গোয়ালন্দে গরুর লাম্পি স্কিন ডিজিজে আতংকে খামারিরা
Published : Friday, 31 May, 2024 at 3:23 PM Count : 165
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার চরাঞ্চলে দেখা দিয়েছে গরুর লাম্পি স্কিন ডিজিজ বা এলএসডি যা গরুর জন্য একটি ভয়ংকর ভায়রাস জনিত চর্মরোগ। এই রোগে আক্রান্ত হয়ে চরাঞ্চলে গত এক সপ্তাহে আটটি গরু ইতিমধ্যে মারা গিয়েছে।
জানা যায়, এই রোগে হঠাৎ করেই গরুর গায়ে গোটা গোটা উঠতে শুরু করে। খামারিরা বলছেন, এই রোগে আক্রান্ত হলে গরু কিছু খেতে চায় না। কয়েকদিন পর গোটা ফেটে ঘা বের হয়। গরু হাটতেও পারে না। রোগের চিকিৎসাও ব্যয়বহুল। তবে এই রোগে আক্রান্ত হয়ে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মারা যায় বাছুর গরু।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৩০ মে) উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের লাল স্কুল এলাকা থেকে ফেরদৌস উপজেলা পশু হাসপাতালে এসেছেন তার বাছুর গরু নিয়ে। তাকে জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান, তার গরুর পক্স হয়েছে। তার গরুর রোগের ব্যাপারে তিনি জানেন না।
এছাড়া সরজমিনে উপজেলার উজানচর ও দৌলতদিয়া ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চল চর মাহিদা পুর, চর কর্নেশন, সৈদাল পাড়া, সিরাজ খার পাড়া, মজলিশপুর, দেবীপুর, আংকের শেখের পাড়াসহ এই অঞ্চল থেকে উপজেলা পশু হাসপাতালের দূরত্ব প্রায় আট দশ কিলোমিটার পথ। অধিকাংশ খামারি এতো দুর এসে চিকিৎসা সেবা নিতে অনাগ্রহী। এই সুযোগে স্থানীয় হাতুড়ে পশু ডাক্তাররা সুযোগ বুঝে খামারিদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নিয়ে চিকিৎসা করছে। অনভিজ্ঞ চিকিৎসার কারণে অধিকাংশ গরু মারা যাচ্ছে।
এতে আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে গরু পালনে জড়িত কৃষক বা খামারিরা চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। স্থানীয় গরু মালিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গরুর শরীরে প্রথমে জ্বর আসে, খাবার খায় না। নাক-মুখ দিয়ে লালা বের হয়, পা ফুলে যায়। গরুর সামনের দুই পায়ের মাঝে বুকের নিচে পানি জমে যায়। শরীরের বিভিন্ন স্থানে চামড়ায় গুটি গুটি হয়ে কয়েক দিনের মধ্যে ঘা হয়ে পচন ধরে। আস্তে আস্তে গরুর পুরা শরীরে ঘা ছড়িয়ে পড়ে।
এ রোগে আক্রান্ত হয়ে দৌলতদিয়া ৯ নং ওয়ার্ডেই আটটি গরু মারা গেছে গত এক সপ্তাহে। মারা যাওয়া গরুর মধ্যে অধিকাংশই বাছুর গরু। এ ছাড়া ওই এলাকায় আরো অনেক গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে।
উপজেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা রাশেদুজ্জামান মিয়া বলেন, এটি বাংলাদেশের একটা নতুন রোগ। ২০১৯ সালে প্রথম এই রোগ দেখা দেয়। ভাইরাস জনিত রোগ হওয়ার কারণে সিমটম অনুযায়ী চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়। এই রোগ সাধারণত ময়লা আবর্জনা থেকে হয়ে থাকে। এই রোগে আক্রান্ত হলে মশা মাছি থেকে আক্রান্ত গরুকে দুরে রাখতে হবে। তাছাড়া থাকার জায়গায় পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা থাকতে হবে।
এসআই/এসআর