কাঁচা রাস্তায় ধানের চারা লাগিয়ে প্রতিবাদ
Published : Thursday, 11 July, 2024 at 6:40 PM Count : 114
তিন থেকে সাড়ে তিন কিলোমিটার গ্রামীণ কাঁচা রাস্তা। শুকনো মৌসুমে ধুলোবালু আর বর্ষায় কর্দমাক্ত। স্বাধীনতার ৫২/৫৩ বছরও ব্যস্ততম গ্রামীণ কাঁচা সড়কটি বেহাল দশা। বর্ষা মৌসুমে প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার সড়ক জুড়ে হাঁটু কাঁদা মারিয়ে চরম অসহনীয় দুর্ভোগ সহ্য করে যুগের পর যুগ চলাচল করছেন স্থানীয়রা। কাঁচা সড়কটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ায় চরম ক্ষোভে ধানের চারা লাগিয়ে অভিনব প্রতিবাদ জানিয়েছেন ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের গজেরকুটি ও খলিশা কোঠাল এলাকাবাসী।
বৃহস্পতিবার সকালে ওই এলাকার দুলাল প্রামানিক, ছাইদুল ইসলাম ও জয়নাল হকসহ এলাকাবাসী এ অভিনব প্রতিবাদ জানান।
স্থানীয়রা জানান, এই সড়ক দিয়ে প্রায় ৫টি গ্রামের হাজার লোকের চলাচল।
বর্ষার সময় সড়কটি কর্দমাক্ত হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। যুগের পর যুগ ধরে বিষয়টি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের জানালেও তারা কোনো উদ্যোগ নেননি। তাই রাস্তায় ধানের চারা লাগিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা।
ওই এলাকার বাদশা মিয়া ও নুর মোহাম্মদ জানান, সড়কটি পাঁকা করণের জন্য মেম্বার ও চেয়ারম্যানসহ সংসদ সদস্য বারবার জানানো হয়েছে। কিন্তু তারা বিষয়টি গুরুত্ব দিচ্ছেন না। ফলে সামান্য বৃষ্টি হলে সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে যায়। বর্তমানে সড়কটি গর্ত হয়ে পানি জমে একাকার হয়ে যাচ্ছে সেদিকে তাদের কোন নজর নেই। এভাবে স্বাধীনতার ৫২ থেকে ৫৩ বছর কেটে গেল অথচ এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কটির পাঁকা করণের কাজ হয়নি। সেজন্য আমরা এলাকাবাসী রাস্তায় ধানের চারা রোপণ করে প্রতিবাদ জানিয়েছি।
একই এলাকার বাসিন্দা ফিরোজা বেগম ও সুফিয়া বেগম নামের গৃহিণী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দুই বছরের বাচ্চা অসুস্থ। ডাক্তারকে ফোন দিয়েছি কিন্তু সড়কের বেহাল দশা দেখে আসেনি। অটোও চলে না। তাই বাধ্য হয়ে তিন কিলোমিটার হাঁটু কাঁদা মারিয়ে বালারহাট গিয়ে ডাক্তার দেখিয়ে আসলাম। সড়কের অবস্থা করুণ পরিনিতি হওয়ায় ছেলে-মেয়েরা স্কুল যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। আমরা খুবই দুর্ভোগে আছি বাহে। কে দেখে আমার এই কষ্ট বলে ক্ষোভ জানান এই দুই নারী।
শিক্ষার্থী ফাতেমা আক্তার ও আকাশ রহমানের সাথে কথা হলে তারা বলেন, প্রতিদিন স্কুলে যাওয়া-আসা করতে খুবই কষ্ট হয়। জুতা খুলে হাতে নিয়ে এ রাস্তায় চলাচল করতে হয়। এতে কাদা লেগে জামা কাপড় নষ্ট হয়ে যায়। রাস্তাটি পাকা হলে আমাদের জন্য অনেক সুবিধা হতো।
এ বিষয়ে নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাছেন আলী বলেন, ওই এলাকার কিছু লোকজন আমার কাছে এসেছে। তারা আপাতত চলাচলের জন্য ভিটি বালুর ফেলার জন্য আর্থিক সহায়তা চেয়েছেন। তাদের ভিটি বালু ফেলার জন্য আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, শুনেছি ওই সড়কটির পাঁকা করণের বরাদ্দ পাশ হওয়ার কাজ প্রক্রিয়াধীন। আশাকরি হয়ে যাবে বলে আমার বিশ্বাস।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রেহেনুমা তারান্নুম জানান, ওই সড়কটি পাঁকা করণের বিষয়ে লট ভুক্ত হয়েছে কি না, তা আগে দেখতে হবে। যদি না হয়ে থাকে তাহলে লট ভুক্ত করে দ্রুত পাঁকা করণের সকল ব্যবস্থা করা হবে।
এসিআর/এসআর