For English Version
রবিবার ৬ অক্টোবর ২০২৪
হোম

যমুনায় দ্বিতীয় দফা পানি বৃদ্ধি অব্যাহত

Published : Thursday, 4 July, 2024 at 4:00 PM Count : 106

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢল ও বৃষ্টির কারণে সিরাজগঞ্জে যমুনায় দ্বিতীয় দফা পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। সেই সাথে জেলার অভ্যন্তরীণ, ফুলজোড়, ইছামতি, হুড়াসাগর, করতোয়া ও বড়ালসহ বিভিন্ন নদী ও খালে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চরাঞ্চল ও নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। এ কারণে পানিবন্দি হয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন মানুষ।

এদিকে, পানি বৃদ্ধির কারণে জেলা সদর, শাহজাদপুর ও কাজিপুরে শুরু হয়েছে নদী ভাঙ্গন। নদী ভাঙ্গনে ইতোমধ্যে বাড়ি-ঘর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। সিরাজগঞ্জে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্তৃপক্ষ জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন ঠেকানোর চেষ্টা করছে।

সিরাজগঞ্জ পাউবো'র উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রনজিত কুমার সরকার বৃহস্পতিবার সকালে জানান, গত কয়েক দিনে যমুনা নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত ১২ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধ পয়েন্টে যমুনার পানি ২১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে কাজিপুর উপজেলা পয়েন্টে যমুনার পানি ২৪ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
 
এদিকে, পানি বাড়ায় যমুনা তীরবর্তী সদরের কাওয়াকোলা, শাহজাদপুরের জালালপুর ইউনিয়নের ব্রাম্মনগ্রাম ও সৈয়দপুর, কৈজুরী ইউনিয়নের হাটপাঁচিল ও কাজিপুরের খাসরাজ বাড়িতে নদী ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া, সদরের যমুনা তীরবর্তী রতনকান্দি-বাহুকা ও কাজিপুরের শুভগাছায় ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে পাউবোর নির্মিত নদী তীর রক্ষা বাঁধ।

শাহজাদপুরের হাটপাঁচিল গ্রামের আমিনুল ইসলাম জানান, এ এলাকায় গত ৩ বছর ধরে ৬৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় সাত কিলোমিটার দীর্ঘ নদীর তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করছে পাউবো। কিন্তু সে কাজ এখনও শেষ করতে পারেনি তারা। এদিকে নদী ভাঙ্গনে বিলীন হচ্ছে ঘর-বাড়িসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।
একই গ্রামের আবু সিদ্দিক সরকার বলেন, পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে এই এলাকায় ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে পাচিল গ্রামের কোবাদ মাস্টারের দোতলা ভবনসহ বহু ঘর-বাড়িও নদীতে বিলীন হয়েছে।

তিনি বলেন, গত দুই সপ্তাহে অর্ধশত বাড়ি-ঘর ও জমিজমা নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। পাউবো বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন ঠেকানোর চেষ্টা করছে কিন্তু তেমন কাছে কাজে আসছে না। অন্যদিকে, কাজিপুর উপজেলার খাসরাজ বাড়িতে যমুনার চরাঞ্চলে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। 

পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান জানান, কাজিপুরের খাসরাজ বাড়িতে যমুনার চরাঞ্চলে ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। যমুনায় দ্বিতীয় দফায় দ্রুত পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সদর উপজেলার কাওয়াকোলা, শাহজাদপুরের হাটপাঁচিল ও কাজিপুরের খাসরাজ বাড়িসহ কিছু কিছু জায়গায় যমুনায় নতুন করে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। আমরা ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় সতর্ক দৃষ্টি রাখছি। 

তিনি জানান, পাউবোর ড্রেজার দিয়ে আমরা চ্যানেলটিকে প্রশস্ত করার চেষ্টা করছি। নদীর গতিপথ পরিবর্তনের জন্য খনন কাজ চলছে। নদী ভাঙ্গন রোধে আপাতত ভাঙ্গন কবলিত এলাকা চিহ্নিত করে প্রকল্পের পাশাপাশি সেখানে জিও ব্যাগে বালি ফেলে ভাঙ্গন ঠেকানো হচ্ছে। 

এদিকে, নদী ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করায় ভাঙ্গনের মুখে থাকা সদর উপজেলার কাওয়াকোলা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বড়কয়রা কমিউনিটি ক্লিনিকটি  বুধবার নিলামে বিক্রি করা হয়। 

কাওয়াকোলা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান (জিয়া মুন্সি) বলেন, কাওয়াকোলা ইউনিয়নের হাট বয়ড়া, দৌগাছী, বড়কয়রা, ছোট কয়রা, কৈগাড়ী দড়তা, চন্ডল বয়ড়া, বেড়া বাড়ী গ্রামে তীব্র নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। অনেক গ্রাম ইতিমধ্যে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। চলতি বছর এ পর্যন্ত ৫ শতাধিক ঘর-বাড়ি নদীতে চলে গেছে। ভাঙনের কারণে কমিউনিটি ক্লিনিক নিলামে বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়া দুটি মুজিব কেল্লা, সাড়ে চার কিলোমিটার পাকা রাস্তা, বর্ণি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভাঙ্গনের মুখে রয়েছে। ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা  নেয়ার দাবি জানাই।

সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. জাহিদুল ইসলাম হীরা জানান, যমুনা নদীতে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। নদী ভাঙনের কারণে যেকোনো মুহূর্তে বয়কয়রা কমিউনিটি ক্লিনিক নদীতে বিলীন হয়ে যেতে পারে। এ কারণে কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে নিলাম বিক্রির কমিটি গঠন করে বুধবার প্রকাশ্যে নিলাম অনুষ্ঠিত হয় এবং ২৯ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়। 

শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান জানান, জালালপুর ও কৈজুরী ইউনিয়নের হাঁটপাচিল এলাকায় গত কয়েক দিন হয় ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙনের তীব্রতাও বেড়েছে। দুটি এলাকায় তিন দিনে অন্তত ৫০টি বাড়ি-ঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙন কবলিতদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। 

এবি/এমএ

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,