প্রতিপক্ষের হাতে বড় ভাই খুন, ছোট ভাইকেও দেয়া হচ্ছে হত্যার হুমকি
Published : Thursday, 13 June, 2024 at 7:07 PM Count : 100
জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় খুন হয়েছেন বড় ভাই। এখন জামিনে থাকা মামলার আসামিরা ছোট ভাইকেও খুনের হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নিহত ব্যক্তির পরিবারের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ তোলা হয়েছে।
এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়ে হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করেন নিহত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যরা। আসামিদের হুমকির কারণে বর্তমানে তাঁরা নিরাপত্তাহীনতায় থাকার কথাও জানান।
এর আগে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে গত ১৪ মে রাজশাহীর বাগমারার গণিপুর ইউনিয়নের মাঝিগ্রামের মৃত সাজেদুর রহমানের ছেলে ইলিয়াস আহমেদকে (৩০) পিটিয়ে জখম করে প্রতিপক্ষের লোকজন। তাঁকে রক্ষায় এগিয়ে গেলে ছোট ভাই ইমরান আলীকেও (২৮) মারধর করা হয়। ঘটনার ১০ দিন পর ২৪ মে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইলিয়াস মারা যান। দুই ভাইয়ের ওপর হামলার ঘটনায় ইমরান আলী বাদী হয়ে আদালতে ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার আসামিরা হলেন আইনুল হক (৩৮), মহসীন আলী (২৬), মো. সাদিকুল (২২), মর্জিনা বিবি (৩৪), সুফিয়া বিবি (৩৬), আয়ুব আলী (৪০), মো. শাকিল (২২), মো. আলম (৩৫), আব্দুর রশিদ (৪৮), রওশন আরা (৪৫), মুনসুর রহমান (৪৮), আব্দুস সোবহান মেম্বার (৩৮) ও মো. গোলাম (৩৫)। মাঝিগ্রাম ও পার্শ্ববর্তী একডালা গ্রামে আসামিদের বাড়ি।
ইলিয়াস আহমেদ মারা যাওয়ার আগেই ১২ আসামি আদালত থেকে জামিন নেন। ইলিয়াস মারা যাওয়ার পর হামলার মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তর করতে পুলিশ আদালতে আবেদন করে। মামলার আসামিরা এখনো জামিনেই রয়েছেন। এখন তাঁরা মামলার বাদীকে হত্যার হুমকি দিচ্ছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়। দুপুরে রাজশাহী মহানগরীর একটি রেস্তোরাঁয় পরিবারের পক্ষ থেকে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে হত্যাকাণ্ডের বিচার চাইতে গিয়ে কোলের সন্তান নিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন নিহত ইলিয়াসের স্ত্রী রঞ্জিতা খাতুন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- নিহত ইলিয়াসের ছোট ভাই ও মামলার বাদী ইমরান আলী, মা ডালিমা বেগম ও চাচাতো ভাই সোহেল রানা। সংবাদ সম্মেলনে রঞ্জিতা খাতুন বলেন, ‘মামলা করার পর পুলিশ এ পর্যন্ত একজন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। অন্য আসামিরা এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তাঁরা প্রতিনিয়ত হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন।’ রঞ্জিতা দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবি করেন। পাশাপাশি স্বামী হত্যার বিচার চান।
নিহত ইলিয়াসের ভাই ইমরান আলী বলেন, আসামিরা তাঁকে হুমকি দিচ্ছেন। আসামিরা বলছেন, এক ভাইকে মারার কারণে এমনিতেও ফাঁসি হবে, আরেক ভাইকে মেরেই তাঁরা ফাঁসির কাষ্ঠে যাবেন। ইমরান বলেন, ‘আমি মামলার বাদী। আমাকে মেরে ফেললে মামলা দুর্বল হয়ে পড়বে। কেউ মামলা লড়তে পারবে না। তাই তারা আমাকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করছে। আমি আমার নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। আসামিরা কারাগারে থাকলে এত ভয়ে থাকতাম না।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার বলেন, এ মামলার এক আসামি কারাগারে আছেন। ইলিয়াসের ওপর হামলার মামলায় আসামিরা আদালত থেকে জামিন নেন। পরে ইলিয়াস মারা গেলে এটি হত্যা মামলা হিসেবে নিতে আদালতে আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু জামিনে থাকার কারণে আসামিদের গ্রেপ্তার করা যাচ্ছে না। মামলার অভিযোগপত্র দাখিলের পর হয়তো বিষয়টি আদালত বিবেচনা করবেন। আসামিরা যদি সত্যিই হুমকি দিয়ে থাকেন, তাহলে আইনের আশ্রয় নেওয়ার সুযোগ আছে। তাঁরা বিষয়টি জানালে খতিয়ে দেখা হবে।
আরএইচএফ/এসআর