্তী সরকারেরও।

অন্যদিকে, গাঁজার ব্যবহারকে বৈধতা দেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে গণভোট আয়োজন করার চিন্তা করছেন নিউজিল্যান্ডের নেতারা।

গাঁজার বিষয়ে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশের মানুষ ও সরকারের মনোভাব পরিবর্তনের ধারা বিশ্লেষণ করে অনুমান করা যেতে পারে যে গাঁজার ব্যবহারের জনপ্রিয়তা বিবেচনা করে অন্যান্য দেশও এর উৎপাদন ও ব্যবসার প্রসারে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হবে।

কিন্তু গাঁজার ব্যবহারের ক্ষেত্রে একের পর এক দেশ কেন তাদের নীতিমালা শিথিল করছে?
মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ
২০১২ সালে উরুগুয়ে বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে বিনোদনমূলক ব্যবহারের জন্য গাঁজাকে বৈধতা দিতে যাচ্ছে বলে ঘোষণা করে।

তবে এই নীতি প্রণয়নের মূল উদ্দেশ্য ছিল গাঁজার অবৈধ বিক্রি ও চোরাচালান সংশ্লিষ্ট অপরাধ কমিয়ে আনা এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে গাঁজার ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করা।

সেবছরই যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন স্টেট আর কলোরাডোর প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকরা চিকিৎসা বাদে অন্যান্য কাজে ব্যবহারের জন্য গাঁজার ব্যবহারে বৈধতা দেয়ার নীতির সমর্থন করে।

প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সময় মার্কিন সরকার দেশটির রাষ্ট্রীয় আইন প্রয়োগে শিথিলতা দেখিয়ে রাজ্যগুলোকে নিজেদের নাগরিকদের চাহিদা অনুযায়ী আইন প্রণয়নে উৎসাহ দেয়।

যার ফলস্বরুপ ওয়াশিংটন ডিসি'সহ আরো আটটি রাজ্যে গাঁজার বিনোদনমূলক ব্যবহার বৈধতা পায়। অন্যান্য রাজ্যেও গাঁজা ব্যবহার সংক্রান্ত আইনের সাজা কমানো হয়।

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি রাজ্যের ৩৩টিতেই চিকিৎসা কাজে গাঁজা ব্যবহার বৈধ।

আমেরিকার এই পরিবর্তনের হাওয়ায় প্রভাবিত হয়েছে উত্তর আমেরিকার আরো দু'টি দেশ। এবছরের অক্টোবর মাস থেকে গাঁজা বিক্রি ও ব্যবহারকে বৈধতা দিয়েছে কানাডা সরকার।

মেক্সিকোও যে গাঁজাকে বৈধতা দেবে তা অনেকটা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়।

নীতিমালায় নানা ধরণের পরিবর্তন এনেছ অন্য অনেক দেশও।

গাঁজা বিক্রি অবৈধ হলেও সামান্য পরিমাণে গাঁজা সাথে থাকা বর্তমানে অপরাধ বলে বিবেচিত হয় না ব্রাজিল, জ্যামাইকা ও পর্তুগালে।

স্পেনে ব্যক্তিগতভাবে গাঁজা ব্যবহার বৈধ, আর নেদারল্যান্ডসের কফি শপগুলোতে গাঁজা বিক্রি করার অনুমতি রয়েছে।

আর চিকিৎসা কাজে গাঁজার ব্যবহার বৈধ করেছে অনেক দেশই।

এছাড়া অনেক দেশই গাঁজার ব্যবহার বিষয়ে নিজেদের মনোভাব ও নীতিমালা পরিবর্তনের বিষয়ে চিন্তা করছে।

যুক্তরাজ্যে নভেম্বর থেকে গাঁজা ও গাঁজা থেকে উৎপাদিত দ্রব্য রোগীদের সেবন করার নির্দেশনা দেয়ার অনুমতি পেয়েছে চিকিৎসকরা।
দক্ষিণ কোরিয়াও চিকিৎসা কাজে গাঁজার ব্যবহার বৈধ করেছে, তবে তা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত।
গাঁজার তেল বিক্রি করার জন্য মালয়েশিয়ার এক তরুণকে মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি দেয়ার পর সেদেশে গাঁজাকে বৈধতা দেয়ার বিষয়ে বিতর্ক শুরু হয়।
প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ব্যক্তিগতভাবে গাঁজার ব্যবহার বৈধ করেছে দক্ষিণ আফ্রিকার আদালত।
চিকিৎসা কাজে ব্যবহারের জন্য গাঁজার চাষকে বৈধতা দেয়া প্রথম আফ্রিকান দেশ লেসোথো।
অর্থনীতিকে সহায়তা করতে চিকিৎসা কাজে গাঁজার ব্যবহার বৈধ করার বিষয়ে চিন্তা করছে লেবানন।

কীভাবে পরিবর্তন হলো মানসিকতা?
অনেক দেশেই গাঁজার বৈধতা পাওয়ার বিষয়টি শুরু হয়েছে গাঁজার ব্যবহার সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মনোভাব পরিবর্তনের সাথে সাথে।

যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় চিকিৎসা কাজে গাঁজার ব্যবহারের বিষয়ে মানুষের মনোভাব পরিবর্তন হতে থাকে মূলত, জটিল শারীরিক সমস্যায় ভুগতে থাকা শিশুদের শারীরিক যন্ত্রণার বিষয়ে সচেতনতা তৈরি হওয়ার পর।

একই ধরণের ধারা লক্ষ্য করা গেছে যুক্তরাজ্যের ক্ষেত্রেও।

যুক্তরাজ্যে 'চিকিৎসা কাজে' গাঁজার ব্যবহার বৈধতা পেলেও ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য অনুযায়ী 'বিনোদনমূলক ব্যবহার' অবৈধই থাকবে।

গাঁজার ব্যবসার বিস্তৃতি
দক্ষিণ আমেরিকার অনেক দেশেই কৃষকদের গাঁজা চাষে উদ্বুদ্ধ করে সেসব দেশের সরকার।

পৃথিবীর অনেক দেশেই চিকিৎসার কাজে গাঁজা ব্যবহৃত হচ্ছে, নিকট ভবিষ্যতে আরো অনেক দেশে ব্যবহার শুরু হবে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। সম্ভাবনাময় এই খাত থেকে মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যেই বিভিন্ন দেশের সরকার গাঁজা চাষকে গুরুত্ব দেয়।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের উদাহরণ থেকে অনুমান করা যায়, চিকিৎসা কাজে গাঁজার ব্যবহার বৈধ হলে সেই ধারা অনুসরণ করে গাঁজার বিনোদনমূলক ব্যবহার বৈধ করার দাবিও জোরালো হবে, যার ফলে বৈশ্বিক ভাবে গাঁজার ব্যবসা আরো প্রসার লাভ করবে।

তবে এখন পর্যন্ত এক দেশ থেকে সীমান্ত পার করে আরেক দেশে গাঁজা নেয়ার ব্যাপারে আইনি বাধা রয়েছে।

চিকিৎসা কাজে ব্যবহার করা গাঁজাই শুধুমাত্র আমদানি-রপ্তানির আওতায় পরে এবং আন্তর্জাতিক মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বোর্ড নামের একটি সংস্থার দ্বারা এর পরিমাণ ঠিক করা হয়।

গাঁজার প্রভাব

বিভ্রান্তি, দুশ্চিন্তা ও সন্দেহ তৈরি করতে পারে।
তামাকের সাথে মিশিয়ে পান করলে ফুসফুস ক্যান্সারের মত রোগের সম্ভাবনা বাড়তে পারে।
নিয়মিত ব্যবহারের সাথে মানসিক অসুস্থতা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
বিভিন্ন ধরণের মানসিক ও শারীরিক রোগের পরে তৈরি হওয়া পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার প্রভাব প্রশমন করে।
মৃগীরোগ বা এইডসের মত রোগের চিকিৎসা করা সম্ভব কি না - সে বিষয়ে গবেষণা চলছে।   সূত্র: বিবিসি বাংলা।

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,