গৃহবধূর মরদেহ রেখে পালালেন স্বামী
Published : Thursday, 8 February, 2024 at 12:47 PM Count : 169
ভোলার চরফ্যাশনে এক গৃহবধূর মরদেহ রেখে পালিয়ে গেছেন তার স্বামী। বুধবার রাত ৮টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ওই গৃহবধূ মারা যান। তার মরদেহ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বেডে রেখে পালিয়ে যান তার স্বামী।
বৃহস্পতিবার সকালে ওই গৃহবধূর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন শশীভূষণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনামূল হক।
মৃত আসমা বেগম শশীভূষণ থানার এওয়াজপুর ইউনিয়নের পশ্চিম এওয়াজপুর গ্রামের আবদুর রশিদের মেয়ে ও একই উপজেলার জাহানপুর ইউনিয়নের ওমরাবাজ গ্রামের আজাদ হোসেন মাঝির স্ত্রী।
মৃত গৃহবধূর পরিবারের অভিযোগ, আসমাকে মারধরের পর মুখে বিষ ঢেলে হত্যা করেছে তার স্বামী আজাদ মাঝিসহ শ্বশুর বাড়ির সদস্যরা।
আসমা বেগমের মা জাহানারা বেগম জানান, ১২ বছর আগে আজাদ হোসেন মাঝির সঙ্গে পারিবারিক ভাবে আসমার বিয়ে হয়। তাদের ঘরে তিন কন্যা সন্তান রয়েছে। তৃতীয় কন্যা সন্তান জম্ম হওয়ার পর থেকেই জামাতা আজাদ তার মেয়ে আসমাকে নানা অজুহাতে প্রায় সময়ই মারধর করত। মঙ্গলবার বিকেলে পানি খাওয়ার বাটি পরিষ্কার করতে দেরি হওয়ায় মেয়েকে জামাতা বেধড়ক মারধর করেন। পরে সন্ধ্যার আগে মেয়ে তাকে মারধরের ঘটনাটি মুঠোফোনে জানিয়েছেন।
তিনি জানান, গভীর রাতে জামাতা আজাদ তাকে ফোন করে জানান তার মেয়ে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। তাকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেছেন। জামাতার খবরে তিনি বুধবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখেন বেডে পড়ে আছে মেয়ের নিথর দেহ।
মৃতের ভাই জসিম উদ্দিন অভিযোগ করেন, আজাদ তার বোনকে প্রায় সময় মারধর করত এবং টাকা চাইত। তিনি দিনমজুরের কাজ করে সাধ্যমতো টাকা দিতেন বোনের স্বামীর হাতে। মঙ্গলবার বোনের জামাই বোনকে মারধর করে মুখে বিষ ঢেলে দেন। পরে অবস্থার বেগতিক দেখে তাকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। রাতে বোন আসমা মারা গেলে তার মরদেহ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রেখে পালিয়ে যান তিনি। পরে খবর পেয়ে শশীভূষণ থানা পুলিশ বোনের লাশ থানায় নিয়ে যায়।
মৃত গৃহবধূর মেয়ে শিশু সামিয়া জানায়, বাবা মাকে লাঠি দিয়া পিটাইছে। পরে মা ঘুম দিছে। মাকে ডাকছি মা ওঠে নাই।’
ঘটনার পর পরই মারা যাওয়া গৃহবধূর স্বামী আজাদ মাঝিসহ তার পরিবারের সদস্যরা পালিয়ে যাওয়ায় তাদের বক্তব্য জানা যায়নি।
ওসি জানান, বিষক্রিয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে গৃহবধূর মরদেহ সকালে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর আসল কারণ
জানা যাবে। অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
-এসএফ/এমএ