প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে ছেলে-মেয়েদের কোটাবিরোধী আন্দোলনে তাদের পড়াশোনার সময় নষ্ট হচ্ছে। এর কোনো যৌক্তিকতা আছে বলে আমি মনে করি না।
রোববার গণভবনে বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোটা বাতিলের আন্দোলন হচ্ছে। কোটা বন্ধ করা হয়েছিল। কিন্তু হাইকোর্টের রায়ে বহাল হয়েছে। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে এভাবে আন্দোলন করা, এটা তো সাবজুডিস (বিচারাধীন বিষয়), আমরা সরকারে থেকে কিন্তু এভাবে কথা বলতে পারি না।
তিনি বলেন, হাইকোর্ট রায় দিলে সেখানে (সমাধানও) হাইকোর্ট থেকে আবার আসতে হবে। কিন্তু আজ আন্দোলনের নামে যা করা হচ্ছে, তা পড়াশোনার সময় নষ্ট করা। এর কোনো যৌক্তিকতা আছে বলে আমি মনে করি না।
শেখ হাসিনা বলেন, হাইকোর্টের রায় আমরা সবসময় মেনে নিই। কিন্তু আমরা দেখলাম এখন কোটাবিরোধী আন্দোলন আবার গড়ে তোলার চেষ্টা হচ্ছে। ছেলে-মেয়েরা পড়াশোনা বাদ দিয়ে এখন কোটাবিরোধী আন্দোলন করছে। সেখানে মেয়েরাও আন্দোলন করছে।
তিনি বলেন, এখানে আমার একটা প্রশ্ন, যারা এর আগে কোটাবিরোধী আন্দোলন করেছিল, তারা কতজন পাবলিক সার্ভিস কমিশনে পরীক্ষা দিয়েছিল, আর কতজন পাস করেছিল সেটা বের করা দরকার।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোটা কিন্তু একবার বাতিল করা হয়েছিল। কিন্তু ফলাফলটা কী? পাবলিক সার্ভিস কমিশনের হিসাব দেখলে দেখা যাবে যে, আগে কোটা থাকতে মেয়েরা যে পরিমাণ সুযোগ পেত, সে পরিমাণ সুযোগ কিন্তু এ কয় বছরে আর পায়নি।
তিনি বলেন, অনেক জেলা, প্রত্যন্ত অঞ্চল, সেসব অঞ্চলের মানুষ কিন্তু বঞ্চিত থেকে গেছে। তারাও চাকরি পাচ্ছে না। এ রকম বঞ্চিত হওয়ার কারণেই কেউ মামলা করেন, হাইকোর্ট একটা রায় দেন।
অনুষ্ঠানে যুব মহিলা লীগের ওয়েবসাইট উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা। নারীর ক্ষমতায়ন ও অগ্রগতিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, আন্দোলন-সংগ্রামে যুব মহিলা লীগ সব সময় ভূমিকা পালন করেছে। দেশের মানুষের অধিকার আদায়ে কাজ করেছে সংগঠনটি।
মহিলা লীগের কর্মীদের পেনশন স্কিমে যোগ দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সবার জন্য পেনশন স্কিম করা হয়েছে। জীবনের নির্ভরতার জন্য পেনশন। আমরা চাই সবাই একটু ভালো ভাবে বাঁচুক।’
বিএনপি ক্ষমতায় থাকার সময় যেভাবে নিযার্তন করেছে তা নিন্দারও যোগ্য নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, দলটি ভোট চুরি করে মাত্র দেড় মাস টিকেছে। গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ২০০১ সালে ক্ষমতায় গিয়েছিল বিএনপি। ভোট চুরির অবপাদে ২ বার ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে তারা।
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপির নির্যাতনের চিত্র মানুষের সামনে তুলে ধরতে হবে। তারা সমাজের অভিশপ্ত বোঝা। তাদের অত্যাচার-নির্যাতন যেন আবার ফিরে না আসে, সে দিকে সজাগ থাকতে হবে।
-এমএ