For English Version
রবিবার ৬ অক্টোবর ২০২৪
হোম

মুজিবনগরে পেঁয়াজ চাষীরা বিপাকে

Published : Friday, 2 February, 2024 at 12:36 PM Count : 318



প্রচন্ড ঠান্ডা সাথে ঘনকুয়াশায় মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলায় প্রদত্ত নাম হলো সুখসাগর পেঁয়াজ (ভারতীয় ‘রেড এন-৫৩’ নাসিক জাত)। এই পেঁয়াজে ছত্রাকের আক্রমণ হয়েছে। বিভিন্ন প্রকারের ছত্রাকনাশক ছিটিয়ে পরিত্রাণ না পাওয়ায় কৃষকেরা বিপাকে পড়েছেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে কোন প্রকার সহায়তা না পাওয়ার অভিযোগ করেন তাঁরা।

মুজিবনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল মোমিন বলেন, তীব্র শীত ও কুয়াশার কারণে পারপাস ব্লাসজনিত রোগে আক্রান্ত হয়েছে উপজেলার সুখসাগর জাতের পেঁয়াজের জমি। বিশেষ করে এই জাতের পেঁয়াজ আকারে বড় ও প্রচুর পরিমাণে পানি ধারণ করতে পারে। পেঁয়াজের কলিতে ছত্রাকের আক্রমণ ঘটলে পেঁয়াজের ফলন কমার আশংকা থাকে। কৃষি অধিদপ্তর পরিক্ষা নিরিক্ষা করছে, যতদ্রুত সম্ভব উন্নত মানের ব্যবস্থাপত্র দেওয়ার জন্য। 
স্থানীয় কৃষকেরা জানান, ২০১২ সালের দিকে মুজিবনগর উপজেলায় ভারতীয় রেড এন-৫৩ জাতের নাসিক লাল বল জাতের পেঁয়াজ বীজ অতি গোপনে চোরায় পথে প্রবেশ করে উপজেলায়। পরে ওই বছরে এক বিঘা জমিতে এই জাতের বীজ বপন করে কৃষকেরা ২০০ মণ পেঁয়াজ উৎপাদন করতে সক্ষম হয়। পরে উপজেলায় বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে অনেকে আগ্রহ নিয়ে ওই জাতের পেঁয়াজ চাষ করে স্বাবলম্বী হয়ে পড়েন। এই কারণে স্থানীয়রা এই জাতের পেঁয়াজের নামকরণ করে সুখসাগর।

কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, রেড এন-৫৩ নাসিক জাতের পেঁয়াজ ছাড়াও উপজেলায় বারি- ১,২,৩,৪,৫, তাহেরপুরি, খরিপ- ১, ২ জাতের গ্রীষ্মকালিন পেঁয়াজের চাষ হয়ে থাকে।

মুজিবনগর উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, চলতি মৌসূমে মুজিবনগর উপজেলায় সুখসাগর ও তাহেরপুরি জাতের পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে ১ হাজার ৫৫৫ হেক্টর জমিতে। গত বছরে ১ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের চাষ হয়েছিল। পেঁয়াজের বীজ, রোপণ, সার, সেচ, কীটনাশকসহ ঘরে উঠানো পর্যন্ত প্রতি বিঘা জমিতে খরচ হচ্ছে ৮৫ থেকে ৯০ হাজার টাকা। 

কৃষকেরা জানায়, ছত্রাকের আক্রমণে ফলন বিপর্যয় ঘটে তাহলে বড় আকারে লোকসানে পড়তে হবে কৃষকদের। অপরদিকে এই জাতের পেঁয়াজ দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা সম্ভব হচ্ছে না। পেঁয়াজ সংরক্ষণের জন্য কোন হীমাগার নেই জেলাতে। 

মুজিবনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামের কৃষক মিয়ারুল শেখ চলতি মৌসুমে ৪ বিঘা জমিতে ভারতীয় সুখসাগর পেঁয়াজের চাষ করেছেন। তিনি বলেন, এর আগে পেঁয়াজের জমিতে এমন রোগ কখনই দেখা যায়নি। প্রথম দিকে পেঁয়াজের কলির একটি ডগাতে এই নতুন ধরণের ছত্রাক আক্রমণ করে ডগাকে শুকিয়ে ফেলছে। এরপর সমস্ত জমিতে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে ছত্রাক। এতে পেঁয়াজের কলি শুকিয়ে গিয়ে বড় ধরণের ফলন বিপর্যয়ের আশংকা দেখা দিচ্ছে। 

সরেজেমিনে উপজেলার শিবপুর, ভবানিপুর, বিশ্বনাথপুর, আনন্দবাস, টেংরামারী সহ উপজেলার আরো ৮টি গ্রামে মাঠের পর মাঠ পেঁয়াজ ক্ষেতগুলো আক্রান্ত হয়ে পড়েছে এই রোগে। উপজেলার কেদারগঞ্জ এলাকার সিংড়ার মাঠে পেঁয়াজের ক্ষেত রয়েছে ২২ একর জায়গা জুড়ে। 

সেখানকার চাষী জমছের মিয়া বলেন, গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি আর ঘন কুয়াশার পর থেকে পেঁয়াজের ক্ষেতে এই ধরণের ছত্রাকের আক্রমণ দেখা দেয়। নামি দামি কোম্পানির ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করেও কোন সুফল পাওয়া পাইনি। এবারে পেঁয়াজে মোটা দাগের লোকসান হতে পারে বলে ধারণা করছে চাষীরা। 

উপজেলার দির্ঘদিন থেকে পেঁয়াজের চাষ করে আসছেন মহাব্বত হোসেন। তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, প্রতি বছরে বিশেষ করে পেঁয়াজ উৎপাদনের মৌসুমে ৫ থেকে ৭ বিঘা জমিতে দুই জাতের পেঁয়াজ চাষ করা হয়। ভারতীয় সুখসাগর জাতের পেঁয়াজ থেকে গত বছরে বিঘা প্রতি জমিতে ১৮০ থেকে ২০০ মন ফলন পাওয়া গেছে। চলতি মৌসূমে এই রোগের কারণে পেঁয়াজের ফলন ১০০ মণের নিচে নেমে আসবে বলে আশঙ্কা রয়েছে।

মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিজয় কৃষ্ণ হালদার বলেন, চলমান বৈরি আবহাওয়া জনিত ছত্রাকের আক্রমণ থেকে পেঁয়াজ সুরক্ষা করতে বিঘা প্রতি জমিতে ৫ কেজি মিউরিট অফ পটাশ (এমওপি) সার ও ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করতে হবে। আবহাওয়া ভালো হলে এসব রোগ অনেকাংশে কমে আসবে।

এমআরএ/এসআর

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,