৪৫ বছরেও মুখে ভাত দেয়নি এ ব্যক্তি!
Published : Sunday, 18 November, 2018 at 10:36 PM Count : 761
বাঙ্গালী জাতির সঙ্গে মাছ ভাতের সম্পর্ক আদি থেকে বর্তমান পর্যন্ত। বাঙ্গালীদের খাবারের তালিকায় অন্যসব জিনিসের সঙ্গে ভাত যেন চাই ই চাই। কোর্মা, বিরিয়ানী, জর্দা, পায়েশ কিছুতেই যেন ভাতের মত তৃপ্তি দেয় না এদেশের মানুষের। কিন্তু কেউ যতি জন্মের পর একদিনের জন্যও ভাত না খায়, তাহলে অবাক হওয়াটাই স্বাভাবিক। এমনই এক ব্যতীক্রমধর্মী পুরুষ মো. দেলোয়ার হোসেন। মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার গড়পাড়া ইউনিয়নের চড় গড়পাড়া গ্রামে তার বাড়ি। বাবা মো. রহম আলী ব্যাপারী। মা টগরজান বেগম। দেলোয়ার জন্মের পর কোনদিন ভাত খায়নি। শুধুমাত্র রুটি আর ফলমূল খেয়েই তিনি বেঁচে আছেন। অন্যসব পুরুষের মত তিনিও সুস্থ স্বাভাবিক জীবনযাপন করছেন।
দেলোয়ারের ভাত না খাওয়ার এ কাহিনী মুখে মুখে। যারা তাকে দেখেনি একনজর দেখার জন্য অপেক্ষায় থাকে। দেলোয়ার পেশায় একজন চা বিক্রেতা। সকাল ৭টার সময় তার দোকান চালু হয়ে চলে রাত ১১টা পর্যন্ত। জেলার বাসট্যান্ড এলাকায় তিনি প্রায় ২৫ বছর ধরে চা বিক্রি করে আসছে।
চরগড়পাড়া গ্রামের নিম্নমধ্যবিত্ত এক পরিবারে দেলোয়ারের জন্ম। তার বাবা একজন কৃষক এবং মা গৃহিনী। চার ভাইয়ের মধ্যে দেলোয়ার সবার বড়। ৯৪ সালের জানুয়ারি মাসে দেলোয়ার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। তার স্ত্রী শিউলি বেগম এবং তিন ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে সুখি পরিবার তার। তার পরিবারের সবাই ভাত মাছ সহ সব বাঙ্গালী খাবার খেলেও তিনিই একমাত্র বিপরীত।
দারিদ্রতার কারণে দেলোয়ারের বেশি লেখাপড়া করা সম্ভব হয়নি। চড়গড়পাড়া আরজুবানু উচ্চ বিদ্যালয় থেকে অষ্টম শ্রেণি পাশ করার পর আর লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারেননি দেলোয়ার। সংসারের হাল ধরতে হয় তাকে। বাবাকে সাহায্য করতে তিনি কিছু দিন দুধ বিক্রির পেশায় জড়িয়ে পড়েন। সময়ের পরিবর্তে তিনি পেশা পরিবর্তন করে এখন চা বিক্রেতা।
মানিকগঞ্জ বাসট্যান্ডের সিদ্দিক খান সুপার মার্কেটের গেটে তার চায়ের দোকনটি। চায়ের দোকানের আয়েই চলে তার সংসার। সদাহাস্যউজ্জ্বল, বিনয়ী ও সৎ মানুষ হিসেবে দেলোয়ার মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে একটি পরিচিত মুখ।
দেলোয়ারের মায়ের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, ছোট বেলা থেকেই তার মুখে ভাত দেওয়া হলে বমি করে ফেলে দিত। এরপর দুধের দুধের সঙ্গে মিশিয়ে ভাত খাওয়ানোর চেষ্টা করি। কিন্তু তাতেও একই অবস্থা হওয়ায় শেষ পর্যন্ত রুটি খাওয়ানোর অভ্যাস করি। সেই থেকে দেলোয়র রুটি থেয়েই জীবনধারন করছে।
এইচএস