নেত্রকোণায় জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ঘিরে রাখা বাড়িতে তল্লাশী
Published : Sunday, 9 June, 2024 at 2:42 PM Count : 228
জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে নেত্রকোণা সদর উপজেলার ভাসাপাড়া গ্রামে একটি বাড়িতে তল্লাশী চালায় অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিটের সদস্যরা। রোববার সকাল ৮টা থেকে নেত্রকোণা পুলিশ ও অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিটের সদস্যরা ওই বাড়িতে প্রবেশ করে।
জানা গেছে, সদর উপজেলার ভাসাপাড়া গ্রামে নির্জন স্থানে আটপাড়া উপজেলা নোয়াপাড়া গ্রামের আবদুল মান্নান প্রায় ২০ বছর আগে একটি দ্বিতল বাড়ি নির্মাণ করেন। বাড়ির সামনে বড় দুটি পুকুর রয়েছে। অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মান্নান ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ডুয়েট) শিক্ষক ছিলেন। তিনি ওই ভবনে একটি কলেজ স্থাপন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তা আর হয়ে ওঠেনি।
দুই বছর আগে বাড়িটি তিনি আরিফ নামে এক ব্যক্তির কাছে ভাড়া দেন। ওই বাড়িতে জঙ্গি প্রশিক্ষণ চলতো বলে পুলিশ খবর পায়। এরই প্রেক্ষিতে শনিবার দুপুর ১টার দিকে নেত্রকোণা মডেল থানার ওসি আবুল কালামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ বাড়িটি ঘেরাও করে।
এছাড়া জেলা শহরের বনুয়াপাড়ায় তানভির কটেজ নামে আরও একটি বাড়িতে জঙ্গি সদস্য আছে সন্দেহ করছে পুলিশ। শনিবার রাত ১০টা থেকে বাড়িটি ঘেরাও করে রাখে পুলিশ। পুলিশের ধারণা ওই বাড়িতে জঙ্গি সদস্যরা আছেন।
শনিবার দুপুর থেকে সীমানা প্রাচীরঘেরা দ্বিতল বাড়িটির চারপাশ ঘেরাও করে রাখে পুলিশ। ওই বাড়িতে জঙ্গি প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহার করা অস্ত্র ও বোমা থাকতে পারে বলে পুলিশের ধারণা। এরই মধ্যে কিছু সরঞ্জামাদি উদ্ধারের দাবি করেছে পুলিশ। এ সময় বাড়িটির নিচতলার একটি কক্ষে একটি বিদেশী পিস্তল, ১৭ রাউন্ড গুলি, প্রচুর পরিমাণ খেলনা পিস্তল, দুটি ওয়াকিটকি, একটি হ্যান্ডকাফ, এক বস্তা জিহাদী বইসহ বিভিন্ন জিনিস পাওয়া যায়।
পুলিশের ধারণা, বাড়িটিতে বোমা জাতীয় বিস্ফোরক দ্রব্য থাকতে পারে। রোববার সকাল ৮টার দিকে অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিটের সদস্য, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, পুলিশ সদস্যরা বাড়িটিরে প্রবেশ করে তল্লাশী অভিযান শুরু করেছেন।
এলাকাবাসী জানান, ভাড়া দেওয়ার পর থেকে ভাড়াটিয়ারা বাড়ির সীমানা প্রাচীর আরও উঁচু করে। এরপর নারকেল গাছ, আম গাছ ধরে সীমানা প্রাচীরে প্রায় ২০টির মতো সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়। বাড়িটির ভেতরে দুটি পুকুর রয়েছে। ওই বাড়িতে স্থানীয় কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয় না।
পুলিশ সুপার মো. ফয়েজ আহমদ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে সাংবাদিকদের বলেন, অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিটের সদস্যরা রাতেই নেত্রকোণায় পৌঁছেছেন। সকাল থেকে বাড়িটি তল্লাশী করছে। নেত্রকোণায় জঙ্গি প্রশিক্ষণ চলত বলে আমাদের কাছে খবর ছিল। সেই মোতাবেক ওই বাড়িটির ওপর নজর রাখা হয়। বাড়িটিতে শনিবার দুপুর থেকে পুলিশ অবস্থান নিয়েছে। এরই মধ্যে কিছু আলামত পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে- বাড়িটি জঙ্গি আস্তানা হিসেবে ব্যবহার করা হতো। বোমা বিশেষজ্ঞ টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদের কাজ শুরু করেছে।
অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের পুলিশ সুপার মো. সানোয়ার হোসেন বলেন, এরই মধ্যে কিছু আলাত জব্দ করা হয়েছে। বাড়িটিতে তল্লাশী অভিযান চলছে। ধারণা করা হচ্ছে- ওই বাড়িটিতে জঙ্গি প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো। অভিযান শেষে বিস্তারিত বলা যাবে।
-এসআই/এমএ