উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ১০ দিনের জন্য লাইসেন্সধারীকে অস্ত্রসহ চলাচল, অস্ত্র বহন ও প্রদর্শনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
এক গনবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া সেলের এসআই মো. তানজিল।
তিনি জানান, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন প্রভাবমুক্ত, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে বরিশাল মেট্রোপলিটন এলাকায় পুলিশ কমিশনার জিহাদুল কবির-বিপিএম, পিপিএম গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ অধ্যাদেশ /২০০৬ এর ২৯ ধারার ক্ষমতাবলে মেট্রোপলিটন এলাকার মধ্যে ৬ মে থেকে ১৫ মে পর্যন্ত অস্ত্রের লাইসেন্সধারীগণের অস্ত্রসহ চলাচল, অস্ত্র বহন ও প্রদর্শনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে এ আদেশ নির্বাচনের কাজে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার সাথে সম্পৃক্ত সকল বাহিনীর সদস্য, বিভিন্ন সরকারী, আধা সরকারী ও বেসরকারী দপ্তর এবং আর্থিক ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানসহ স্থাপনা সমুহে নিয়োজিত নিরাপত্তা প্রহরীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
অপরদিকে আরেক গণবিজ্ঞপ্তিতে বরিশাল মেট্রোপলিটনের আওতাধীন নির্বাচনী এলাকায় ৬ মে মধ্যরাত ১২ টা থেকে ভোট গ্রহণের পরদিন মধ্যরাত পর্যন্ত মোটরসাইকেল চলাচলের ওপর এবং ৭ মে মধ্যরাত ১২ টা থেকে ভোটগ্রহণের দিন মধ্যরাত ১২ টা পর্যন্ত টেক্সিক্যাব, মাইক্রোবাস, পিকআপ, ট্রাক, লঞ্চ ও নির্দিষ্ট রুটে চলাচলকারী ব্যবতিত ইঞ্জিন চালিত বোটসহ অন্যান্য যানবাহন চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরো করা হয়েছে।
তবে এ নিষেধাজ্ঞা নির্বাচনে প্রার্থী, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসন ও অনুমতি প্রাপ্ত পর্যবেক্ষক এবং নির্বাচনী এজেন্টদের জন্য উপরিউক্ত নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না। তবে পর্যবেক্ষক ও পোলিং এজেন্টদের যানবাহনে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রদত্ত স্টিকার ব্যবহার করতে হবে।
এছাড়া জাতীয় হাইওয়ে সমূহে এবং গুরুত্বপূর্ণ কতিপয় সংযোগ সড়কের ক্ষেত্রেও এই নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না। তাছাড়া নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত দেশী/বিদেশী সাংবাদিক (পরিচয়পত্র থাকতে হবে) নির্বাচন পর্যবেক্ষক এবং কতিপয় জরুরী কাজ যেমন-এ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, বিদ্যুৎ গ্যাস, ডাক, টেলিযোগাযোগ ইত্যাদি কার্যক্রমে ব্যবহারের জন্য উল্লিখিত যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না।
এদিকে প্রচার-প্রচারণা শেষে এখন বরিশাল সদর ও বাকেরগঞ্জ উপজেলার ইউনিয়নগুলো আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তাদের নজরদারী ও টহল বৃদ্ধি করেছে। এরইমধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় উভয় উপজেলার নির্বাচনী এলাকায় বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
জানা গেছে, বরিশাল সদর উপজেলার ৬৮ কেন্দ্রের মধ্যে ৪৭ টিকে গুরুত্বপূর্ণের তালিকায় রেখেছে মেট্রোপলিটন পুলিশ। ভোটের দিন ওই সকল কেন্দ্রে বুথ সংখ্যার ওপর ভিত্তি করে নিরাপত্তায় পুলিশ, আনসার, ভিডিপি ও গ্রামপুলিশের ১৮ থেকে ১৯ জন সদস্য মোতায়েন করা হবে। সবমিলিয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন এলাকায় নির্বাচনে প্রায় ১২ শত পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে।
অপরদিকে বাকেরগঞ্জ উপজেলার ১১৩ ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৭৩টি গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে জেলা পুলিশ। এ উপজেলায় ১৯ জন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও ৮১৪ জন পুলিশ সদস্যসহ অন্যান্য বাহিনীর সদস্যবৃন্দ মোতায়েন থাকবে।
এদিকে সিনিয়র জেলা রিটার্নিং অফিসার ওয়াহিদুজ্জামান মুন্সী বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। নির্বাচন কেন্দ্রীক সহিংসতা রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ ক্ষমতা প্রয়োগ করবেন।
জাল ভোট প্রদানের কোন সুযোগ থাকবে না জানিয়ে তিনি বলেন, ভোট কক্ষে কোন ধরণের অপ্রিতীকর ঘটনা পরিলক্ষিত হলে পোলিং এজেন্টরা সাথে সাথে প্রিজাইডিং অফিসারকে জানাবেন। তিনি তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নিবেন। শতভাগ অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোটগ্রহন অনুষ্ঠিত হবে কোন প্রার্থীর প্রভাব বিস্তারের সুযোগ থাকবে না।
এমএন/এসআর