For English Version
রবিবার ৬ অক্টোবর ২০২৪
হোম

৪ পদে নিয়োগ দিয়েই হাতিয়েছেন ৬০ লাখ টাকা

Published : Monday, 2 September, 2024 at 9:52 PM Count : 70

রাজশাহীর তানোর উপজেলার নারায়ণপুর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আয়ুব আলীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগ উঠেছে। চার পদে নিয়োগ দিয়ে হাতিয়ে নিয়েছেন ৬০ লাখ টাকা।

এছাড়া, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির জমি বন্ধক দিয়ে প্রাপ্ত টাকা নিজের কাছে রেখেছেন। শিক্ষার্থীদের বিকাশ অ্যাকাউন্ট খোলা এবং প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের প্রশংসাপত্র দেওয়ার ক্ষেত্রেও আত্মসাৎ করেছেন কয়েক লাখ টাকা। আদায় করেছেন অতিরিক্ত পরীক্ষার ফি।

বিধি-বিধানের পরোয়া না করে প্রতিষ্ঠানের গাছ বিক্রি করে দিয়েছেন প্রধান শিক্ষক আয়ুব আলী। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির বিদ্যুৎ বিলের টাকাও অবৈধ পন্থায় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা হয়েছে। নিলামে না দিয়েই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গাছ বিক্রি করে দিয়েছেন। সে টাকাও আত্মসাৎ করেছেন। এসব ঘটনায় অভিভাবক এবং শিক্ষার্থীরা তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের অনুলিপি রাজশাহীর জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরেও পাঠানো হয়েছে।

ইউএনও’র কাছে লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, সাত মাস আগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে আয়া, পরিচ্ছন্নতা কর্মী, গেটম্যান এবং অফিস সহকারী পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। নিয়োগের সময় এই চারটি পদে প্রধান শিক্ষক আয়ুব আলী প্রত্যেকের কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা করে নেন। এভাবে তিনি ৬০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
প্রধান শিক্ষক আয়ুব আলী পরীক্ষার সময় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি আদায় করেন। শিক্ষার্থীদের বই বিতরণ শেষে অতিরিক্ত বই সংশ্লিষ্ট উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা না দিয়ে কেজি দরে বিক্রি করে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির অ্যাকাউন্ট থেকে তিনি নিজের ইচ্ছামতো অর্থ উত্তোলন করে খরচ করেন।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির ৫০ শতাংশ জমি অফিস সহকারী শহিদুল ইসলামের কাছে এক বছরের জন্য বন্ধক দিয়েছেন। বিনিময়ে নিয়েছেন দুই লাখ টাকা। কিন্তু এ টাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির অ্যাকাউন্টে জমা করেননি।

অভিযোগের বিষয়ে অফিস সহকারী শহিদুল ইসলাম বলেন, জমি বন্ধকের টাকা প্রধান শিক্ষক প্রতিষ্ঠানের ফান্ডে জমা না করে আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়া, বিভিন্ন ক্ষেত্রে তিনি সীমাহীন দুর্নীতির মাধ্যমে প্রচুর অর্থ ও সম্পদের মালিক হয়েছেন। রাজশাহী শহরে তিনটি বাড়ি বানিয়েছেন। তার অনিয়ম আর দুর্নীতির কারণে আমরা বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছি। অতি দ্রুত এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।

উপ-বৃত্তির ক্ষেত্রে বিকাশ অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য তিনি প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ১৫০ টাকা করে আদায় করেছেন। প্রাক্তন কোনো শিক্ষার্থীকে প্রশংসাপত্র নেওয়ার জন্য দিতে হয় ৫০০ টাকা। এমনকি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা হয় বিদ্যুৎ বিলও।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক শিক্ষক আয়ুব আলী বলেন, আমাকে প্রধান শিক্ষক পদ থেকে সরিয়ে দিতে একটি মহল মরিয়া হয়ে উঠেছে। বাধাইড় ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান হেনার নেতৃত্বে গত ৬ আগস্ট কিছু লোক আমাকে লাঞ্ছিত করেছেন।

তবে প্রতিষ্ঠানের জমি বন্ধক, অতিরিক্ত ফি আদায় এবং গাছ বিক্রির টাকা আত্মসাৎসহ আনীত অন্যান্য অভিযোগ সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি অভিযুক্ত ওই প্রধান শিক্ষক।

বাধাইড় ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান হেনা প্রধান শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি আমার মায়ের জমিতে প্রতিষ্ঠিত। আমরা প্রতিষ্ঠানটির উন্নতির জন্য সবাই চেষ্টা করেছি। কিন্তু প্রধান শিক্ষকের দুর্নীতির জন্য এটি এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। আমরা তার সব দুর্নীতির বিচার চাই। তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নারায়ণপুর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে তদন্ত করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

আরএইচএফ/এসআর


« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,