For English Version
রবিবার ৬ অক্টোবর ২০২৪
হোম

গুরুদাসপুরে রসুনের মধ্যে ক্ষিরা চাষে বাজিমাত

Published : Friday, 29 March, 2024 at 11:58 AM Count : 161



চলতি মৌসুমে নাটোরেগুরুদাসপুরে রসুন এবং ক্ষিরার বাম্পার ফলন ও ভালো দাম পেয়ে মহা খুসি এই এলাকার কৃষকেরা। খরতাপ আর রমজান মাসকে কেন্দ্র করে দেশ জুড়ে রসুন এবং ক্ষিরার চাহিদা থাকায় জমে উঠেছে বেঁচা কেনা। এতে লাভবান হওয়ায় গুরুদাসপুরের কৃষকদের মুখে হাসি ফুটেছে।

চলনবিল অধ্যুসিত গুরুদাসপুরের মাটি অনেক উর্বর। জমির শ্রেণী ভেদে বিশেষ করে উচ্চ এলাকার জমিতে রসুনের মধ্যেই সাথী ফসল হিসাবে ক্ষিরা বাঙ্গি আর তরমুজের বীজ রোপন করা হয়। রসুন উঠলেই ক্ষিরা বাঙ্গি আর তরমুজের গুটি আসা শুরু হয়। তার মধ্যে ক্ষিরাটা এক থেকে দুই  সপ্তাহের মধ্যেই বিক্রির জন্য প্রস্তুত হয়ে যায়। তবে বাঙ্গী আর তরমুজে কিছুটা বেশী সময় লাগে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, গুরুদাসপুরউপজেলার ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সাথী ফসলের চাষ  হয় ধারাবারিষা, নাজিরপুর,মশিন্দা ইউনিয়ন ও পৌরএলাকায়। এই অঞ্চলের মাটি বেলে দোআঁশ ও উচ্চ হওয়ায় রসুনসহ সাথী ফসল চাষের জন্য বিশেষ উপযোগী। ধারাবারিষা ইউনিয়নের  চরকাদহ, চলনালী, পাঁচশিশা সিধুলী,সোনাবাজু, দাদুয়া উদবাড়িয়া ও তালবাড়িয়া গ্রামের জমিগুলোতে বাণিজ্যিক ভাবে চাষ হয়েছে রসুন। মাঠের পর মাঠজুড়ে শোভা পাচ্ছে এসব সাথী ফসল। ফলনও ভালো সাথে ন্যায্যমুল্যও পাচ্ছেন কৃষকরা। অল্পপুঁজি ও শ্রমে অধিক লাভবান হওয়ায় প্রতি বছরই ওই সব এলাকায় বাড়ছে রসুনের পাশাপশি সাথী ফসলেরও।

সরেজ মিনে গিয়ে দেখাযায়, বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে মসলাজাতীয় রসুনের মধ্যে সাথী ফসল  ক্ষিরা তরমুজ আর  বাঙ্গি শোভা পাচ্ছে। মাটির ওপর ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে রসুন। সেই সাথে গাছের সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে খিরা। অনেক জমিতে আবার রসুনের মধ্যে বাঙ্গি তরমুজের ছোট ছোট গুটি। পাশেই গাঁদা করে রাখা হয়েছে রসুন আর খিরার স্তুপ। এই অঞ্চলে উৎপাদিত খিরার রং উজ্জ্বল হওয়ায় দেখতে ও খেতে সুস্বাদু হয়। রসুনের গুটিও বড় এজন্য এই মসলাকে চলনবিলের সাদা সোনা বলা হয়ে থাকে। এ ফসলগুলো স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে নারায়নগঞ্জ, সিলেট, চট্রগ্রাম ও ঢাকাসহ দেশের দেশের বিভিন্ন বিভাগ ও জেলায় ফরিয়া মহাজন ও পাইকাররা কিনে নিয়ে বিক্রি করছেন দেশের নানা প্রান্তে।
 
নাজিরপুর ইউনিয়নের গোপিনাথপুর গ্রামের কৃষক মোজাম আলী জানান, চলতি বছর তিনি চার বিঘা জমিতে রসুন ও খিরার চাষ করেছিলেন। ৪বিঘা জমিতে তার ২লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়েছিলো। আশানুরূপ ফলন আর ভালো দাম পাওয়ায় গড়ে সে ৪বিঘা জমিতে এক থেকে দেড় লক্ষাধিক টাকার শুধু খিরাই বিক্রি করেছেন। রসুন এখনো বিক্রি করেন নি। বেশি দামের আশায় বাসায় রেখে দিয়েছেন। তবে এখন বিক্রি করলে প্রায় দ্বিগুন লাভ হবে।

নরসিংদী থেকে আসা পাইকারি রসুন ব্যবসায়ী আব্দুল বাতেন বলেন, এই অঞ্চলের খিরা খেতে সুস্বাদু ও দেখতে সুন্দর হওয়ায় বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এক সপ্তাহ আগে খিরার মণ ছিলো ২৫শ টাকা এখন একটু কম ১৮শ থেকে ২২শ টাকা। 

ঢাকা থেকে আসা রসুনের বেপারী রতন কুমার কুন্ডু বলেন, রসুনের বাজার শ্রেণী ভেদে কাঁচা-পাকা ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা প্রতি মণ বর্তমান বাজার মুল্য। তবে বাজারে চাহিদা থাকার কারণে দাম পর্যায় ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

বানিজ্য নগরী চাঁচকৈড় হাটের মের্সাস শাওন টেড্রার্স এর স্বত্বাধিকারী বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী মোঃ আব্দুস সালাম জানান, এখানে প্রতি সপ্তাহে শনি ও মঙ্গলবার হাট বসে প্রতি হাটে এখন ১৫ থেকে ২০টি ট্রাক এবং ভরা মৌসুমে ৩০থেকে ৪০টি ট্রাক লোড হয়ে দেশের নানা প্রান্তে চলে যায়। এছাড়া বাজারেও কেনা বেঁচা হয়ে থাকে। প্রতি হাটে বর্তমানে প্রায় দুই কোটি টাকার উপরে রসুন ক্রয় বিক্রয় হয়।

গুরুদাসপুরউপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হারুনর রশিদ বলেন, গুরুদাসপুরে গত বছর রসুনের চাষ হয়েছিলো ৮ হাজার ৫শত ৫০ হেক্টর জমিতে। এবছর চাষ হয়েছে ৫হাজার ২শত ৭৫ হেক্টর বিঘা। কৃষি আধুনিকায়নে আমরা সার্বক্ষণিক মাঠ পরিদর্শনসহ কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। পাশাপশি রসুনের সাথে সাথী ফসল খিরা, বাঙ্গি ও তরমুজ চাষে কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও উন্নত জাতের বীজ সরবরাহসহ সকল সুবিধা দিয়ে আসছি। গত দুই বছরে ফলন ও ন্যায্য মুল্য পেয়ে দারুণ খুসি এলাকার কৃষকেরা।

এমএএম/এসআর

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,