চট্টগ্রামে দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে রংপুর রাইডার্স খুলনাকে ৭৮ রানে হারিয়েছে । এদিন, ব্যাট হাতে সাকিব-মেহেদির ঝড়ের পর বল হাতে ইমরান তাহিররের স্পিন বিষে উড়ে গেছে খুলনা টাইগার্স। ম্যাচ সেরা হয়েছেন ইমরান তাহির।
মঙ্গলবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ২০০ ছুঁয়া পাহাড়সম পুঁজি পায় রংপুর। সাকিব-মেহেদির জোড়া অর্ধশতকে ৫ উইকেটে তুলে ২১৯ রান। রেকর্ড রান তাড়া করতে নেমে পেরে উঠেনি খুলনা। ১৮.২ ওভারে ১৪১ রানেই গুটিয়ে গেছে তারা৷ আসরে যা খুলনার টানা চতুর্থ হার, বিপরীতে রংপুরের টানা পঞ্চম জয়। সব মিলিয়ে সপ্তম।
জয়ের ভীতটা গড়ে দেন সাকিব। আগের দুই ম্যাচে ভালো শুরুর পরই ইনিংস বড় করতে না পারলেও আজ ইনিংসটা নেনে নেন সাকিব। আসরে নিজের ষষ্ঠ ম্যাচে এসে তুলে নিলেন প্রথম অর্ধশতক। তবুও মাত্র ২০ বলে, ৫ ছক্কা আর চার বাউন্ডারিতে। চলতি বিপিএলে তার চেয়ে কম বলে ফিফটি হাঁকাতে পারেননি আর কেউ!
সাকিব যখন মাঠে নামেন মাত্র ৭ রানে রনি তালুকদারকে হারিয়ে বসেছে রংপুর। এক ওভার পর ফেরেন রেজা হেন্ড্রিকসও (৪)। দু'জনকেই ফেরান লুক উড। তবে সাকিব তাতে পাত্তা দেননি, খেলতে থাকেন নিজের মতো। নাসুমের এক ওভারে নেন ২৬ রান। আর ২০ বলে পূরণ করেন ফিফটি।
শেখ মেহেদীর সাথে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে রংপুরকে এনে দিয়েছেন বড় সংগ্রহের ভীত। দু'জনের ৫৪ বলের জুটিতে এসেছে ১০৯ রান। সাকিব ৩১ বলে ৬৯ করে আউট হন ১১.২ ওভারে লুক উডের তৃতীয় শিকার হয়ে। সাকিবের বিদায় অবশ্য টলাতে পারেনি মেহেদীকে, অর্ধশতক তুলে নেন তিনিও।
১৫.২ ওভারে নাসুম আহমেদের শিকার হবার আগে ৩৬ বলে করেন ৬০ রান। এরপর নুরুল হাসান সোহানের ১৩ বলে ৩২* রানের ঝড়ে ২০০ পাড়ি দেয় রংপুর। প্রথমবারের মতো মাঠে নেমে প্রেটোরিয়াস করেন ১২ বলে ১৭।* তবে আরেক বিদেশি জিমি নিশাম আলো ছড়াতে পারেননি, ফেরেন ১৫ বলে ১৩ করে।
নাসুম ৩ ওভারে ৫৫ রানে নেন ১ উইকেট। ৫০ রান দেন নাহিদুল ইসলাম। তবে ১৯ রানে ৩ উইকেট নিয়ে খুলনার সেরা বোলার লুক উড।
২২০ রানের লক্ষ্য ছুড়ে দিয়েও অবশ্য স্বস্তিতে ছিল না রংপুর। প্রতিপক্ষ শিবিরে যখন এভিন লুইস, এলেক্স হেলসের মত ব্যাটাররা থাকবেন, তখন অস্বস্তি থাকাটাই স্বাভাবিক। তবে তৃতীয় ওভারে ভয়ংকর হয়ে উঠার আগে লুইসকে ফিরিয়ে প্রথম বিপদটা কাটিয়ে দেন সাকিব। পরের সবটা অবশ্য বুঝে নেন ইমরান তাহির।
যদিও জ্বলে উঠেছিলেন এলেক্স হেলস। দ্রুত তুলে নিয়েছিলেন ফিফটিও, তবে ইমরান তাহির বেশিদূর যেতে দেননি তাকে। ফেরান ৩৩ বলে ৬০ রানে৷ এর আগে অবশ্য আরো দুইটা উইকেট তুলে নেন এই প্রোটিয়া, ফেরান খুলনা অধিনায়ক এনামুল হক বিজয়কে ৫ ও আফিফ হোসেনকে ১১ রানে৷
হেলসকে ১১.৪ ওভারে ফেরানোর পরের বলেই আকবর আলিকেও (০) ফেরান তাহির। পরের ওভারে এসে পূরণ করেন পাঁচ উইকেটের মাইলফলক। এবার তার শিকার হাবিবুর রহমান সোহান। ১৩ বলে ১৩ রানে আউট হন এই ব্যাটার। পাঁচ উইকেট পাওয়ার দিনে আরো একটা কীর্তি গড়েছেন তাহির, স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে ছুঁয়েছেন ৫০০ উইকেটের মাইলফলক।
এরপর শেখ মেহেদি, জিমি নিশাম ও হাসান মাহমুদ নেন একটা করে উইকেট। ১৯তম ওভারে বল হাতে ফিরে জয় নিশ্চিত করেন সাকিব। নাহিদ রানার স্ট্যাম্প ভেঙে দ্বিতীয় উইকেটের দেখা পান বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার।
এই জয়ের ফলে ৯ ম্যাচের ৭টিতেই জিতল রংপুর। আছে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষেই। ১৪ পয়েন্ট তাদের। সেই সাথে প্লে অফে এক পা দিয়ে রাখল দলটা। বিপরীতে আট ম্যাচের চারটা হেরে প্লে অফ নিয়ে শঙ্কার মুখে খুলনা।
এমবি