ফকিরহাটে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা
Published : Sunday, 22 September, 2024 at 2:38 PM Count : 141
বাগেরহাটের ফকিরহাটে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েই চলছে। ইতোমধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩৭ জনসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন প্রায় অর্ধশত রোগী।
চিকিৎসকরা বলছেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সামাজিক সচেতনতা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।
উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। গত এক সপ্তাহে হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্রায় দুই হাজার রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে প্রচুর সংখ্যক জ্বরে আক্রান্ত রোগী রয়েছে। শুধুমাত্র জটিল রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়ে থাকে। এছাড়া অনেক ডেঙ্গু আক্রান্ত অসুস্থ রোগী খুলনার বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়ায় প্রকৃত রোগীর সংখ্যা জানা যাচ্ছে না।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, রোববার সকাল সাড়ে ৯টায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তিন জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন। হাসপাতাল ছেড়েছেন আরো দুই জন। আলাদা ওয়ার্ড না থাকায় সাধারণ রোগীদের সাথে ডেঙ্গু রোগীদের রাখা হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চারপাশে এক সপ্তাহ আগের বৃষ্টির পানি জমে রয়েছে। এসব পানিতে প্রচুর মশার লার্ভা দেখা গেছে।
চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা মন্তব্য করেন, ‘হাসপাতাল নিজেই যেন ডেঙ্গু রোগের আঁতুর ঘর।’
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সীমানার পেছনে নালা ভরাট করে একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠায় পানি নিস্কাশনের ড্রেন বন্ধ হয়ে গিয়ে জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পানি অপসরণে একাধিকবার উদ্যোগ নিয়েও কোনো সমাধান করতে পারেনি বলে জানান পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি ডেঙ্গু রোগী বিউটি আক্তার ও মুস্তাকীম বিল্লাহ জানান, তাদের পরিবারের সকলে জ্বরে আক্রান্ত। তাদের অসুস্থতার পরিমাণ বেশি হওয়ায় এখানে ভর্তি হয়েছেন। টেস্ট করার পর ডেঙ্গু হয়েছে বলে জানতে পারেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বহির্বিভাগে আসা জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের ডেঙ্গু টেস্টে অনিহা রয়েছে। পরীক্ষার পরিমাণ বাড়লে রোগীর সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাবে।
এদিকে, উপজেলার ফার্মেসিগুলোতে নাপা, প্যারাসিটামল, এইচ-প্লাস জাতীয় ওষুধের ক্রেতা বেশি বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু সাদাত মো. মফিদুল ইসলাম জানান, আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। হাসপাতালে ২৫০ টাকা সরকারি মূল্যে ডেঙ্গু টেস্টের ব্যবস্থা রয়েছে। বেসরকারি ভাবে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৪৫০ টাকা টেস্টের মূল্য নির্ধারণ নির্ধারণ করেছে সরকার। ভর্তি হওয়া রোগীদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামাল হোসেন জানান, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সামাজিক সচেতনতার বিকল্প নেই। সর্বপ্রথম এডিস লার্ভা জন্মানোর উৎস বন্ধ করতে হবে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এটি/এমএ