For English Version
রবিবার ৬ অক্টোবর ২০২৪
হোম

বাউফলে অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রশিদ ছাড়া টাকা আদায়ের অভিযোগ

Published : Friday, 14 June, 2024 at 5:36 PM Count : 100

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোনো প্রকার রশিদ ছাড়াই শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আইটি চার্জ, বিদ্যুৎ বিল, টিউশন ফি, সেশন ফি, রেজিষ্ট্রেশন ও পরীক্ষার ফি সহ বিভিন্ন খাতের নামে টাকা আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আদায়কৃত টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে প্রতিষ্ঠানের প্রধান নিজের পকেটে রেখে খেয়ালখুশি মতো খরচ করছেন। আয়-ব্যয়ের ক্ষেত্রে কোনো প্রকার স্বচ্ছতা নেই। সেক্ষেত্রে ভূয়া বিল ভাউচার দেখিয়ে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে একাধিক প্রতিষ্ঠান প্রধানের বিরুদ্ধে। আবার অতিরিক্ত ক্লাশ বা কোচিং ফি সহ নানা খাতের নামে আদায় করা হচ্ছে অতিরিক্ত অর্থ। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন একাধিক প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও অভিভাবকরা।
 
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, উপজেলায় মোট ৬২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৬৭টি মাদ্রাসা ও ১০টি কলেজ রয়েছে। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে সারা বছর রশিদ ছাড়াই শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিভিন্ন খাতের নামে অর্থ আদায় করা হচ্ছে। বিশেষ করে পাবলিক পরীক্ষার ফরম পূরণের সময় শিক্ষাবোর্ডের নির্দেশনা উপেক্ষা করে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হয়। বিভিন্ন ব্যক্তির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে অস্বচ্ছল পরিবারের কিছু শিক্ষার্থীদের বোর্ড নির্ধারিত ফি নেয়া হলেও বেশীরভাগ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা হয় দ্বিগুন টাকা। 

কাছিপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাধবপুর এনকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়, নওমালা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, নওমালা আবদুর রশিদ খান ডিগ্রী কলেজ, নুরাইনপুর কলেজ, কেশবপুর ডিগ্রী কলেজ, ধুলিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ, কালিশুরী এসএ ইনষ্টিটিউশন ও ইন্দ্রকুল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একাধিক অভিভাবক বলেন, কোনো প্রকার রশিদ ছাড়াই বিভিন্ন খাতের নামে টাকা আদায় করেন শিক্ষকরা। আদায়কৃত টাকা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা না দিয়ে প্রতিষ্ঠানের প্রধান নিজের খেয়ালখুশি মতো ব্যয় করেন। নিয়মানুযায়ী  রশিদ নিয়ে ব্যাংকে গিয়ে শিক্ষার্থী তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হিসাবে টাকা জমা করবেন। আর এখানে হাতে হাতে টাকা আদায় করেন শিক্ষকরা। ফরম পূরণের সময় নিজ হাতে টাকা আদায় করেন অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক, সুপার বা অধ্যক্ষ। 

নুরাইনপুর কলেজের এক শিক্ষক বলেন, চলতি বছর এইচএসসির ফরম পূরনের সময় রশিদ ছাড়াই প্রায় ৭ লাখ টাকা নিজ হাতে আদায় করেছেন অধ্যক্ষ। শুধুমাত্র বোর্ড ফি জমা দিয়ে বাকী টাকা তিনি ভূয়া বিল ভাউচার তৈরি করে আত্মসাত করেছেন। ফরম পূরণের ফি আদায়ের ক্ষেত্রে কোনো প্রকার কমিটিও গঠন করেননি। 

অবশ্য এসব অভিযোগ অস্বীকার করে কলেজের অধ্যক্ষ মো. নজরুল ইসলাম বলেন, একটি মহল আমাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। মিথ্যা বলে ভাবমূর্তী নষ্ট করছে। 
এদিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আয় ব্যয়ের স্বচ্ছতা না থাকায় প্রতিবছর লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের সুযোগ তৈরি হয়।  ধুলিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের সদ্য সাবেক সভাপতি  শাহ্ আলম বলেন, ওই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ এসএম জহিরুল ইসলাম লাখ লাখ টাকা আত্মসাত করেছেন। বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ আসা এবং কলেজের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায়কৃত টাকা তিনি ব্যাংকে জমা দিতেন না। ভূয়া বিল ভাউচার তৈরি করে বিভিন্ন খাতে ব্যয় দেখিয়েছেন। এসএম জহিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর তদন্ত করে কলেজের অর্থ আত্মসাতের প্রমান পেয়েছেন। 

তিনি আরও বলেন, সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা প্রয়োজেন। আর্থিক স্বচ্ছতা না থাকলে একটি প্রতিষ্ঠান ভেঙে পড়ে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান দুর্নীতিগ্রস্ত হলে সাধারণ শিক্ষকদের মনোবল ভেঙে পড়ে, পাঠদান ব্যহত হয়। 

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বাউফলের এমপিওভুক্ত স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা শিক্ষক-কর্মচারী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক, ধানদি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মঞ্জুর মোরশেদ বলেন, প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারের নির্দেশ মেনেই বিভিন্ন ফি আদায় করে। আর আয়-ব্যয়ের জন্যও সাধারন শিক্ষকদের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করা হয়। এখানে অনিয়ম বা অর্থ আত্মসাতের কোনো সুযোগ নেই। রশিদ ছাড়া অর্থ আদায় কিংবা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার প্রশ্নে তিনি বলেন, যারা অনিয়ম করেন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। এসব অনিয়মের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের পাশে নেই আমার সংগঠন। 

এ প্রসঙ্গে বাউফলের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা  মো. বশির গাজী বলেন, ইতিমধ্যে আমি কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে আয়-ব্যয়ের ক্ষেত্রে যথাযথ নিয়ম অনুসরন না করার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে। শিগগিরই সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানকে প্রথমে সতর্ক করা হবে। এরপরও আয়-ব্যয়ে স্বচ্ছতা ফিরে না এলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এএস/এসআর 

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,