সাভারের আশুলিয়ায় ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে পৃথক স্থান থেকে স্কুলছাত্র, শিশু ও নারীসহ ৩ জনের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সোমবার সকালে আশুলিয়ার শিমুলিয়া ইউনিয়নের কোনাপাড়া মাইঠারটেক বিল থেকে নিখোঁজ স্কুলছাত্র, রবিবার দুপুরে ধামসোনা ইউনিয়নের ভাদাইল পূর্বপাড়ার মোতালেব মিয়ার বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে শিশু ফারজানা ও সকালে আশুলিয়ার কাঠগড়া পশ্চিমপাড়া এলাকার আলমগীর হোসেনের বাড়ি থেকে এক নারীর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
থানা পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, সোমবার সকাল ৮ টার দিকে আশুলিয়ার শিমুলিয়া ইউনিয়নের কোনাপাড়া মাইঠারটেক বিল থেকে স্কুলছাত্র তজিম উদ্দিনের (১৩) লাশ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। এর আগে রবিবার বিকেলে ওই বিলে গোসল করতে নেমে নিখোঁজ হয় সে।
নিহত তজিম উদ্দিন আশুলিয়ার কোনাপাড়া রূপনগর (কুষ্টিয়া টেক) এলাকার মনির হোসেনের ছেলে এবং একই এলাকার আয়েশা প্রি-ক্যাডেট অ্যান্ড হাই স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র।
নিহত স্কুলছাত্রের নানা জালাল উদ্দিন জানান, রবিবার বিকেলে মাইঠার টেক এলাকার বিলে বন্ধুদের সাথে গোসল করতে যায় তজিম। রাতে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি করার একপর্যায়ে জানা যায় সে পানিতে ডুবে গেছে। পরে সেখানে খোঁজাখোঁজি করেও না পেয়ে ফায়ার সার্ভিসকে জানালে সোমবার সকালে টঙ্গী ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিল থেকে তজিমের লাশ উদ্ধার করে।
ডিইপিজেড ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার প্রণব চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আমাদের এখানে ডুবুরি দল না থাকায় টঙ্গী ফায়ার সার্ভিসে খবর দেয়া হয়। পরে সেখান থেকে ডুবুরি দলের সদস্যরা এসে সোমবার সকালে লাশটি উদ্ধার করে নিহতের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন।
অন্যদিকে রবিবার দুপুরে আশুলিয়ার ভাদাইল পূর্বপাড়ার মোতালেব মিয়ার সেপটিক ট্যাংক থেকে ফারজানা (৮) নামের এক শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে এটি হত্যাকান্ড নাকি দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু হয়েছে সে বিষয়ে প্রাথমিকভাবে জানা যায়নি।
নিহত ফারজানা (৮) রংপুর জেলার পীরগছা উপজেলার ছেছাকান্দী গ্রামের মানিক মিয়ার মেয়ে। সে পরিবারের সদস্যদের সাথে ৩ দিন আগে আশুলিয়ার ভাদাইল পূর্বপাড়া এলাকার নানা ইদ্রিস মিয়ার বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলো।
আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হামিদুর রহমান বলেন, রবিবার সকাল ৯ টার পর থেকে শিশু ফারজানাকে খোঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে দুপুরে পার্শ্ববর্তী মোতালেব মিয়ার সেপটিক ট্যাংকে শিশুটিকে দেখতে পায় স্থানীয়রা। পরে তাকে উদ্ধার করে আশুলিয়া নারী ও শিশু হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এঘটনায় নিহতের মরদেহটি উদ্ধার করা হয়েছে। তবে মৃত্যুর কারণ জানতে তদন্ত চলছে। হত্যা নাকি দুর্ঘটনা তা তদন্ত শেষে জানা যাবে।
এর আগে সকালে আশুলিয়ার কাঠগড়া পশ্চিমপাড়া এলাকার আলমগীর হোসেনের ভাড়া বাড়ির গোসলখানা থেকে এক নারীল অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে ঘটনার পর থেকে নিহতের স্বামী আমিনুল ইসলাম পলাতক রয়েছে।
আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোঃ আশরাফুল আলম বলেন, পলাতক আমিনুল ইসলাম ওই নারীকে নিয়ে স্ত্রী পরিচয়ে আলমগীর হোসেনের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে হা-মীম গ্রুপের একটি কারখানার শ্রমিকের আইডি কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে। সেটি আকলিমা বেগম নামে এক সুইং অপারেটরের। তবে কার্ডটি নিহতেরই কিনা, নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে তথ্য যাচাই করা হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, নিহতের গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে তাকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। মরদেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট হাতে পেলে বিস্তারিত বলা যাবে।
ওএফ/এসআর