For English Version
রবিবার ৬ অক্টোবর ২০২৪
হোম

মডেল মসজিদের কাজ শেষ হয়নি ৫ বছরেও, বিল নিয়ে লাপাত্তা ঠিকাদার

Published : Sunday, 7 July, 2024 at 5:09 PM Count : 148

মডেল মসজিদ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ কাজ প্রধান মন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্পের একটি। অথচ মাদারীপুরে সদর উপজেলা মডেল মসজিদ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কাজ শেষ হয়নি ৫ বছরেও। শুধু পাইলিং করেই কোটি টাকার বিল নিয়ে লাপাত্তা হয়েছে ঠিকাদার।

সংশ্লিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের জেলা ও উপজেলায় ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পের আওতায় মাদারীপুর সদর উপজেলায় তিনতলাবিশিষ্ট মসজিদ ভবন এবং ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পটির কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের মে মাসে। প্রত্যাশী সংস্থা ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও মাদারীপুর গণপূর্ত বিভাগ প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করে। ইউনুস এন্ড ব্রাদার্স নামে বরিশালের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রকল্পের ঠিকাদারী কাজ পায়। চুক্তিমূল্য অনুযায়ী ১৪ কোটি ৭১ লাখ টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২০ সালের মাঝামঝি সময়। তবে গত ৫ বছরে শুধু পাইলিং এর কাজ করা হয়েছে। এরপর থেকেই বন্ধ রয়েছে কাজ। চলতি বছর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ করবে না বলে চিঠি দিয়েছে গণপূর্ত বিভাগকে। 

এদিকে পাইলিং বিল বাবদ তুলে নিয়েছে প্রায় এক কোটি টাকা। তবে গণপূর্ত বিভাগের দাবী স্থান নির্ধারণ সংক্রান্ত জটিলতার কারনে বন্ধ ছিলো কাজ। স্থান নির্ধারণ সংক্রান্ত জটিলতা থাকলে পাইলিংএর কাজ কিভাবে করা হয়েছে তার জবাব দিতে পারেনি গণপূর্ত বিভাগ। বিষয়টি নিয়ে গত বছরের ২৪ আগস্ট দুদকের গণশুনানিতে আলোচনাও হয়েছে। 

অভিযোগ রয়েছে মাদারীপুর গণপূর্ত বিভাগের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কামরুল ইসলাম খান ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মালিকের যোগসাজশে নাম মাত্র কাজ করে কোটি টাকার বিল তুলে নেয়া হয়েছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলা পরিষদের পাশেই মডেল মসজিদ নির্মাণের জন্য পাইলিং করা হয়েছে। পাইলিং কাজে ব্যবহৃত রডে ইতিমধ্যে মরিচীকা ধরেছে। 

কাজের অনিয়ম ও বিল তুলে নেয়ার বিষয় তুলে ধরে গত বছরের ২৪ আগস্ট নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি দুদকের গণশুনানিতে অভিযোগ করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে তৎক্ষনাত বিষয়টি তদন্ত করা নির্দেশ দেন দুদকের তৎকালীন সচিব মাহবুব হোসেন। তবে এরপরও শুরু হয়নি কাজ। ইতিমধ্যে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কোটি টাকার বিল তুলে নিয়ে আর কাজ করবে না জানিয়ে দিয়েছে। 

গণপূর্ত বিভাগে সূত্রে জানা গেছে, ঠিকাদার কাজ না করার কারনে দ্বিতীয় দফায় দরপত্র আহবান করে আবার নতুন ঠিাকাদার নির্ধারণ করে তারপর কাজ শুরু করা হবে। নতুন করে দরপত্র আহবান করা হলে নির্মান ব্যয় কয়েকগুন বেড়ে যাবে বলে ধারণা সংশ্লিষ্ঠদের। 

মাদারীপুরের নির্মাণ সামগ্রী বিক্রেতা (রড, সিমেন্ট ব্যবসায়ী) মো. সালাহ উদ্দিন জানান, ২০১৯ রডে কেজি ছিলে ৫০ টাকা। বর্তমানে এই রডের দাম প্রায় ১০০টাকা। সব ধরনের নির্মাণ সামগ্রীর দামই বেড়েছে বলেও জানান তিনি।

মাদারীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি আ্যাডভোকেট মাসুদ পারভেজ বলেন, নির্ধারিত সময় কাজ শেষ হলেও দ্বিতীয় দফা দরপত্র আহবান করার দরকার হতো না। এক বছরের একটি কাজ ৫ বছরেও শেষ করতে পারেনি। সব কিছুর দাম বেড়েছে। এখন দ্বিতীয় দফায় দরপত্র আহবান করে কাজ শেষ করতে হলে তো নির্মাণ ব্যয় কয়েকগুণ বেড়ে যাবে।

স্থানীয় বাসিন্দা মিজান শিকদার বলেন, সারাদেশের মডেল মসজিদ নির্মাণ কাজ শেষ হলেও মাদারীপুর সদর উপজেলা মডেল মসজিদের কোন হদিস নেই। কয়েক বছর থেকে কাজ পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।

মাদারীপুর গণপূর্ত বিভাগের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী মো.কামরুল ইসলাম খান তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, যত টুকু কাজ করা হয়েছে সেই হিসাবেই ঠিকাদারের বিল পরিশোধ করা হয়েছে। 

মাদারীপুর গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহরিয়ার হোসেন জানান, স্থান নির্ধারণ সংক্রন্ত ঝামেলার কারনে কাজ বন্ধ ছিলো। বর্তমানে ঠিকাদার কাজ করবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। তবে শিঘ্রই দরপত্র আহবান করে কাজ শুরু করা হবে বলে জানান।

মাদারীপুর ইসলামী ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক রনি বলেন, আমরা দ্রুত কাজ শেষ করা চেষ্টা করছি। এ ব্যাপারের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মালিকের সাথে যোযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি। 

মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মারুফুর রশিদ খান জানান, কাজটি অনেকদিন বন্ধ ছিলো। পুনরায় মডেল মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু করার চেষ্টা করছি।

মডেল মসজিদ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো.নজীবুর রহমান বলেন,পাইলিং এর কাজ করা হয়েছে। স্থানীয় লোকজন এবং জনপ্রতিনিধিরা চাচ্ছে না কাজটা ওখানে হোক সে কারনে বন্ধ ছিলো। পুরানো ঠিকাদার কাজ করবেন না। সেকারনে নতুন ঠিকাদার নিযুক্ত করে আবার কাজ শুরু করা হবে। 

এএইচএস/এসআর

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,