লঞ্চঘাটে মাসোহারা না পেয়ে রিকশা চালককে পিটিয়ে আহত
Published : Monday, 19 August, 2024 at 4:31 PM Count : 390
লঞ্চঘাটে রিকশা চালালে দিতে হয় মাসোহারা। দীর্ঘদিনের এই মাসোহারা দিতে অস্বীকার করায় নির্মম নির্যাতনের শিকার হতে রিকশা চালকদের। দেশের ব্যস্ততম নৌরুট রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাটে এমন নির্মম পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন রিকশা চালকরা।
চাঁদায় আদায়কারী দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাট সংলগ্ন মজিদ শেখের পাড়ার আইয়ূব আলী মন্ডলের ছেলে এবং গোয়ালন্দ পৌরসভার মেয়র নজরুল মন্ডলের ভাতিজা শাওন মন্ডল।
রবিবার (১৮ই আগস্ট) দুপুর দেড়টার দিকে দৌলতদিয়া লঞ্চ টার্মিনালের রিক্সা চালক মোঃ মিরাজ শেখ কে মাসোহারা না দেওয়ায় মেরে আহত করে। এই ঘটনায় গোয়ালন্দ ঘাট থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে জানান গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রাণবন্ধু চন্দ্র বিশ্বাস।
অভিযোগকারী রিক্সা চালক মিরাজ শেখ বলেন, গত তিন বছর ধরে শাওন মন্ডলে কে প্রতিমাসে ১৫০০ টাকা চাঁদা দিতে হয়। স্থানীয় আওয়ামী লীগের ছেলে ও পৌর সভার মেয়রের ভাতিজা ভয়ে আমরা কেউ কথা বলার সাহস পাইনি। কিন্ত দেশে এখন সরকার পতনের পর আমরা সবাই চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় শাওন মন্ডল আমাকে ফোন দিয়ে লঞ্চ টার্মিনালে নিয়ে লাঠি দিয়ে বেধরক পিটিয়ে আহত করে।
আরেক চালক শফিক শেখ বলেন, তাদের মাসোহারার আতংকে লঞ্চ ঘাটে রিকশা চালানো বন্ধ করে দেই। আমি উপরে রিকশা চালানো শুরু করি এই সংবাদে সে ক্ষিপ্ত হয়ে একদিন আমাকে পিটিয়ে জখম করে। আমার কাছ থেকে টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
এই বলে সে জামা খুলে শরীরের আঘাত দেখায়। এতোদিন তাদের ভয়ে কথা বলতে না পারলেও এখন তারা নির্ভয়ে জানাতে পারছে।
এছাড়া লিটন নামে আরেক চালক বলেন, আমি নিয়মিত তাদের মাসোহারা দিয়েই রিকশা চালাতাম হঠাৎ কয়েক মাস এখানে রিকশা চালাই নি। তারপর আবার এসে রিকশা চালানো শুরু করলে শাওন মন্ডল আমার রিকশা আটকে দেয় এবং আমার কাছে থাকা তিনশো টাকা নিয়ে যায়। পরবর্তীতে তাকে ছয় হাজার টাকা দিয়ে রিকশা ছাড়াতে হয়। এসময় তার বাবা ও চাচাকে জানালেও তারা এ ব্যাপারে কোন সহযোগিতা করতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন। শাওন মন্ডলের আর এক চাচা মোস্তফা মন্ডলের টার্মিনালের অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার অভিযোগে কয়েকদিন আগে সোচ্চার হয়ে উঠে চালকরা। তখন কোটা বিরোধী ছাত্ররা চার্জ নির্ধারন করে দেয়।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শাওন মন্ডলের সাথে কথা বললে তিনি জানান, টাকা নেওয়ার অভিযোগ সত্যি নয়। রিকশা ওয়ালারা যাত্রীদের হয়রানি করে তাই তাদের রাগ হয়ে মেরেছি।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রাণবন্ধু চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, এ ব্যাপারে আমরা একটা অভিযোগ পেয়েছি। খুব শীঘ্রই তদন্ত করে আসামি কে আটক করে আইনের আওতায় আনা হবে।
এসআই/এসআর