স্বাভাবিক হচ্ছে জনজীবন, চলছে যানবাহন
Published : Thursday, 25 July, 2024 at 4:07 PM Count : 94
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে শুরু হওয়া সহিংসতার মধ্যে দেশজুড়ে
কারফিউ জারি করে সরকার। একই সঙ্গে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তায় জন্য সেনা মোতায়েন করা হয়। তবে বুধবার (২৪ জুলাই) বেলা ১১টা থেকে কারফিউ সিথিল করার পর স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে রাজশাহীর পরিস্থিতি।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার পর রাজশাহী মহানগরীর সাহেববাজার, সিএন্ডবি, বর্ণালী, নিউমার্কেট, রেলগেট, শালবাগান, শিরোইল, ভদ্রা, তালাইমারি রাণীজাবারসহ বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকেই সড়কে রিকশা-অটোরিকশা, পিকআপ, পণ্যবাহী ট্রাক ও আন্ত:জেলা বাসগুলো চলাচল করছে। এছাড়া, টার্মিনাল থেকে দুরপাল্লার বাসও ছেড়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে।
মহানগরীর শিরোইল বাস টার্মিনাল গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকেই ঢাকাসহ বিভিন্ন রুটের দূরপাল্লার বাস চলাচল শুরু হয়েছে। তবে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় সড়কে যাত্রীর চাপ অনেকটাই কম বলে জানালেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে, অচলাবস্থার পর বুধবার সীমিত আকারে ইন্টারনেট সংযোগ ফেরায় লেনদেন হয় ব্যাংক, বিমাসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে। আসতে শুরু করে রেমিট্যান্স। তবে ব্যাংকে টাকা তোলার পরিমাণ বেশি হলেও জমা দেওয়ার চাপ প্রত্যাশার চেয়ে কম। সেই সঙ্গে সচল হয়েছে এটিএম বুথগুলোও। বিদেশ থেকে প্রবাসীদের পাঠানো টাকা তুলতে পারছেন স্বজনেরা।
সোনালী ব্যাংক রাজশাহী শাখার ডিজিএম (ইনচার্জ) কাজী মেহেদী হাসান জানান, মানুষ খুব ভিড় করছেন। লেনদেন বেড়েছে। সবকিছু স্বাভাবিক মনে হচ্ছে।
সাবেহবাজার এলাকার আলেয়া আক্তার শ্রাবণী নামের এক গৃহবধূ বলেন, তার স্বামী কাতার প্রবাসী। সংসার খরচের জন্য টাকা পাঠালেও এতোদিন ব্যাংক বন্ধ থাকায় তিনি তা তুলতে পারেননি। আজ (বৃহস্পতিবার) ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে পেরেছেন। তার মনে স্বস্তি ফিরেছে।
এদিকে, সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত খোলায় খেটে খাওয়া মানুষের মুখেও ফুটেছে হাসি। অফিসগামীরাও স্বস্তির কথা জানিয়েছেন। দ্রুতই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে এমন প্রত্যাশা করছেন সবাই।
মহিদুল ইসলাম নামের এক রিকশাচালক বলেন, আমরা খেটে খাওয়া মানুষ। রিকশার চাকা ঘুরলে আমাদের ঘরে চাল-ডালের ব্যবস্থা হয়। গত কয়দিনের অচলাবস্থার পর বৃহস্পতিবার থেকে কিছুটা রুটি-রুজির ব্যবস্থা হচ্ছে।
থমথমে পরিস্থিতি কেটে যাওয়ায় স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে মহানগরীর সবজির পাইকারি বাজার। বাজারে বাড়তে শুরু করেছে সবজির সরবরাহ ফলে দামও কমতে শুরু করেছে।
এদিকে, কারফিউ সিথিল হলেও রাজশাহী মহানগরীতে সেনা সদস্যদের টহল দেখা গেছে। বিজিবি সদস্যরাও মহড়া দিচ্ছেন। বিভিন্ন মোড়ে পুলিশের উপস্থিতি দেখা গেলেও চেকপোস্ট দেখা যায়নি। সারাদিনই রাজশাহী-ঢাকা রুটসহ স্থানীয় সড়কগুলোতে বাস চলেছে। স্টেশন থেকে ছেড়েছে ট্রেন।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, প্রতিদিন বিকেল ৫টা থেকে পরদিন সকাল ১০টা পর্যন্ত কারফিউ থাকছে। তবে সকাল ১০টা থেকে ৫টা পর্যন্ত শিথিল থাকছে। সেনা সদস্যরা প্রতিদিন তিনবার টহল দিচ্ছে। পুলিশ, বিজিবি, র্যাব সদস্যরাও আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে মাঠে আছে। মানুষ যেন জীবিকার তাগিদে কাজ করতে পারেন এবং নিরাপত্তাও যেন থাকে সেজন্য কারফিউ থাকছে।
আরএইচএফ/এসআর