গোপালগঞ্জে বিএনপি ও স্বেচ্ছাসেবক দল এবং স্থানীয় জনতার মধ্যে সংঘর্ষে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের ক্রীড়া সম্পাদক শওকত হোসেন দিদার নিহত হয়েছেন।
আহত হয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী ও তাঁর স্ত্রী গোপালগঞ্জ জেলা মহিলা দলের সভাপতি রওশন আরা রত্নাসহ অন্তত ৩৫ জন। এ সময় বেশ কয়েকটি গাড়ি ও দোকান ভাংচুর করা হয়।
তবে বিএনপির দাবী স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা এ হামলা চালিয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।
তবে এ ঘটনায় আওয়ামী লীগের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
মারাত্মক আহতদের মধ্যে ১৬ জনকে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল, তিন জনকে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা হাসপাতালে ও তিন জনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। বাকি আহতদের বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় জেলা শহরের বেদগ্রাম মোড়ে জেলা বিএনপি আয়োজিত পথসভা শেষ করে স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এস এম জিলানীর বাড়ী টুঙ্গিপাড়া যাওয়ার পথে স্থানীয় ঘোনাপাড়া মোড়ে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার বিকেলে জেলা শহরের বেদগ্রাম মোড়ে পথসভা শেষ করে গাড়ি বহর নিয়ে টুঙ্গিপাড়া যাচ্ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীরা। এ সময় তাদের গাড়ি বহর সদর উপজেলার ঘোনাপাড়া মোড়ে পৌঁছালে আওয়ামী লীগের ব্যানার ফেস্টুন ছেড়াকে কেন্দ্র করে স্থানীয় জনগণের সাথে বিবাদে জড়ান বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
একপর্যায়ে উভয় গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী ও তার স্ত্রী গোপালগঞ্জ জেলা মহিলা দলের সভাপতি রওশন আরা রত্নাসহ ৩৫ জন আহত হন। এ সময় বেশ কয়েকটি গাড়ি ও দোকানপাট ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের ভিডিও ধারণ করতে গেলে সময় টিভির ক্যামেরা পার্সন এইচ এম মানিক আহত হন।
সংঘর্ষের তিন ঘন্টা পর ঘোনাপাড়া থেকে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের ক্রীড়া সম্পাদক শওকত হোসেন দিদারের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে মরদেহ গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। মরদেহ হাসপাতালে আনার পর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শরীফ রফিকুজ্জামানসহ বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীরা সেখানে যান।
জেলা বিএনপির সদস্য এ্যাভোকেট তৌফিকুল ইসলাম বলেন, বোদগ্রামের পথসভা শেষ করে গাড়ি বহর নিয়ে স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এস এম জিলানীর বাড়ি টুঙ্গিপাড়া যাচ্ছিলেন নেতাকর্মীরা। সে সময় গাড়ি বহরে অতর্কিত হামলা চালানো হয়। এতে অন্তত ৩৫ জন আহত হয়েছে। আহতদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি শহিদুল ইসলাম লেলিন বলেন, টুঙ্গিপাড়া যাওয়ার পথে ঘোনাপাড়া মোড়ে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা এই হামলা চালিয়েছে। এতে আমাদের স্বেচ্ছাসেক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এস এম জিলানী, তার স্ত্রী রওশন আরা রত্নাসহ অনেকে আহত হয়েছেন।
জেলা মহিলা দলের সভাপতি রওশন আরা রত্না বলেছেন, স্বৈরাচারের দোসররা পরিকল্পিত ভাবে আমাদের উপর হামলা চালিয়েছে। আমার ছোট বাচ্চাদের উপর হামলা করা হচ্ছে। এতে আমাদের অনেক নেতৃবৃন্দ আহত হয়েছেন।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শরীফ রফিকুজ্জামান বলেন, বিএনপি সমাবেশ করবে এ জন্য জেলা প্রশাসক ও পুলিশকে জানানো হয়েছে। আমরা আইন-শৃংখলা বাহিনীকে জানিয়েই এই সভা করেছি। কিন্তু তারপরও হামলা ঘটনা ঘটলো। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাই।
সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আনিচুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের ক্রীড়া সম্পাদক শওকত হোসেন দিদার নিহত হয়েছেন। পরিস্থিতি বর্তমানে শান্ত রয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানীকে উন্নত চিকিতসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
-এমএইচ/এমএ