রাজশাহীর পুঠিয়ার বিড়ালদহ মাজারের সহকারী শিক্ষক মো. এনতাজ আলী একাই সঙ্গে তিন প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করছেন। অভিযোগ উঠেছে, তিনি ওই মাজারের কোরআনের শিক্ষক হয়েও একই সঙ্গে আরও দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন।
এনতাজ আলী কয়েক বছর ধরে বিধিবহির্ভুত এভাবে চাকরি করে আসছেন। তিনি বর্তমানে পুঠিয়া উপজেলা সদরে পুঠিয়া ইসলামীয়া মহিলা ডিগ্রি কলেজে প্রভাষক ও বানেশ্বর ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক এবং বিড়ালদহ মাজারে কোরআন শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন।
তার এভাবে চাকরির পেছনে উপজেলা প্রশাসন, শিক্ষা অফিসার, কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক এবং অধ্যক্ষের সহযোগিতা করার অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, পুঠিয়া ইসলামীয়া মহিলা ডিগ্রি কলেজে ইসলাম শিক্ষা (প্রভাষক) পদে ২০১৭ সাল থেকে চাকরি করে আসছেন। অপরদিকে ২০১১ সাল থেকে উপজেলার বানেশ্বর ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (ইসলাম শিক্ষা) পদে চাকরি বেতন-ভাতাসহ সুবিধা ভোগ করে আসছেন। এছাড়া, বিড়ালদহ মাজারে কোরআন শিক্ষক হিসেবে বেতন-ভাতাও ভোগ করছেন।
বিধি মোতাবেক পূর্বের চাকরি হতে অব্যাহতি দিয়ে নতুন চাকরিতে যোগ-দান করার কথা থাকলেও তিনি এটি মানছেন না। এতে করে তিনি বিধি লঙ্ঘন করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক সংকট তৈরি করেছেন। যার ফলে স্কুল ও কলেজে পাঠদান কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে।
জানতে চাইলে শিক্ষক এনতাজ আলী বলেন, ইসলামীয়া মহিলা ডিগ্রি কলেজে বেতন করানোর জন্য তাকে এডহক নিয়োগ দিয়েছে। আমি সেখানে যাই না। এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষের সাথে কথা বলতে বলেন। তবে মাদ্রাসায় আমি কোরআন শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছি।
বানেশ্বর ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজাদ রহমান জানান, ২০১০ সাল থেকে আমাদের স্কুলের সহকারী শিক্ষক (ইসলাম শিক্ষা) পদে চাকরি করেন আসছেন এনতাজ আলী। নিয়ম মোতাবেক তিনি বেতন-ভাতা ভোগ করছেন। তবে তিনি নিয়ম মোতাবেক স্কুলে আসেন। আর অন্য কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে কিনা আমার জানা নাই।
পুঠিয়া ইসলামীয়া মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. শিহাব উদ্দিন জানান, আমার সঠিক মনে নাই। তবে ৬ থেকে ৭ বছর পূর্ব থেকে এনতাজ আলী ইসলাম শিক্ষা (প্রভাষক) পদে এডহকে চাকরি করে। কিন্তু তার এখনও এমপিও হয়নি। একই সাথে দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চাকরি করার বিষয়ে জানাতে চাইলে তিনি বলেন, বিধি মোতাবেক ফরমালিটি সিটে তার নামটি দেয়া হয়েছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার লায়লা আখতার জাহান জানান, বিষয়টি আমার জানা নাই। ওই শিক্ষক প্রথমে যেখানে চাকরি পেয়েছে সেটা ঠিক আছে। আর পরবর্তীতে কলেজে চাকরির বিষয়টি অবৈধ হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে পুঠিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও বিড়ালদহ মাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি একেএম নূর হোসেন নির্ঝর বলেন, এনতাজ আলী মাজার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। নিয়ম মোতাবেক সম্মানি ভাতা ভোগ করেন। এতে তো দোষের কিছু নাই। তবে তিনি অন্য প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন কিনা তা আমার জানা নেই।
আরএইচ/এমবি