For English Version
রবিবার ৬ অক্টোবর ২০২৪
হোম

গুমাই নদের ভাঙনের কবলে ১৫ আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর

Published : Thursday, 8 February, 2024 at 2:10 PM Count : 160

সুনামগঞ্জেধর্মপাশা উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়নের মাসকান্দা গ্রামে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় গৃহহীন ও ভূমিহীনদের জন্য নির্মাণ করা ১৫টি পাকা বসতঘর গুমাই নদের ভাঙনের হুমকির মুখে পড়েছে। এতে করে এখানে বসবাসকারী ১৫টি পরিবারের অর্ধশতাধিক মানুষ আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। নদের ভাঙনের কবল থেকে বসতঘরগুলো রক্ষায় বর্ষার আগেই প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন এখানকার বাসিন্দারা।

উপজেলা প্রশাসন ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গুমাই নদটি উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়নের মাসকান্দা গ্রামের উত্তর পাশ দিয়ে এবং পাশের মধ্যনগর উপজেলার খালিসাকান্দা গ্রামের দক্ষিণ পাশ দিয়ে বয়ে গেছে। মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় গুমাই নদের দক্ষিণ পাশে সরকারি খাস জায়গায় মাসকান্দা গ্রামের ১৫টি গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারের জন্য ২৫ লাখ ৬৫ হাজার টাকা ব্যয়ে ২০২১ সালের জুন মাসে ১৫টি আধাপাকা বসতঘর নির্মাণ করা হয়। গত দুই বছর ধরে ১৫টি পরিবারের অর্ধশতাধিক মানুষ এখানে বসবাস করে আসছেন।

বসতঘরগুলো নদের তীরবর্তী। গত দুই বছর ধরে বর্ষায় নদে ব্যাপক ভাঙন দেখা দেয়। উপজেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় ঘরগুলো ভাঙনের কবল থেকে রক্ষায় গত দুই বছর ধরে বর্ষায় বাঁশের বেষ্টনী ও বস্তাভর্তি মাটি ফেলা হচ্ছে। ভাঙনের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় বসতঘর সংলগ্ন জায়গা থেকে মাটি ধসে নদীতে পড়ছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, গুমাই নদের ভাঙন এই ১৫টি বসতঘর থেকে ৮ থেকে ১০ ফুট দূরে রয়েছে। এছাড়া গ্রামের সামনের সড়ক থেকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বসতঘরগুলোতে আসা যাওয়ার জন্য কোনো সংযোগ সড়ক নেই।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা মিহির সরকার (৭০) বলেন, আমরা ১৫টি পরিবারের ৬০-৭০ জন মানুষ এই ঘরগুলোতে দুই বছর ধইরা থাকতাছি। নদীর ভাঙন রক্ষায় উপজেলা প্রশাসন থাইকা দুই বছর ধইরা বাইস্যা (বর্ষা) মাসেও বাঁশের বেড়া ও বস্তাভর্তি মাটি ফালায়। অহন ভাঙন বাইরা যাওনে আমরা হুমকির মুখে পড়ছি। যে কুনুসময় মাটি ধইসা দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আমরা ইউএনও স্যাররে ঘটনাডা জানাইছি।

আরেক বাসিন্দা মনোরঞ্জন সরকার (৬৫) বলেন, সরকার থাইক্যা ঘর পাওনে মনে শান্তি আইছিল। অহন ঘর ভাইংগা কুনসময় নদীত যায় হেই চিন্তায় রাইতে ভালা কইরা ঘুমাইতামও হারি না।

দোয়েল সরকার (৩০) বলেন, অতদিন মাইনসের বাড়িত আছলাম, ভালাই আছিলাম। কুনু ডর আছিইন না, ঘর লইয়া চিন্তাও আছিইন না। অহন নদী যেই ভাবে ভাংতাছে, ঘরগুলা ভাইঙ্গা গেলে আমরা থাকবাম কই?

কলি সরকার (৩৫) বলেন, আমরার গেরামের সামনের সড়ক থাইকা বাড়িতে উডনের কুনু সড়ক নাইগা। বাইস্যা মাস নৌকা না ফাইলে হানিতে কাফড় ভিজাইয়া গেরামের সামনের সড়হ যাইতে অয়।

পাইকুরাটি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক ইকবাল বলেন, গুমাই নদের ভাঙনে আশ্রয়ণ প্রকল্পের নির্মাণাধীন ঘরে ১৫টি পরিবারের সদস্যরা খুবই আতঙ্ক ও ঝুঁকির মধ্যে আছেন। দ্রুত বসতঘরগুলে রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানাচ্ছি।

ধর্মপাশা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা আবদুল মোত্তালেব সরকার বলেন, গুমাই নদের ভাঙনে নদের একপাশে ভরাট হয়ে অন্যপাশে ভাঙন ধরেছে। ভরাট করা মাটি খনন করে ভাঙনের স্থানে ফেলে এবং নদীতে পানির প্রবাহ পরিবর্তন করা হলে ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা পাওয়া যেতে পারে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দীন বলেন, আমি সম্প্রতি আশ্রয়ণ প্রকল্পের এসব বসতঘরগুলো পরিদর্শন করেছি। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, খোঁজ নিয়ে এ ব্যাপারে দ্রুত সময়ের মধ্যে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

-একে/এমএ

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,