বাউফলে জনপ্রতিনিধিরা আত্মগোপনে, স্থবির নাগরিক সেবা
Published : Sunday, 18 August, 2024 at 2:58 PM Count : 101
পটুয়াখালীর বাউফলে জনপ্রতিনিধিরা আত্মগোপনে চলে যাওয়ায় স্থবির হয়ে পড়েছে নাগরিক সেবা। দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। গত ০৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর জনপ্রতিনিধিরা নিরাপত্তাজনিত কারণে আত্মগোপনে চলে যান।
বাউফলে ১৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা রয়েছে। এসব ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও অধিকাংশ সদস্যসহ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান এলাকার বাইরে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়রসহ ইউনিয়ন পরিষদের সকল চেয়ারম্যান ও অধিকাংশ সদস্যরা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন। তাদের দলীয় পদ-পদবী রয়েছে। প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের নির্যাতনের ভয়ে তারা আত্মগোপনে চলে যান। শুধু জনপ্রতিনিধিরাই নয়, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের আওয়ামী লীগের প্রায় নেতাকর্মীই এলাকা ছেড়ে অনত্র চলে গেছেন।
কালিশুরী ইউনিয়নের আবদুর সাত্তার নামের এক ব্যক্তি বলেন, আমার সন্তানের জম্ম নিবন্ধন সংশোধনের জন্য চেয়ারম্যান সাহেবকে প্রয়োজন কিন্তু গত ০৫ তারিখের পর থেকে তার কোনো হদিস নেই।
কনকদিয়া ইউনিয়নের ঝিলনা গ্রামের ইউনুছ মাঝি বলেন, আমার একটি পরিচয়পত্র প্রয়োজন। পরিষদের যাওয়ার পর আমাকে বলা হয়েছে চেয়ারম্যান নেই দেওয়া যাবে না।
বাউফল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোসারেফ হোসেন খান বলেন, গত ০৫ অগাস্টের পর দেশে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। তাই নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন ছিলেন। এরপর আস্তে আস্তে যখন আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসছিল তখন কাজে ফেরার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। রোববার তিনিসহ অন্য দুই ভাইস চেয়ারম্যান উপজেলা পরিষদে অফিস করবেন।
এ জন্য উপজেলা প্রশাসন, রাজনৈতিক দল ও জনসাধারণের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।
ধুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ন কবির বলেন, ০৫ অগাস্টের পর থেকে এলাকায় যেতে পারছি না। প্রতিপক্ষের নেতাকর্মীরা হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন।
কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার বলেন, ০৫ তারিখ আমাকে না পেয়ে আমার বাসা থেকে ৩২ মেট্রিক টন রড লুট করে নিয়েছে বিএনপির কর্মীরা। কয়েকটি বীর নিবাস তৈরির জন্য রডগুলো মজুদ করেছিলাম।
অবশ্য আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের উপর হামলা বা তাদেরকে হুমকি ধামকির অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আপেল মাহমুদ ফিরোজ বলেন, এগুলো বিএনপি নেতাকর্মীরা করে না। অন্য কেউ বিএনপির নাম ভাঙিয়ে করে। আমরা নৈরাজ্যকারীদের বিচার দাবি করছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. বশির গাজী বলেন, নির্দেশনা অনুযায়ী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও সকল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের স্ব-স্ব পরিষদে হাজির হয়ে দৈনন্দিন কাজকর্ম পরিচালনার জন্য বলা হয়েছে। কোনো জনপ্রতিনিধি পরিষদে অনুপস্থিত থাকলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
-এএস/এমএ