For English Version
রবিবার ৬ অক্টোবর ২০২৪
হোম

মাটির নিচে ২০০ বছরের পুরাতন নৌকার সন্ধান

Published : Saturday, 11 May, 2024 at 3:33 PM Count : 432

ঝিনাইদহেমহেশপুর উপজেলার এসবিকে ইউনিয়নের বজরাপুর গ্রামে কাগমারি বাওড়ের কিনারায় মাটির নীচ থেকে একটি ২০০ বছর পূর্বের পুরাতন পাল তোলা নৌকার সন্ধান মিলেছে। বিষয়টি এলাকায় চাউর হলে নৌকাটি দেখার জন্য উৎসুক জনতার ভিড় বাড়ছে বাওড় পাড়ে। 

নৌকাটি মাটির চার ফুট নীচ থেকে খনন করে পাওয়া গেছে। বিশাল আকৃতির এই নৌকা নিয়ে প্রতিদিন কৌতূহলী মানুষের ভিড় বাড়ছে উপজেলার বজরাপুর গ্রামের কাগমারির বাওড় পাড়ে।

গ্রামবাসী সূত্রে জানাযায়, বজরাপুর গ্রামের নজের আলীর ছেলে মনছের আলী তিন দিন আগে বজরাপুর বাঁওড় থেকে ধান ক্ষেতে পানি দেওয়ার জন্য সেচ খাল খনন করছিলেন। খাল খুড়তে গিয়ে কোদালের মাথায় নৌকার কিছু অংশ উঠে আসে। এ খবর প্রচার হয়ে পড়লে গ্রামের মানুষ মিলে নৌকার সন্ধানে খনন শুরু করতে থাকেন। তিন দিন ধরে খননের পর বৃহস্পতিবার পুরো নৌকার আকৃতি খুঁজে পান।

স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য পূর্ণিমা রানী জানান, নৌকার প্রতিশব্দ হচ্ছে ‘বজরা’। এই গ্রামের নামও বজরাপুর। হয়তো কোনো একসময় এই গ্রামের মানুষের চলাচলের একমাত্র সম্বল ছিল নৌকা। সেই নাম অনুসারে গ্রামটির নামকরণ করা হয়েছে ‘বজরাপুর’। 
তিনি জানান, খবর শুনে আমিও বজরাপুরের বাঁওড় এলাকার হালদার পাড়ায় গিয়ে বৃহৎ নৌকাটি দেখে এসেছি। এটি সংরক্ষণের দাবি জানাই।

খনন কাজে যুক্ত বজরাপুর গ্রামের ইসমাইল মল্লিক জানান, নৌকাটি প্রায় ১০০ ফুট লম্বা ও চওড়া ২০ ফুট হবে। নৌকার বেশির ভাগ অংশ বাওড়ের মধ্যে ঢুকে আছে। বিশালাকৃতির এই নৌকাটি শাল কাঠ দিয়ে তৈরি পারে।

বজরাপুর গ্রামের আমজাদ হোসেন জানান, গ্রামের কৃষক মনছের আলীর জমিতে পাওয়া নৌকাটি বহুকালের পুরাতন। কাঠগুলো পঁচে নষ্ট হয়ে গেছে। লম্বা কাঠগুলো কিছুটা ভালো আছে। মাটির চার ফুট নিচে এই নৌকাটি পাওয়া গেছে। নৌকাটি দেখতে প্রতিদিন শত শত মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন। তবে এখনো প্রশাসনের লোকজন ঘটনাস্থলে আসেনি।

জানা যায়, বজরা অধিক ওজন বহন করার উপযোগী বড় ধরনের নৌকার সাধারণ নাম। খ্রিষ্টীয় ঊনবিংশ শতাব্দীতে ভারতবর্ষে ইউরোপীয় এবং স্থানীয় ধনাঢ্য ব্যক্তিরা এই ধরনের নৌকা ব্যবহার করত নৌবিহারের জন্য। এ নৌকার দুই-তৃতীয়াংশ জায়গা জুড়ে থাকত ঘুমানো বা বিশ্রামের কক্ষ। ঘরবাড়ির মতো এসব কক্ষে থাকত জানালা। সাধারণ ভাবে যাত্রীর ধারণ ক্ষমতা থাকত ১০ থেকে ১২ জন। এর ভেতরে মাঝি থাকত চার জন। রান্না ও অন্যান্য কাজের জন্য চাকর থাকতো দু’জন।

স্থানীয় শিক্ষার্থী পূজা রানী জানান, বজরাপুর গ্রাম একটি প্রাচীন জনপদ। এই গ্রামটি কপোতাক্ষ নদের সংযোগস্থলে গড়ে ওঠে। গ্রামের বেশির ভাগ মানুষ জমিদার ও আধুনিক জীবনযাপনে অভ্যস্ত ছিল। ফলে এই নৌকাটি বজরাপুর গ্রামের নামকরণ ও গ্রামের মানুষের জীবনযাপনের সাক্ষ্য বহন করে। 

বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া পূজা রানী নৌকাটি সংরক্ষণের দাবি জানিয়ে গবেষণা কাজে লাগানো যায় কি না সে দাবি করেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অনুপ দাস জানান, পুরানো নৌকা পাওয়ার বিষয়টি তিনি প্রত্নতত্ত অধিদপ্তরকে জানাবেন, যাতে তারা ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।

আরইউ/এমএ

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,