দিনাজপুরের উপর দিয়ে মাঝারি তাপ প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। প্রচন্ড তাপদাহে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে দিনাজপুরের জনজীবন। গরমে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে মানুষ।
অপরদিকে এটি চলতি মৌসুমে দিনাজপুর জেলার সর্কচ্চো তাপমাত্রা বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে।
মঙ্গলবার দিনাজপুরে ৩৯.১ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্র বিরাজ করছে । তবে অ্যাকুওয়েদার নামে একটি ওয়েবসাইট দেখাচ্ছে দিনাজপুরে ৪০ ডিগ্রী তাপমাত্রা বিরাজ করছে।
গত ১৫ দিন ধরে দেশের অধিকাংশ এলাকার মত দিনাজপুরের বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ। আজ তা মাঝারি তাপ প্রবাহে রুপ নিয়েছে। এটি এই মৌসুমের সর্বচ্চো তাপমাত্রা বলে জানা গেছে। গরম আর প্রখর রোদে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবন যাত্রা।
দিনাজপুরে তাপমাত্রা ৩৫ থেকে সাড়ে ৩৯ ডিগ্রী সেলসিয়াসে ওঠানামা করছে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে বাড়ছে গরমের তীব্রতা। দুর্ভোগে পড়েছে শ্রমজীবি মানুষ।
তীব্র গরমকে আরো অসহনীয় করে তুলছে ঘনঘন লোড শেডিং। চাহিদার তুলনায় কম বিদ্যুৎ সরবরাহের কথা স্বীকারও করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে তারা বলছেন, শিগরিরই স্বাভাবিক হয়ে আসবে পরিস্থিতি।
দিনাজপুর শহরের বুটি বাবুর মোড়ে ইসমাইল হোসেন (১০) নামে এক শিশুকে রাস্তার ধারে টিউবয়েল চালিয়ে পানি ঝাপটা দিতে দেখা যায়। সে জানায় একটি দোকানে শ্রমিকের কাজ করে সে। কিন্তু গরমে টিকতে না পেরে বারবার এসে পানি দিয়ে মুখ হাত ধুয়ে যাচ্ছে।
শহরের সদর হাসাপাতাল মোড়ে ডাবের দোকান গুলোতে ডাব বিক্রি বেড়ে গেছে । ডাব বিক্রেতা সামিউল ইসলাম বলেন, সকাল থেকে ১৫০টি ডাব বিক্রি করেছেন। তিনি প্রতিটি ডাব ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি করছেন।
দিনাজপুর গোর-এ শহীদ ময়দানে আখের রস খেতে আসা শহরের চাউলিয়াপট্রির ইউসুফ আলী বলেন, গরমে টিকা যাচ্ছেনা। তাপমাত্র এতো বেশী রাস্তায় বের হলে হাত মুখ জ্বলছে। একটু প্রশান্তির আশায় এখানে বরফ দিয়ে আখের রস বিক্রি হয় তাই খেতে এসেছি।
গোর এ শহীদ ময়দানে গাছ তোরায় ইজিবাইক ও অটো চালকদের বিশ্রাম নিতে দেখা যায়। তাদের মধ্যে হাসানাত আলী নামে এক ইজিবাইক চালক বলেন, তাপদাহে রাস্তার রউপরে টিকে থাকা যাচ্ছেনা। তাই ক্লান্ত হয়ে এখানে গাছ তলায় এসে বিশ্রাম নিচ্ছি। তা ছাড়াও শহরে মানুষ কম গরমের কারণে মানুষ রাস্তায় বের হচ্ছে কম। তাই ভাড়াও নেই।
এদিকে বাজারে তরমুজ ও বেল ও লেবুর দাম বেড়ে গেছে। তরমুজ এক কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়, বেল ৫০ থেকে ৮০ টাকা এবং লেবু বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা হালি।
আবহাওয়া দফতর বলছে, তাপ প্রবাহ থাকবে আরো কিছুদিন। দিনাজপুরে বৃষ্টি পাতের কোন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছেনা।
গরমে শিশু, বৃদ্ধ ও শ্রমজীবী মানুষেরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। চাপ বাড়ছে হাসপাতাল গুলোতে।
বেশি করে বিশুদ্ধ পানি, খাবার স্যালাইনসহ তরল খাবার গ্রহণের পরামর্শ চিকিৎসকের। আর একটু প্রশান্তির জন্যে সাধারণ মানুষ চাইছেন নিরবচ্ছিন বিদ্যুৎ সরবরাহ।
দিনাজপুর আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তোফাজ্জুর রহমান জানান, গত ১৫ দিন ধরে দিনাজপুরে তাপমাত্রা ৩৫ থেকে ৩৯ ডিগ্রী সেলসিয়াসে উঠা নামা করছে। সোমবার দিনাজপুরে বিকাল ৩ টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৩৭.২ ডিগ্রী সেলসিয়াস। আজ মঙ্গলবার দিনাজপুরে সর্বচ্চো তাপমাত্রা ৩৯.১ ডিগ্রী সেলসিয়াস বিরাজ করছে । বাতাসের আদ্রতা ২১ শতাংশ । বাতাসের গতি ৯কিলোমিটার। বৃষ্টির কোন সম্ভাবনা নেই। দিনাজপুরের উপর দিয়ে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।
এদিকে দিনাজপুর সিবিল সার্জন অফিস থেকে ও দিনাজপুর পৌরসভার পক্ষ থেকে মানুষকে সচেতন ও সাবধান করতে মাইকিং করা হচ্ছে। প্রয়োজন ছাড়া মানুষকে রাস্তায় বের হতে নিষেধ করা হচ্ছে। তরল ও পানি জাতীয় বিশুদ্ধ কাবার খেতে বলা হচ্ছে। শ্রমিকদের কাজের মাঝে মাঝে বিশ্রাম নেয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে এই মাইকং এ।
এএইচ/এমবি