পেঁপে চাষে হায়দার আলীর চমক
Published : Wednesday, 14 August, 2024 at 8:55 PM Count : 153
ছোট বেলা থেকে কৃষি কাজের প্রতি ঝোঁক বগুড়ার শেরপুর উপজেলার হায়দার আলীর। পেঁপে চাষে ঝুঁকে পড়েন তিনি। পেঁপে চাষ করে হায়দার সকালকে তাক লাগিয়েছেন। দীর্ঘ ১৮ বছর গবেষনা পর সফলতা হতে ধরা দেয়। এই কাজে তিনি পুরস্কৃত হয়েছেন।
নিজের স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে দীর্ঘ ১৮ বছর গবেষনা করেন পেঁপের চারা নিয়ে। সফল হয়ে ১ বিঘা জমি লিজ নিয়ে পেঁপের চাষ করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। নিজ নামের জাত “হায়দার পেঁপে” ব্যাপক ফলন হয়েছে। এক একটি পেঁপের ওজন ৩ থেকে ৬ কেজি। সেই পেঁপে চাষ করে নিজের ভাগ্য বদলেছেন। নিজে আত্মনির্ভশীল হয়ে ছেলেকে লেখাপড়া করে কৃষি কাজে সহযোগী করেছেন। তাকে উৎসাহ দিয়েছেন তার স্ত্রী। স্ত্রী ও দুই ছেলে নিয়ে চার সদস্যের পরিবার তার। ছোটবেলা থেকেই অদম্য ইচ্ছা শক্তিকে কাজে লাগিয়ে আজ হয়েছেন সফল পেঁপে চাষি। নিজের আত্মতৃপ্তি আর ভালোলাগা থেকেই ১৯৯৮ সাল থেকে কৃষি চাষাবাদ শুরু করেন। এরপর টমেটো, বেগুন, মালটা, কমলা, আঙ্গুরসহ বিভিন্ন কৃষি চাষাবাদে সফল হয়েছেন। তবে হায়দার প্রধান লক্ষ ছিল পেঁপে চাষে।
তিল তিল করে দীর্ঘ ১৮ বছর গবেষনা করে তৈরী করা “হায়দার পেঁপে” জাতের চারা ১ বিঘা জমি লিজ নিয়ে পেঁপে বাগান করে এলাকায় তাক লাগিয়েছেন।
শেরপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, উপজেলায় কম-বেশি পেঁপের চাষাবাদ হয়। এ উপজেলায় ১ হাজার ৮০০জন পেঁপে চাষাবাদ করে এবং বানিজ্যিকভাবে চাষ করেন ৬০ জন। চলতি মৌসুমে উপজেলার ৩৫ হেক্টর জমিতে পেঁপের চাষাবাদ হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে বেশি। এসব পেঁপে চাষিদের নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলে জানায় কৃষি অধিদপ্তর।
১ বিঘা জমি লিজ নিয়ে সেখানে গড়ে তুলেছেন এই বাগান। সেখানে নিজ নামের “হায়দার আলী” জাতের চারা রোপণ করেন বাগানে। জমি চাষ, চারা তৈরী, রোপণ, শ্রমিক, সারসহ এ পর্যন্ত প্রায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। দুই মাসেই বিক্রয় করেছেন ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা।
এর আগে মালটা চাষেও সফল হয়েছেন। তবে কমলা ও আঙ্গুর চাষ করেছিলেন কিন্তু তেমন সফল আসেনি। পেঁপে চাষে এলাকায় তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। পেঁপে দেখতে এলাকার অনেক মানুষ আসছেন তার বাগানে।
জমি লিজ নিয়ে পেঁপে চাষ করে বছরে ৬-৭ লক্ষ টাকা আয় করেন হায়দার আলী। তিনি বলেন, এক একটি পেঁপে গাছ থেকে মৌসুমে সর্বোচ্চ চার মণ পর্যন্ত পেঁপে সংগ্রহ করা যায়। এর মধ্যে প্রথম দিকের পেঁপেগুলো ৩ থেকে ৬ কেজি ওজনের হয়। কখনো কখনো ৮-৯ কেজি পর্যন্ত হতে পারে একটি পেঁপের ওজন। আর দ্বিতীয় ধাপে যে পেঁপে পাওয়া যায় সেগুলো ২ থেকে ৪ কেজি ওজনের হয়ে থাকে।
তিনি আরো বলেন, এক বছরে ফল সংগ্রহের পর দ্বিতীয় বছরের নতুন করে গাছ রোপণ করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। এছাড়াও চারা রোপনের পর ছয় মাসের মধ্যে ফল বাজারে নেয়ার উপযোগী হয়।
উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি অফিসার আব্দুল হান্নান জানান, কৃষি অফিস থেকে কোন প্রজেক্ট না থাকলেও হায়দার আলী নিজ উদ্দ্যোগে ১ বিষা জমিতে পেঁপে চাষ করে এলাকায় তাক লাগিয়েছেন। এতে পেঁপে চাষে আগ্রহ বাড়াছে এই উপজেলার অনেকের। পেঁপে চাষে কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।
এ/এসআর