মেহেরপুরে বিবাহ বিচ্ছেদের হার উদ্বেগজনক ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে
Published : Wednesday, 6 March, 2024 at 10:57 AM Count : 338
বলা যায় সারাদেশে তালাকের হার বাড়ছে ভয়াবহ ভাবে। দেশের সবচেয়ে ছোট জেলা মেহেরপুর। এখানেও লেগেছে তালাকের মত বিচ্ছিন্ন ঘটনার বাতাস। এই ছোট জেলাতে প্রতি সাড়ে চার ঘন্টায় ঘটছে একটি তালাক বা বিবাহ বিচ্ছেদ। গেল অর্থবছরে এই জেলাতে তালাক হয়েছে প্রতিদিন গড়ে পাঁচটি করে।
মেহেরপুর জেলা নিবন্ধকের অফিসের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে জেলাতে মোট দুই হাজার একশত বিবাহের পাশাপাশি এক হাজার ১২৯টি তালাক নিবন্ধিত হয়েছে। এই চিত্রটি উদ্বেগজনক।
বিভিন্ন ম্যারেজ রেজিষ্ট্রারের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, বর্তমানে তালাকের কারণ হিসেবে যৌতুক ও শারিরীক নির্যাতন তেমন একটা নেই। গত ২/৩ বছরে তালাকনামায় যে কারণগুলো দেখানো হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হলো সোস্যাল মিডিয়া যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও টিকটকের অতিরিক্ত আসক্তি, স্ত্রীর পিতা-মাতার স্বামীর পরিবারে বিভিন্ন সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত অযাচিত হস্তক্ষেপের প্রবণতা, সঠিক ভাবে স্ত্রীর ভরণ পোষণ করতে না পারা, যৌন অক্ষমতা এবং স্বামী ও স্ত্রী উভয়ের অনৈতিক পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়া।
জেলা নিবন্ধক অফিসের তথ্যমতে সদর উপজেলায় সাত জন, মুজিবনগর উপজেলায় চার জন এবং গাংনী উপজেলায় ১১ জন সরকার নিবন্ধিত ম্যারিজ রেজিষ্ট্রার আছে। তাদের মাধ্যমে ২০২২-২৩ অর্থবছরে সদর উপজেলায় ৮০২টি বিবাহের বিপরীতে ৯৭৪টি তালাক, মুজিবনগর উপলোয় ৫৫২টি বিবাহের বিপরীতে ২৩৩টি বিচ্ছেদ এবং গাংনী উজেলায় ৭৪৬টি বিবাহের বিপরীতে ৭২২টি তালাক নিবন্ধিত হয়। পাশাপাশি রয়েছে প্রচুর অনিবন্ধিত বাল্যবিবাহ এবং তালাক।
এ ব্যাপারে কথা বললে বিশিষ্ট সমাজকর্মী ও হেলপ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক জয়িতা দিলারা জাহান বলেন, মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগের বিষয়গুলোর যথেচ্ছা ব্যবহার, অবাধ ও নির্বিঘ্ন যোগাযোগের ফলে পরকীয়ার হার বেড়ে যাচ্ছে। ফলশ্রুতিতে লাগমহীন ভাবে বেড়ে যাচ্ছে বিবাহ বিচ্ছেদের মত ঘৃণ্য কর্মকাণ্ড।
প্রতিকার হিসেবে তিনি বলেন, এন্টারটেইমেন্টের নামে মোবাইল ফোনে যেসব অনৈতিক অশ্লীল বিষয় দেখানো হয় তা আমাদের দেশে বন্ধ করতে হবে। পাশাপাশি ধর্মীয় মূল্যবোধ জাগ্রত করতে হবে। ধর্মীয় অনুশাসন ছাড়া এর থেকে নিস্কৃতি পাওয়া প্রায় অসম্ভব।
-এমআর/এমএ