নদী গর্ভে বিলিন বসতবাড়ি ও ফসলি জমি
Published : Sunday, 28 July, 2024 at 9:05 PM Count : 63
বর্ষার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন করে মাদারীপুরের কালকিনিতে আড়িয়াল খাঁ নদীর ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। আড়িয়াল খাঁ নদীর তীব্র স্রোতের তোপের মুখে পড়ে ভাঙ্গনে গত কয়েকদিনে প্রায় ১০টি বসতবাড়ি ও ১ কিলোমিটার ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। এতে নি:স্ব হয়ে পড়েছে প্রায় নদী পাড়ের অর্ধশতাধিক কৃষক পরিবার। আতংকিত হয়ে অনেকেই ভিটেমাটি হারিয়ে অন্য এলাকায় বাধ্য হয়ে আশ্রয় নিয়েছে। এ ছাড়া অনেকে রয়েছে ভিটেমাটি হারানোর আতঙ্কে। যে কোন মুহুর্তে নদী গর্ভে বিলিন হতে পারে তাদের বসতবাড়িও।
সরেজমিনে পরিদর্শন করে এবং ভুক্তভোগীদের সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার নদী তীরবর্তী এলাকা সিডিখান এলাকার ৮ নং ওয়ার্ডে প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও নতুন করে আড়িয়াল খাঁ নদী ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। ওই এলাকার ফয়জর আলী, হুমায়ন, নুরু বেপারী, দিদার হোসেনের বসতবাড়ী সহ ১০টি বসতবাড়ি ইতিমধ্যেই নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। এ ছাড়া ভাঙ্গন আতঙ্কে রয়েছে মহব্বত হোসেন, রায়হান ও নজু হোসেনসহ আরো ১৫ টি পরিবার। ভাঙ্গন আতঙ্কিত পরিবারগুলো তাদের গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি নিয়ে পার্শ্ববর্তী কয়ারিয়া এলাকায় আশ্রায় নিয়েছে। নদী ভাঙ্গনে বসতভিটা হারানো অনেকেই পরিবার নিয়ে অর্ধহারে জীবন-যাপন করছেন। এ এলাকার ১ কিলেমিটার জুড়ে নদী ভাঙ্গনে গাছপালা, ধান, পাটসহ বিভিন্ন ফসল নদী গর্ভে বিলিন হয়েছে। অপরদিকে উপজেলার সাহেবরামপুর এলাকার প্রায় ১৫টি পরিবার রয়েছে আড়িয়াল খা নদী ভাঙ্গন আতঙ্কে। ইতিমধ্যে ওই এলাকার অনেক কৃষকের রোপনকৃত বোরো ধানের জমি নদী ভাঙ্গনে বিলিন হয়েছে। এ এলাকার কৃষকরা রাত পোহালে ঘুম ভেঙ্গে চোখের সামনে দেখছেন তাদের ফসল নদীতে নিয়ে যাচ্ছে।
সিডিখান এলাকার ভাঙ্গন কবলিত তাহের বেপারীর সহ বেশ কয়েকজন জানান, রাক্ষসি আড়িয়াল খাঁ নদী আমাদের সব কিছুই কেড়ে নিয়ে গেছে। আমাদের ঘরবাড়ি, ফসলি জমি এক রাতের মধ্যে নিয়ে গেছে। নিমিষেই আমাদের সব স্বপ্ন বিলিন হয়ে যাচ্ছে।
সাহেবরামপুর এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আবদুল মান্নান ও মো: রানাসহ বেশ কয়েকজন ক্ষোভের সঙ্গে জানান, এই বর্ষাকাল আসলেই আমাদের চিন্তা বেড়ে যায়। বছরের পর বছর আমাদের জমি আড়িয়াল খা নদীতে বিলিন হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু দেখার মত আমাদের কেউ নেই। আমাদের মত শতশত পরিবার পথের ফকির হয়ে নদী ভাঙ্গনের কারনে এলাকা ছেড়েছে। কিন্তু তাতে কারো কিছু আসে যায় না। ক্রমশ: আমরা নি:স্ব হচ্ছি।
সিডিখান ইউপি পরিষদের চেয়ারম্যান চানমিয়া শিকদার জানান, নদী ভাঙ্গনের বিষয় আমরা প্রশাসনের কাছে জানিয়েছি। দ্রুত ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে পারলে তাদের অনেক উপকার হত।
সাহেবরামপুর ইউপি চেয়ারম্যান মুরাদ সরদার জানান, আড়িয়াল খাঁ নদীতে বছরের পর বছর ভাঙ্গতেছে। আমরা অনেকবার ভাঙ্গন কবলিতদের পাশে দাঁড়িয়েছি। সামনেও তাদের সহযোগিতা করা হবে।
এ ব্যাপার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার দাশ জানান, সরকারিভাবে তাদেরকে সহযোগিতা করা হবে। ভাঙ্গনরোধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এএইচএস/এসআর