সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি দেশের সাথে মিল রেখে চাঁদপুরের প্রায় ৪০ গ্রামে উদযাপিত হচ্ছে পবিত্র ঈদ-উল-আজহা। রোববার সকালে হাজীগঞ্জ উপজেলার বড়কুল পশ্চিম ইউনিয়নের সাদ্রা দরবার শরীফে সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
এতে আনন্দঘন ও উৎসবমুখর পরিবেশে ঈদের জামাতে অংশগ্রহণ করেন মুসুল্লিরা। এরপর পশু কোরবানি শুরু হয়।
শনিবার শেষ হয়েছে পবিত্র হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা। রোববার ফজরের নামাজের পর থেকেই সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি দেশে পবিত্র ঈদ-উল-আজহার নামাজের মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে মুসলমানদের অন্যতম সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদ-উল-আজহা।
আর সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জসহ চাঁদপুরের প্রায় ৪০ গ্রামে পবিত্র ঈদ-উল-আজহা উদযাপন করেন হাজীগঞ্জের সাদ্রা দরবার শরীফ ও চট্টগ্রামের মির্জাখিল দরবার শরীফের অনুসারীরা।
এদিন সকালে সাদ্রা ঈদগাঁ মাঠে ঈদের জামায়াতে ইমামতি করেন সাদ্রা দরবার শরীফের বর্তমান পীর মাও. মুফতি জাকারিয়া আল মাদানী। এছাড়াও অন্যান্য মসজিদে ঈদের জামায়াতে ইমামতি করেন মেঝো হুজুর মাও. আবু বকর মো. ইসমাইল, সেজো হুজুর মাও. আবুল খায়ের, মাও. আরিফুর রহমান সাদ্রাভীসহ সকল সাহেবজাদাগণ।
জানা গেছে, ১৯২৮ সাল থেকে হাজীগঞ্জের রামচন্দ্রপুর মাদ্রাসার তৎকালীন অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে রোজা, পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর ও পবিত্র ঈদ-উল-আজহা উদযাপন শুরু করেন। এরপর থেকে চাঁদপুরের প্রায় ৪০ গ্রামের মানুষ রোজা ও আগাম ঈদ পালন করে আসছেন। তবে তারা বলছেন, সৌদি আরব নয়, চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করেই রোজা ও ঈদ পালন করে থাকেন।
স্থানীয়রা জানান, হাজীগঞ্জ উপজেলার বলাখাল, দক্ষিণ বলাখাল, নিলাম বলাখাল, শ্রীপুর, মনিহার, বড়কুল, অলিপুর, উচ্চঙ্গা, বেলচোঁ, রাজারগাঁও, জাকনি, কালচোঁ, মেনাপুর, ফরিদগঞ্জ উপজেলার শাচনমেঘ, খিলা, উভারামপুর, পাইকপাড়া, বিঘা, উটতলী, বালিথুবা, শোল্লা, রূপসা, বাশারা, গোয়ালভাওর, কড়ইতলী, নয়ারহাট।
মতলব উপজেলার মহনপুর, এখলাসপুর, দশানী, নায়েরগাঁও, বেলতলীসহ কচুয়া ও শাহরাস্তির কয়েক গ্রামসহ চাঁদপুরের পার্শ্ববর্তী নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ভোলা, বরিশাল,পটুয়াখালী, বরগুনা, শরীয়তপুর ও চট্টগ্রাম জেলার কয়েকটি স্থানে মাও. ইছহাক খানের অনুসারীরা একদিন আগে ঈদ উদযাপন করেন।
এছাড়াও, চট্টগ্রামের মির্জাখিল দরবার শরীফের অনুসারী হিসেবে মতলব উত্তরে পাঁচানী, বাহেরচর পাঁচানী, আইটাদি পাঁচানী, দেওয়ানকান্দি, লতুর্দী, সাতানী ও দক্ষিণ মাথাভাঙ্গা, আমিয়াপুর, মধ্য ইসলামবাদ, গাজীপুুর, মধ্য এখলাছপুর (বড়ইকান্দি), ফরাজীকান্দি, রামদাশপুর, চরমাছুয়া, হাজিপুর, দক্ষিণ রামপুর, সরকারপাড়া ও ঠাকুরপাড়া অনেকে সৌদিআরবের সাথে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর ও ঈদ-উল-আজহা পালন করে থাকেন।
তবে উল্লেখিত গ্রামগুলোর মধ্যে অনেকেই দেশের সাথে অর্থ্যাৎ রাষ্ট্রীয় নিয়ম বা বিধি অনুযায়ী সিয়াম (রোজা), ঈদ-উল-ফিতর ও ঈদ-উল-আজহা পালন করে থাকেন।
এ বিষয়ে সাদ্রা দরবার শরীফের বর্তমান পীরের ছেলে সাহেবজাদা ড. বাকী বিল্লাহ্ মিশকাত চৌধুরী সংবাদ কর্মীদের বলেন, সৌদি আরব নয়, কোরআন ও হাদিসের আলোকে চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে আমরা রোজা পালন ও ঈদ উদযাপন করে থাকি। অর্থ্যাৎ নির্ভরযোগ্য সূত্রের মাধ্যমে বিশ্বের যেকোনো দেশেই চাঁদ দেখার খবর পেলেই, আমরা রোজা ও ঈদ পালন করি।
-এইচইউ/এমএ