মির্জাগঞ্জে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীদের সংখ্যা
শয্যা সংকটে চিকিৎসা চলছে বারান্দা-সিঁড়ির পাশে
Published : Saturday, 5 October, 2024 at 6:11 PM Count : 48
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েই চলেছে। দিন দিন রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় শয্যা সংকুলান হচ্ছে না ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। ফলে সৃষ্টি হয়েছে শয্যা সংকট।
হাসপাতালের বারান্দা ও সিঁড়ির পাশে শুয়ে থেকে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে। ডেঙ্গু রোগীদের মশারী টানিয়ে থাকতে বলা হলেও হাসপাতালের বারান্দায় ও সিড়ির পাশে থাকায় তারা মশারী টানাতে পারেন না। তাই বাধ্য হয়ে বিষাক্ত কয়েল জ্বালিয়ে থাকতে হচ্ছে রোগী ও সাথে থাকা স্বজনদের। কোনো রকমে স্যালাইন ঝুলিয়ে বিছানা বিছিয়ে নিচ্ছেন চিকিৎসা। তবে অনেকেই আবার বাড়িতে বসে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার (০৩ অক্টোবর) দুপুর পর্যন্ত এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৬ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছেন। গত ২৪ ঘন্টায় নয় জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। দিন দিন রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যা হলেও বর্তমানে ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ১০১ জন। বর্তমানে রোগীদের চাপ সামলাতে হিমসিম খেতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষের।
তবে এখন পর্যন্ত কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি, সবাই সুস্থ হয়ে নিজ নিজ বাড়িতে ফিরছেন বলে জানান উপজেলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তেন মং।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলার চরখালী গ্রামের এক ব্যক্তি জানান, তার ছেলে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হলে বুধবার রাত ১০টার দিকে চিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। কিন্তু কোনো বেড (শয্যা) পাননি। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীর সংখ্যা বেশি তাই বাধ্য হয়ে বারান্দায় থাকতে হচ্ছে।
তিনি জানান, ডেঙ্গু রোগীদের জন্য আরও কয়েকটি ওয়ার্ড এবং শিশুদের জন্য আলাদা ওয়ার্ডের ব্যবস্থা করা হলে ভালো হতো। হাসপাতালের বিভিন্ন স্থানে আলাদা ভাবে রোগী থাকায় চিকিৎসা নিতেও সমস্যা হচ্ছে। বার বার লোডশেডিং, তাছাড়া মশা ও গরমে রোগীরা দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তেন মং জানান, হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর চাপ এতটাই বেড়েছে যে, অন্য রোগীদের ভর্তি রাখা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। ডেঙ্গু রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন নার্স ও চিকিৎসকরা।
তিনি জানান, ডেঙ্গু রোগী যদি এই হারে বাড়তে থাকে তাহলে স্যালাইনসহ ওষুধের সংকট দেখা দিতে পারে। আমরা কোনো রোগীকে ফেরত দিচ্ছি না, তবে মেঝেতে ও সিঁড়ির পাশে রোগীদেরকে রেখে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদ মিটিংয়ে আলোচনা করা হয়েছে এবং ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সকল পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তরিকুল ইসলাম জানান, উপজেলায় ডেঙ্গু রোগীদের সংখ্যা বাড়ছে। এ লক্ষ্যে জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে মশা নিধনের জন্য ফগার মেশিন সরবরাহ করতে দেয়া হয়েছে। শনিবার থেকে কাজ শুরু করা হবে। আমাদের ইউনিয়ন কমিটিগুলো এ নিয়ে কাজ করবে।
-কেবি/এমএ