For English Version
রবিবার ৬ অক্টোবর ২০২৪
হোম

ভরা মৌসুমেও রাজশাহীতে আমের দাম বেড়েছে

Published : Wednesday, 19 June, 2024 at 7:50 PM Count : 152

কোরবানি ঈদের পর রাজশাহীতে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আমের দাম। বুধবার আমের বড় মোকাম বানেশ্বর বাজারে গিয়ে এমন তথ্য জানা যায়। 

হিমসাগর আমের ভরা মৌসুম হওয়া সত্ত্বেও ঈদের আগে-পরে এই আমের দাম বেড়েছে মণে প্রায় এক হাজার টাকা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, এবার আমের উৎপাদন কম হওয়ায় দাম বেশি। তাছাড়া ব্যাপারীদের জন্য আরেকটা চ্যালেঞ্জ হলো, অনলাইন ব্যবসায়ী। তারা মণে ৫০০ টাকা বেশি দিয়ে ভালো আমগুলো কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। এই সুযোগে চাষিরাও বেশি দাম হাঁকছেন, ব্যবসায়ীদেরও সেই দামে কিনতে হচ্ছে। এই দুই কারণে আমের দাম বেড়ে গেছে।

রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর কাচারি মাঠে আমের বাজার বসে। বাজারের একটি ছাউনির নিচে বসে বানেশ্বরের খুঁটিপাড়া গ্রামের ব্যবসায়ী মানিক ও আহসান হাবিব হিসাব মেলাচ্ছেন, কোন আম কী পরিমাণে বাজারে নামল। তারা দু'জনেই ছোটবেলা থেকেই আমের ব্যবসা করেন। তাদের কথোপকথন থেকে জানা গেল, এখন হিমসাগর প্রায় ৯০ শতাংশ শেষের পথে। তাই এই আমের দাম চূড়ায়। আজ বাজারে হিমসাগরের দাম হাঁকা হচ্ছে ৪ হাজার ৫০০ থেকে ৫ হাজার টাকা মণ। ঈদের আগে বিক্রি হয়েছে সাড়ে ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ৮০০ টাকা।
ল্যাংড়া আম এখন পর্যন্ত ৩০ শতাংশ বাজারে উঠেছে। তাই দাম কিছুটা নাগালের মধ্যে আছে। আজ বাজারে ল্যাংড়ার দাম হাঁকা হয় ৪ হাজার টাকা মণ। ঈদের একদিন আগে ছিল ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা। আম্রপালি আম বাজারে এসেছে ৫ থেকে ৬ শতাংশ। ঈদের পর আম্রপালির দাম বেড়েছে মণে ৫০০ টাকার মতো। লখনা প্রায় অর্ধেক শেষ হয়ে গেছে। কম মিষ্টির জন্য অনেকেই আমটিকে ডায়াবেটিক আম বলেন। ঈদের পর লখনার দামও মণে ৭০০ টাকা করে বেড়েছে। আগে বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ২০০ টাকা মণ দরে।

বাজারে ঢুকে ব্যবসায়ীদের কথার সত্যতা পাওয়া গেল। বানেশ্বর বাজারের ব্যবসায়ী মহাতাব আলী বাগান কিনে ধীরে ধীরে আম বিক্রি করেন। তার দোকানে দুই ধরনের হিমসাগর পাওয়া গেল, একটি ডাঁশা ডাঁশা- দাম ৫ হাজার টাকা মণ। আরেকটি মাঝারি- দাম সাড়ে ৪ হাজার টাকা মণ। কোনোটির দাম এক টাকা কমাতে রাজি নন তিনি। দোকানে থাকা আম্রপালির দাম চাচ্ছেন ৩ হাজার ৪০০ থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা মণ।

বড় আড়তদার জারমান আলী ঈদের আগের দিন প্রায় দুই হাজার মণ আম কিনেছিলেন। বুধবার দুপুরে আড়তে গিয়ে কোনো আম পাওয়া গেল না। তিনি ক্যাশ বাক্সের কাছে শুয়ে আছেন।

জারমান আলী বলেন, ঈদের আগের দিন আম কিনেছেন। তারপর যেভাবে দাম বাড়ছে, তিনি এখন বাজার দেখছেন। দেখেশুনে কাল থেকে আম কেনা শুরু করবেন। 

তিনি বলেন, ঈদে সব আমের দাম বেড়েছে। এমনকি স্থানীয় গুটি আম মণে ৩০০ থেকে ৭০০ টাকা বেড়েছে।

আম ব্যবসায়ী নরসিংদীর জাহিদ হাসানের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, রাজশাহীতে আমের যা দাম, তার সঙ্গে যোগ হচ্ছে গাড়ি ভাড়া। ১৯ হাজার টাকার গাড়ি ভাড়া লাগল ২৩ হাজার। আরও খরচ আছে। সব মিলিয়ে রাজশাহী থেকে আম নিয়ে এসে আড়াই লাখ টাকার মতো লোকসান হয়েছে। এখন রাজশাহীতে দাম কমলে যাব, না কমলে অন্যদিকে বাজার খুঁজব।

অনলাইনে আম ব্যবসায়ী পিএস অনলাইন মার্কেটের স্বত্বাধিকারী পরিনা বলেন, দেশের অভিজাত ক্রেতা, যারা নির্ভেজাল আম খেতে চান, তারা অনলাইনে ফরমাশ (অর্ডার) করেন। তারা বাজারের সেরা আমগুলো বেশি দামে কিনে তাদের সরবরাহ করেন। 

তিনি বলেন, করোনার সময় থেকে অনলাইন বাজার বেড়েছে। এখন আরও চাঙা। তাই এর প্রভাব সরাসরি বাজারে পড়েছে।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক উম্মে সালমা বলেন, এবার লক্ষ্যমাত্রার ১০ শতাংশ আম কম হতে পারে। এবার রাজশাহীতে ১৯ হাজার ৬০২ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে দুই লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন। বড় আম গাছগুলোতে এবার আম কম আছে। কিন্তু ছোট গাছে পর্যাপ্ত আম আছে।

বানেশ্বর আমের হাটের ইজারাদার আল হাফিজ ইসলাম বলেন, এবার আমের দাম বেশি হলেও আম কম থাকায় ইজারার টাকা ওঠা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। তবে আমের মৌসুম আরও এক মাস হয়তো থাকবে। দিন যত যাবে, আমের দামও তত বাড়বে।

-

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,