For English Version
রবিবার ৬ অক্টোবর ২০২৪
হোম

কয়রার ৬ দিনেও ভাঙা বাঁধ আটকানো সম্ভব হয়নি, ভাসছে অর্ধশতাধিক পরিবার

Published : Friday, 31 May, 2024 at 2:02 PM Count : 226

খুলনাকয়রা উপজেলার দশহালিয়া গ্রামে ভেঙ্গে যাওয়া বেড়িবাঁধ গত এক সপ্তাহেও আকানো সম্ভব হয়নি। এত জোয়ারের পানিতে ভাসছে অর্ধশতাধিক পরিবার। ভেঙ্গে যাওয়া বাঁধ আটকাতে বুধবার ভোর থেকে বেলা ২ টা পর্যন্ত পাঁচ শতাধিক মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমের কাজ করে ভেঙে যাওয়া দুটি স্থানে রিং বাঁধ দিতে সক্ষম হয়। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতিতে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ও প্রয়োজনীয় মালা-মালের অভাবে কাজ সম্পন্ন করতে পারেননি বলে অভিযোগ উঠেছে। 

জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় রেমালের তান্ডবে ২৬ মে ভোররাতে দশহালিয়া গ্রামে পাউবোর প্রায় আধা কিলোমিটার জরাজীর্ণ বাঁধ উপচে লোকালয়ে পানি প্রবেশ শুরু হয়। তাৎক্ষণিক স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে স্থানীয় এলাকাবাসী বাঁধের উপর বস্তা দিয়ে পানি আটকানোর চেষ্টা করেন। ২৭ মে (সোমবার) দুপুরের জোয়ারে শেষ রক্ষা হয়নি বাঁধের। দশহালিয়ার দুইটি স্থানের ৭০ মিটার বাঁধ ভেঙে এলাকা প্লাবিত হয়। পরবর্তীতে স্থানীয় জনগণ স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বেলা ১১ টা পর্যন্ত বাঁধ নির্মাণের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। ২৯ মে (বুধবার) ভোর থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহায়তায় স্থানীয় জনগণ ফের বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করেন। বেলা ২ টা পর্যন্ত কাজ করে দুইটি পয়েন্টে রিং বাঁধ দিয়ে পানি আটকাতে সক্ষম হন। তবে যথা সময়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড  জিও ব্যাগ সহ প্রয়োজনীয় মালা-মাল সরবরাহ না করায় ভাঙ্গনে চাপান দিতে পারেননি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। চাপান দিতে না পারায়  জোয়ারের পানিতে ফের রিং বাঁধ ক্ষতিগ্রস্থ হয়। প্লাবিত হয় এলাকা।  প্লাবিত হয়ে অর্ধশতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। তাদের সুপেয় পানি ও খাবারের  সংকট দেখা দিয়েছে। অসুস্থদের চিকিৎসা সেবা মিলছে না। পানিবন্দ্বি মানুষ জোয়ারের সময় খাটের উপর অথবা বাঁধের উপর আশ্রয় নিয়েছে। অনেকের বসত ঘর নষ্ট হয়ে গেছে। তলিয়ে গেছে  কয়েক শ’ চিংড়ির ঘের । 

ইউপি সদস্য মোস্তফা কামাল বলেন, দশহালিয়ার ওই স্থানটি বারবার ভাঙছে। দুই বছর আগে পানি উন্নয়ন বোর্ড বাঁধ সংস্কার করলেও ফের ভেঙেছে। মূলত পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাজ হাত বদল হওয়ার কাজ মানসম্মত হয়না। যে কারনে বাঁধ বার বার ভেঙ্গে যায়। মূল ঠিকাদার থেকে  শ্রমিক সরদার পর্যন্ত কয়েক দফায় লভ্যাংশ রেখে হাত বদল হয়। ফলে বরাদ্দের সিংহ ভাগ টাকার কাজ হয়না। যতটুকু চওড়া এবং উঁচু করার কথা থাকে সেটাও করেন না। কাজের সাইটে কোন সাইনবোর্ডও দেওয়া  থাকে না। খুবই নিম্নমানের কাজ হাওয়ায় একই স্থান থেকে বারবার বাঁধ ভাঙ্গছে। 

মহারাজপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারারম্যান ও খুলনা জেলা পরিষদের সদস্য মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন লাভলু বলেন, বাঁধ না ভাঙা পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঘুম ভাঙ্গে না। তাদের দায়িত্ব অবহেলার কারণে এলাকার মানুষ পানিবন্দি। ছয় দিন হলো এখান থেকে জোয়ার-ভাটায় পানি উঠা-নামা করছে। এরপরেও পানি উন্নয়ন বোর্ডের চরম উদাসীনতা রয়েছে। বালু  ভর্তি জিও ব্যাগ দেওয়ার কথা থাকলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড সেটা না দেয়ায় পানি আটকানো সম্ভব হয়নি। 
খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী  প্রকৌশলী মোঃ জসিম উদ্দিন পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমরা জনগণের সাথে থেকেই সার্বক্ষণিক তদারকি করছি। বাঁধ নির্মাণের সকল সরঞ্জামাদি আমরা সরবরাহ করছি। শ্রমিকের মজুরিও পরিশোধ করা হবে। 

উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিএম তারিক উজ জামান বলেন, ভেঙ্গে যাওয়া বাঁধ আটকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা সার্বিক সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছেন। তাছাড়া ওই এলাকায় সুপেয় পানি ও স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে জনস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজ করছে।  

খুলনা-৬, (কয়রা-পাইকগাছা) আসনের সংসদ সদস্য মোঃ রশীদুজ্জামান বলেন, দশহালিয়ায় ভেঙ্গে যাওয়া বাঁধ আটকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তারা আশ্বস্থ্য করেছে দ্রুত সময়ের মধ্যে ভেঙ্গে যাওয়া বাঁধ আটকাতে কাজ শুরু করবেন। 

এসএম/এসআর


« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,