'ঢাকা ঘোষণা'র মধ্য দিয়ে West Asian Regional Conference of International Council for Education of People with Visual Impairment (ICEVI) পশ্চিম এশিয়া আঞ্চলিক সম্মেলনের সমাপ্তি হয়েছে।
গত ২৮ ও ২৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনের মাধ্যমে আঞ্চলিক প্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা, আইনজীবী এবং অংশীদারগণ প্রতিবন্ধীবান্ধব শিক্ষা বিষয়ক জটিল সমস্যাগুলোর উপর আলোচনা করেন।
ঢাকা ঘোষণায় মানসম্পন্ন শিক্ষায় প্রবেশের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের বাধাসমূহ নির্দেশিত হয়েছে এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষাকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।
আইসিইভিআই পশ্চিম এশিয়া আঞ্চলিক সম্মেলন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ এবং অনুশীলনকারীদের মধ্যে সংলাপ, সহযোগিতা এবং জ্ঞান চর্চা বৃদ্ধির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রচার মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। এই সম্মেলনটি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য সুযোগ বাড়াতে চায়, উদ্ভাবনী কৌশল খুঁজে বের করে, প্রযুক্তির অগ্রগতি ঘটায় এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা প্রচারের লক্ষ্যে নীতি কাঠামো নিয়ে কাজ করে।
সম্মেলনে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের শিক্ষাগত অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন চাহিদা মোকাবেলায় সহায়ক প্রযুক্তি, যোগাযোগ এবং শেখার কৌশলের অগ্রগতি সম্পর্কে সবিস্তার আলোচনা করা হয়েছে, পাশাপাশি নীতি এবং আইনী ব্যবস্থা নিয়েও কথা হয়েছে।
আইসিইভিআই বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ খন্দকার জহুরুল আলম বলেন, 'বাংলাদেশে তথা ঢাকায় আইসিইভিআই পশ্চিম এশিয়া আঞ্চলিক সম্মেলনের আয়োজন করতে পেরে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত ও সম্মানিত বোধ করছি৷ অংশীদারদের একত্রিত হওয়ার, অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেওয়ার মধ্য দিয়ে একে অপরকে জানা এবং দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা নিয়ে আলোচনা করার জন্য এই সম্মেলনটি একটি অনন্য মাধ্যম হিসেবে কাজ করেছে।'
সম্মেলনে মূল বক্তব্য, পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন, কর্মশালা এবং সুচিন্তন নেতাদের নেতৃত্বে প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। পাশাপাশি, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার সংক্রান্ত জাতিসংঘ কমিটির সভাপতি গারট্রুড ওফোরিওয়া ফেফোমের ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার এবং শিক্ষার উপর বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গি’ নিয়ে একটি বিশেষ ভিডিও বার্তা আলোচনাকে আরও সমৃদ্ধ করেছে।
অনুষ্ঠানে যোগদানকারী আইসিইভিআই-এর গ্লোবাল প্রেসিডেন্ট ড. ফ্রান্সেস জেন্টেল উল্লেখ করেন, ঢাকা ঘোষণাটি এই সম্মেলনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি এবং তিনি আইসিইভিআই-এর কর্মরত দেশগুলোতে তা বাস্তবায়নের জন্য সুপারিশগুলি বিবেচনায় নেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
এনজিও অ্যাফেয়ার্স ব্যুরোর মহাপরিচালক মো. সাইদুর রহমান, শিক্ষাবিদ ও ক্যাম্পেইনের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে. চৌধুরী, সাইটসেভার্স বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর অমৃতা রেজিনা রোজারিও, সেভ দ্য চিলড্রেন বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর সুমন সেনগুপ্ত, SENSE International India -এর নির্বাহী পরিচালক অখিল পাল, সিডিডি-এর নির্বাহী পরিচালক এএইচএম নোমান খানসহ অন্যরা সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
সেখানে বক্তা এবং আলোচকবৃন্দ সরকারি/বেসরকারি ও সর্বোপরি আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং সম্মিলিত পদক্ষেপ গ্রহণের কথা তুলে ধরেন, “শিক্ষার মাধ্যমে আমরা এমন একটি বিশ্ব তৈরি করতে পারি যেখানে প্রতিটি ব্যক্তির মানসম্পন্ন শিক্ষার সমান সুযোগ রয়েছে। সম্মেলনের একটি আকর্ষণীয় দিক ছিল, তা হলো সম্মেলনের সকল বৈজ্ঞানিক এবং পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনসমূহ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের দ্বারা পরিচালিত হয়েছিল যা বাংলাদেশ এবং পশ্চিম এশিয়া অঞ্চলের অন্যান্য অনেক দেশের প্রতিনিধিদের কাছে তাদের দক্ষতা প্রদর্শন করে।
আইসিইভিআই পশ্চিম এশিয়া আঞ্চলিক সম্মেলন আইসিইভিআই-এর অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা প্রচারের প্রতিশ্রুতি ও সম্ভাবনাময় ভবিষ্যতের জন্য দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ক্ষমতায়নের উপর জোর দেয়। শিক্ষার অধিকারে কেউ যেন পিছিয়ে না থাকে তা নিশ্চিত করার জন্য অংশগ্রহণকারীরা উদ্ভাবনী সমাধান খুঁজে বের করার চেষ্টা করে।
-এমএ