For English Version
রবিবার ৬ অক্টোবর ২০২৪
হোম

প্রাণ সঞ্চার রাজশাহীর আউশ আবাদে

Published : Tuesday, 2 July, 2024 at 4:54 PM Count : 99



আষাঢ় মাসের তৃতীয় সপ্তাহের প্রথম দিকেও বৃষ্টির বদলে ছিলো ভ্যাপসা গরম ও রোদের দাপট। এ মাসে প্রচুর বৃষ্টি হওয়ার কথা থাকলেও অনাবৃষ্টি ও খরায় রাজশাহী অঞ্চলে আউশ ধান চাষও ভীষণভাবে ব্যাহত হচ্ছিলো। ক্ষেত ফেটে চৌচির হওয়ায় আউশের অনেক বীজতলাও নষ্টও হয়েছে। চারা রোপণ করে অনেকে বিপাকে পড়েছিলেন।

তবে আষাঢ়ের তৃতীয় সপ্তাহের শেষে বরেন্দ্রের মেঠোপথে মুসলধারে ঝরেছে বৃষ্টি। ভারি বৃষ্টি জানান দিচ্ছে স্বরূপে বরষার! আর এতেই প্রাণ ফিরেছে আউশ আবাদ। অনাবৃষ্টিতে তেঁতে ওঠা প্রাণ-প্রকৃতিতেও এসেছে স্বস্তি।
গত সোমবার দুপুর ৩ টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৩০ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে রাজশাহী আবহওয়া অফিস। এর আগে রোববার ১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে রাজশাহীতে। এতে মহানগরের নিচু এলাকায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়ে সাময়িক অসুবিধা তৈরি হলেও ফল-ফসলের জন্য এ বৃষ্টি আশীর্বাদের বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক মো. আব্দুস সালাম বলেন, এবার বেশকিছু দিন থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাত হলেও রাজশাহীতে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছিল। আষাঢ় মাসের দেখা মিললেও ছিলো না কাক্সিক্ষত বৃষ্টির। তবে শেষ পর্যন্ত এই অঞ্চলে মৌসুমি বায়ু প্রবেশের কারণে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। দেশের অন্যান্য স্থানের মতো আজ রাজশাহীতেও বৃষ্টি হয়েছে। এখনও বৃষ্টির আবহ আছে। রাতেও বৃষ্টি হতে পারে।

এদিকে কৃষকরা বলছেন, দুই মাস ধরে ধানচাষ শুরু হলেও পানির অভাবে খাঁখাঁ করছিলো মাঠ-ঘাট। ফলে এখন পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী অর্ধেকের মতো জমিতে আউশ ধানের চারা রোপণ করা সম্ভব হয়নি। রোপণ করা আউশ আবাদও রোদে পুড়ে নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছিলো। তবে আশীর্বাদের বৃষ্টি ফসলের ক্ষতি থেকে বাঁচালো।

জানা গেছে, রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় বোরো থেকে শুরু করে আউশ-আমন ধান চাষের অন্যতম মাধ্যম হলো সরমংলা খাল। বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) একটি প্রকল্পের আওতায় পদ্মা নদী থেকে পানি সংগ্রহ করে পাইপ লাইনের মাধ্যমে এই খালে ফেলা হয়। সেখান থেকে সোলার বিদ্যুতের মাধ্যমে কৃষকরা জমিতে পানি সেচ দেন। কিন্তু এবার ওই খালেও কোনো পানি নেই। ফলে আশেপাশের অন্তত ৫ হাজার হেক্টর জমিতে এখনও ধান চাষ শুরু করতে পারেননি কৃষকরা। তবে স্বস্তির বৃষ্টি ভরসা হয়ে দেখা দিয়েছে।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি বছর জেলায় ৫০ হাজার ৭০ হেক্টর জমিতে আউশ ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু গত দু’মাসে মাত্র ৩১ হাজার হেক্টরের একটু বেশি জমিতে আউশের চারা রোপণ করা সম্ভব হয়েছে।

এদিকে, আগামী এক মাসের মধ্যে শুরু হবে আমন ধান চাষ। কিন্তু রাজশাহীতে কাঙ্খিত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় আমন ধানের বীজতলাও প্রস্তুতেও শঙ্কা তৈরি হয়েছিলো।

পবা উপজেলার কৃষক সাদ্দাম আলী বলেন, এখন বর্ষা মৌসুমও বৃষ্টিহীন কাটছে। আউশ-আমন হলো বৃষ্টিপ্রধান ধান। জমিতে সেচ দিতেই হয় না। এখন জমিতে চারা রোপণ করতেও সেচ দিতে হচ্ছে, আবার রোপণ করার পরও সেচ দিতে হচ্ছে। এতে বাড়তি টাকা খরচ হচ্ছে। এছাড়া আশেপাশে কিছু জমিতে ধান রোপণ করে অনেকে বিপাকে পড়েছিলেন। তাই বৃষ্টির অপেক্ষা করছিলাম। গত রোববার থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। একারণে কয়েকদিনের মধ্যেই ধান লাগাবো।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) উম্মে সালমা বলেন, রাজশাহীতে এবার বৃষ্টিপাতের পরিমাণ অনেক কম। ফলে বৃষ্টির অভাবে মাঠ-ঘাট শুকিয়ে চৌচির হয়ে যাওয়ায় ধানচাষ ব্যাহত হচ্ছিলো। তবে রোববারের মুসলধারের বৃষ্টি অন্য ফসল তো বটেই, বিশেষ করে আউশ-আমনের জন্য আশীর্বাদের।

আরএইচএফ/এসআর

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,