শিক্ষার্থীকে গুলি, অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা
Published : Tuesday, 5 March, 2024 at 12:47 PM Count : 153
সিরাজগঞ্জের সরকারি শহীদ এম. মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আরাফাত আমিন তমালকে গুলি করার ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক ডা. রায়হান শরিফের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সিরাজগঞ্জ সদর থানায় মামলাটি করেন তমালের বাবা সেনাবাহিনীর অবসর প্রাপ্ত সার্জেন্ট আবদুল্লাহ আল আমিন। তিনি বগুড়া উপজেলা সদরের ধানসিঁড়ি নাটাইল গ্রামের বাসিন্দা।
এছাড়াও তার কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া পিস্তলটি লাইসেন্সবিহীন (অবৈধ) বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সোমবার(৪মার্চ) রাত ১২টার দিকে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম জানান, মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা ও তমালের বাবা থানায় এসে রাত সাড়ে ১১টার দিকে শিক্ষক ডা. রায়হান শরীফের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা ও অস্ত্র আইনে মামলা করেছেন।
অভিযুক্ত শিক্ষক জেলা শহরের বিএ কলেজ রোডের বাসিন্দা এবং সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ড. আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিসিএস ৩৯ ব্যাচের চিকিৎসক মেডিকেল কলেজের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের প্রভাষক রায়হান শরিফকে এর আগেই আটক করে পুলিশ। আটকের আগে (সোমবার) বিকেল সাড়ে তিনটা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত মেডিকেল কলেজে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয় তাকে।
হাসপাতালের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম জানান, পকেটে থাকা মোবাইল ভেদ করে পিস্তলের গুলি শিক্ষার্থী তমালের তলপেটের নিচে বিদ্ধ হয়। পরে বিদ্ধ গুলিটি তমালের শরীর থেকে বের করা হয়। তমাল এখন শঙ্কামুক্ত।
সোমবার(৪মার্চ) ফরেনসিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের সিডিউল বহির্ভূতক্লাসে মৌখিক পরীক্ষ ও পাঠদান নিয়ে বাগবিতন্ডার জেরে পিস্তল দিয়ে শিক্ষার্থী তমালকে বিকেল তিনটায় গুলি করেন চিকিৎসক রায়হান শরীফ। ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের হাতে লাঞ্ছিত হন তিনি। চিকিৎসক রায়হানের অপসারণ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের রোষানল থেকে বাঁচাতে কলেজের ভিতর পুলিশ হেফাজতে রাখা হয় তাকে।
একটি সুত্র জানায়, চিকিৎসক প্রভাষক রায়হানের বিরুদ্ধে এর আগে নারী শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানীর অভিযোগ উঠে। তিনি কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের প্রভাষক হলেও গায়ের জোরে ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের শিক্ষার্থীদের অনির্ধারিত ক্লাস নিতেন। তিনি প্রায়ই দিনই পিস্তল নিয়ে ক্যাম্পাস ও ক্লাসে আসায় শিক্ষার্থীরা ভয়ে থাকতেন। তার বদলির জন্য অধ্যক্ষের কার্যালয় থেকে একাধিকবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পত্র পাঠানো হলেও কোন কাজ হয়নি।
এদিকে এ ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্তকমিটি গঠন করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. বায়জীদ খুরশীদ রিয়াজকে আহবায়ক করে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। সোমবার (৪ মার্চ) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব দূর-রে শাহওয়াজ স্বক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানা যায়।
এ কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা) অধ্যাপক মো. মহিউদ্দিন মাতুব্বর, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ উপসচিব মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন।
কমিটিকে আগামী তিন দিন কার্যদিবসের মধ্যে বিস্তরিত তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তদন্ত কমিটির আহবায়ক অধ্যাপক বায়জীদ খুরশীদ রিয়াজ বলেন, মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নির্দেশে কালকেই (৪মার্চ) এই ঘটনা তদন্তে কমিটি করা হয়েছে। আমরা নির্দিষ্ট সময়ে প্রতিবেদন প্রদান করবো।
এবি/এসআর