গুলি করে হত্যার পর লাশ পোড়ানো
আরাফাত ৩ দিনের রিমান্ডে
Published : Saturday, 14 September, 2024 at 4:41 PM Count : 89
গত ০৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আন্দোলকারীদের গুলি করে হত্যার পর সেগুলো একটি পুলিশ ভ্যানে তুলে আগুনে পোড়ানোর ঘটনায় সম্পৃক্ত ঢাকা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) আরাফাত হোসেনের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
শনিবার সকালে এ তথ্য জানান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক আবু তাহের মিয়া।
এর আগে শুক্রবার ঢাকার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাবেয়া বেগমের আদালতে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হলে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আত্মগোপনে থাকা আরাফাতকে বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর আফতাবনগর আবাসিক এলাকা থেকে যৌথ অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে র্যাব-৩ ও র্যাব-৪। গ্রেপ্তারকৃত আরাফাতের গ্রামের বাড়ি বরিশালে। প্রায় দুই বছর আগে ঢাকা জেলার গোয়েন্দা বিভাগে যোগ দেন তিনি। তবে এর আগে তিনি আশুলিয়া থানায় এসআই পদে চাকরি করেছেন।
পুলিশ জানায়, গত ১১ সেপ্টেম্বর ৩২৬ ধারায় আরাফাতের বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় একটি হত্যাচেষ্টার মামলা দায়ের করেন রবিউল সানি নামের এক ব্যক্তি। মামলায় শেখ হাসিনাসহ ৩০ জনকে আসামি করা হয়। এ মামলার ১০ নং আসামি হলেন আরাফাত। সেই হত্যাচেষ্টা মামলায় আরাফাতকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে ঢাকার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাবেয়া বেগমের আদালতে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হলে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
একই ঘটনায় অভিযুক্ত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহিল কাফিকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানোর ঘটনার মূল কারিগর সাময়িক বরখাস্ত হওয়া ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) আব্দুল্লাহিল কাফিকে বৃহস্পতিবার ফের পাঁচ দিনের রিমান্ডের নেওয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
গত ০২ সেপ্টেম্বর বিমানবন্দর থেকে কাফিকে আটক করে ডিবি পুলিশ।
মামলার উল্লেখযোগ্য অপর আসামিরা হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, ইউজিসির সাবেক সচিব ড. ফেরদৌস জামান, সাবেক সদস্য ড. মুহাম্মদ আলমগীর, ড. বিশ্বজিৎ চন্দ্র, ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় সাভার ও আশুলিয়ায় ১৮ জুলাই থেকে ০৫ আগস্ট পর্যন্ত পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন ৭৫ জন। গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন সাড়ে চার শতাধিক মানুষ, যাদের অনেকেই চিরতরে পঙ্গু হয়ে গেছেন।
পরবর্তীতে ৩০ আগস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও ব্যাপক ভাইরাল হয়। ভাইরাল হওয়া ১ মিনিট ১৪ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, দু'জন পুলিশ সদস্যের একজন হাত ও একজন পা ধরে ভ্যানে একটি লাশ নিক্ষেপ করছেন। ভ্যানে লাশের স্তূপ করে ব্যানার দিয়ে ঢেকে দেন তারা। ভিডিওতে পুলিশের ভেস্ট আর হেলমেট পড়া যাদের দেখা গেছে, তাদের একজন ঢাকা উত্তরের গোয়েন্দা পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তা আরাফাত হোসেন। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরে আত্মগোপনে চলে যান আরাফাত।
-ওএফ/এমএ