For English Version
রবিবার ৬ অক্টোবর ২০২৪
হোম

রাজশাহীতে পদ্মার বিস্তীর্ণ চরে ফসলের সমারোহ

Published : Thursday, 15 February, 2024 at 7:12 PM Count : 228

পদ্মা নদী রাজশাহী মহানগরী ও জেলার চার উপজেলার সীমানা ছুয়ে বয়ে গেছে। মহানগরীসহ চারঘাট, বাঘা, পবা ও গোদাগাড়ী উপজেলার বিস্তীর্ণ চরে বছরজুড়ে আবাদ হয় নানা ধরনের ফসল।

কৃষি অফিস ও কৃষকরা বলছেন, চরের জমি তুলনামূলক বেশি উর্বব। চাষাবাদে খরচ কম। তবে যে সব চরের জমিতে পানি উঠে না সেগুলোতে ফসল চাষ তুলনামূলক খরচ বেশি হয়।

জানা গেছে, গোদাগাড়ী উপজেলার পদ্মাচর চরআষারিয়াদহ ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি আবাদযোগ্য জমি রয়েছে। তুলনামূলক কম জমি রয়েছে বাঘায়। তার পরেই রয়েছে পবার খিদিরপুর, মিডিল চর। এই চরগুলোতে সারাবছর বিভিন্ন ফসল ফলে। চর থেকে উপজেলার বাজারগুলো কাছাকাছি হওয়ায় ফসল কেনা-বেচায় তেমন সমস্যা হয় না। দুর্গম ওই চরে এখন সবুজের ফসলের নয়নাভিরাম দৃশ্য।

এসব ইউনিয়নের কিছু অংশ পদ্মাচরে নদীতে রয়েছে। ফলে পদ্মায় জেগে ওঠা ওইসব চরে বসবাস করেন হাজার হাজার মানুষ। নদীর বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে জাগা চরে কৃষকরা ফলাচ্ছেন প্রয়োজনীয় ফসল। এরমধ্যে আছে ধান, গম, বেগুন, খেসারি, মরিচ, পিঁয়াজ, বাদাম, তিল, ভুট্টা, ধান, গম, চিনা। পদ্মাচরে বছরের বেশিরভাগ সময় থাকে সবুজের সমারোহ। ড্রেজিং না করার কারণে পলি জমে খরস্রোতা নদীর গতি পরিবর্তিত হয়েছে। ফলে জেগেছে নতুন নতুন চরও। জমি-জমা খোয়ানো পরিবারগুলোর জেগে ওঠা চরে নানা ধরনের ফসলের চাষাবাদ করছেন তারা।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, পদ্মাচরে জেগে ওঠা এসব চরে সারা বছরই কোনো না কোনো ফসল ফলে। চরের এসব জমিতে খেসারি, মরিচ, পিঁয়াজ, বেগুন, বাদাম, তিল, ভুট্টা, ধান, গম, চিনা চাষ হচ্ছে। এছাড়া বর্তমানে চরের এসব জমিতে গম, বোরো ধান, সরিষার, ভুট্টা, বিভিন্ন সবজির চাষ হচ্ছে। তবে বিগত বছরের তুলনায় এবছর বিভিন্ন ফসল চাষ বেড়েছে।

চর মাঝারদিয়ারের বাসিন্দা আব্দুর রহিম মিয়া জানান, পদ্মাচরে এখানে গ্রাম ছিল। যেখানে হাজার হাজার মানুষের বসবাস ছিল। বছর দশেক আগে চরের বেশিরভাগ অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। অনেক মানুষের বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। পরবর্তীতে পদ্মা নদীতে জেগে উঠা চরে স্কুল, মাদ্রাসা, মসজিদ, হাট বাজার গড়ে উঠেছে। একই সাথে পদ্মার পানি নেমে যাওয়ায় চরে প্রচুর কৃষি জমি হয়েছে।

স্থানীয় কৃষক আব্দুস শুকুর বলেন, পদ্মাচরে জমিতে বেগুন, খেসারি, বাদাম, কলাই, মাসকলাই, পিঁয়াজ, বাদাম, তিল, ভুট্টা, ধান, গমের চাষ হয়। এছাড়া শীতকালীন নানান সবজির চাষ হচ্ছে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ভালো দামের আশায় স্থানীয় কৃষকরা শহরে বিক্রির জন্য নিয়ে যায়।

তিনি বলেন, বর্ষার সময় বন্যার পানিতে পদ্মাচরে জেগে ওঠা নিচু চরগুলো ডুবে যায়। এতে করে নদীতে পলি পড়ে। পানি নেমে গেলে সেখানে বিভিন্ন ফসল ফলায় কৃষকরা। চরের জমিতে পলিমাটি পড়ায় ফসলও ভালো হয়। চরের বেশির ভাগ ফসলে তুলনামূলক কম পরিচর্যা লাগে। চরের অধিকাংশ মানুষের পেশা কৃষিকাজ ও মাছ ধরা। প্রায় বাড়িতেই ঘরোয়াভাবে লাউ, মুলা, মিষ্টি কুমড়া, পালং শাক, শিম চাষ করে থাকে।

স্থানীয় কৃষক পলাশ পারভেজ বলেন, পদ্মাচরের মানুষ শীতকালে বেশি ব্যস্ত থাকে। মাছ ধরা ও কৃষি কাজ বেশি হয়ে থাকে। তারমধ্যে বেশির ভাগ মানুষের কাজ ফসলের মাঠে। শীতের এ সময়ে চরের জমিতে ধনিয়া, রসুন, পেঁয়াজ, ধান, গম, ভুট্টা বিভিন্ন ফসল চাষ হচ্ছে। আগামী তিন-চার মাসের মধ্যে এসব ফসল উঠানোর পরে চাষ হবে পাট ও বোরো ধান। নদীর চরের জমিতে এখন রোপণ হচ্ছে বোরো ধান। শীতের এই সময়টায় ছোট থেকে বড় সবাই ফসলের মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

মিডিল চরের বাসিন্দা সোহারাব হোসেন কৃষি কাজ করছিলেন নিজের জমিতে। তিনি জানান, এ বছর ২ বিঘা জমিতে ধনিয়ার চাষ করেছেন তিনি। এ মাসের মধ্যেই ফসল ঘরে তুলবেন বলে আশা তার। ধনিয়ার পরে একই জমিতে পাটের চাষ করবেন। এছাড়া বোরো ধানের চাষও করবেন তিনি। আর নদীপাড়ের জমিতে বোরো ধানের চাষ করেছেন।

তিনি বলেন, সাত থেকে আট বিঘা চরের জমিতে তিনি গমের চাষ করেছেন। এছাড়া আরও ছয় বিঘা জমিতে তিনি বোরো ধানের চাষ করবেন। কয়েকদিনের মধ্যে তিনি ধানের চারা রোপণ করবেন। সেই লক্ষ্যে তার বোরো ধানের বীজতলার চারা প্রস্তুত হয়ে গেছে। দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে পদ্মাচরে ধানের জমি প্রস্তুত করবেন বলে জানান তিনি।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোজদার হোসেন বলেন, পদ্মাচরে জেগে ওঠা এসব চরে সারা বছরই কোনো না কোনো ফসল ফলে। চরের জমির উপরিভাগে পলি মাটির পরিমাণ বেশি হওয়ায় রাসায়নিক সার কম প্রয়োজন হয়। এ কারণে উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় লাভও বেশি হচ্ছে। বর্তমানে চরের এসব জমিতে খেসারি, মরিচ, পিঁয়াজ, বাদাম, তিল, ভুট্টা, মসুর, গম, চিনাআলু ও ধানের চাষ হচ্ছে। এছাড়া, বিগত বছরের তুলনায় এবছর সবজির দাম ভালো থাকায় কৃষরা বিভিন্ন সবজি চাষ বেড়েছে।

আরএইচএফ/এসআর

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,