For English Version
রবিবার ৬ অক্টোবর ২০২৪
হোম

মেঘনা-তেতুলিয়ায় মৎস্য আহরণে প্রযুক্তির ব্যবহার

Published : Sunday, 28 January, 2024 at 11:33 AM Count : 383

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যেমন কমেছে মাছের উৎপাদন তেমনই ভাবে নদীতে চলাচলে তৈরি হচ্ছে নানা সংকট। জেলেরা সারা দিন নদীতে জাল ফেলেও কাঙ্খিত মাছ না পেয়ে খালি হাতে হতাশা নিয়ে ফিরছেন বাড়ি। নদীতে ডুবোচর আর দুর্যোগের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় এই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। 

ভোলার চরফ্যাশনের নদ-নদীতে সংকট দূর করতে এবার জেলেদের ট্রলারে জুড়ে দেওয়া হয়েছে ফিশ ফাইন্ডার জিপিএস সুবিধা। যার মাধ্যমে জেলেরা নদী ও সাগরে মাছ ধরতে যাওযার সময় প্রতিকূল পরিবেশ মোকাবেলা, নিজেদের গতিপথ ও মাছের পর্যাপ্ততা নির্ণয় করতে পারবে। এতে করে একদিকে যেমন জেলেরা নদী থেকে মাছ পাবে, তেমনই আর্থিক ভাবেও লাভবান হতে পারবেন। পারবেন প্রকৃতি দুর্যোগ মোকাবেলা করতে।

সাগর ও নদীতে মাছ ধরার উপর নির্ভরশীল চরফ্যাশনের উপকূলীয় এলাকার দুই লাখেরও বেশি জেলে। জীবনের ঝুঁকি আছে জেনেও তারা অথই সমুদ্রের হাতছানিতে ছোট ছোট নৌযানে করে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছেন। এ এক চ্যালেঞ্জিং পেশা, নেশাও বটে। 

তবে সাম্প্রতিক সময়ে হঠাৎ করে কমে যায় চরফ্যাশনের জলসীমানায় ইলিশের বিচরণ। জেলেরা বলছেন, এবারের মত এত কম ইলিশ পাইনি কোনো বছর। যার ফলে জেলে, আড়ৎ মালিক ও ইলিশ ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা ধারদেনায় জড়িয়ে পড়েছেন। নদীতে এখন ডুবোচর তাই সঠিক স্থানে জালও ফেলতে পারছেন না জেলেরা। এমন প্রেক্ষাপটে জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে লড়াই করে টিকে থাকতে জেলেরা দলগত ভাবে জিপিএস পদ্ধতি ব্যবহার করতে শুরু করেছেন। 
জেলার মনপুরা চরফ্যাশনের ঢাল চর, চর কুকরি মুকরি, মনুরা, চর কাজল, মুজিবনগর সামরাজ, কচ্ছপিয়া মাইনুদ্দিন, কুয়াকাটা, মহিপুর এলাকার ট্রলারগুলোতে চোখে পড়ছে এখন জিপিএস পদ্ধতি। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে জেলেরা তাদের নিজেদের অবস্থান নির্ণয়ের পাশাপাশি কোথায় মাছ আছে তা খুব সহজেই জানতে পারেন। তাছাড়া তাদের চলার পথে ডুবোচর আঘাত আনছে কি না এটাও তারা সহজে নির্ণয় করতে পারছেন। 

জেলেরা জানান, আমরা এখন গভীর সাগরে জিপিএস মনিটরে দেখে কোথায় মাছ আছে তার নির্ণয় করে জাল ফেলতে পারছি। তাই আগের থেকে এখন অনেক মাছ ধরার সুবিধা বাড়ছে। শুধু ইলিশ নয়, আমাদের জালে এখন হরেক রকমের মাছ ধরা পড়ছে। চরফ্যাশনের উপকূলীয় এলাকায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এফডিএ প্রথমে এই সুবিধা তুলে দিয়েছে জেলেদের হাতে।

সংস্থার নির্বাহী পরিচালক কামাল উদ্দিন জানান, জেলেরা যদি এই প্রযুক্তি ব্যবহার করেন, তবে জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগের সময় তারা নিজেদেরকে দুর্যোগ থেকে রক্ষা করতে পারবেন। তারা এ যাবৎ চরফ্যাশনের বিভিন্ন মাছ ঘাটে ২৫টি জিপিএস (গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম) জেলেদের ট্রলারে স্থাপন করেছেন। 

চর কুকরির চেয়ারম্যান আবুল হাসেম মহাজন জানান, জিপিএস সুবিধার মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত জেলেদের জীবনমান উন্নয়নে জিপিএস কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

উপজেলা মৎস কর্মকর্তা মারুফ হসেন মিনার জানান, জেলেদের নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনা ছাড়াও সাগরে সাধারণ ভাবে মৎস সম্পদ আহরণে কত সংখ্যক মাছ ধরার ট্রলার বা নৌযান কোন অবস্থানে রয়েছে তা মনিটরিং করার মতো আধুনিক ব্যবস্থাপনা এখনো প্রয়োগ হচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে অনেকটা সহজ সমাধান দিতে পারে জিপিএস। এই এলাকার সকল জেলেকে এই সুবিধা দেওয়া হলে তারা সাগরে কম সময়ের মধ্যে বেশি মাছ ধরতে পারবেন। পাশাপাশি তারা শক্ত হাতে দুর্যোগকালে মোকাবেলা করতে পারবেন। জেলায় ২০২১-২২ সালে এক লক্ষ ৯২ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ উৎপাদন করার কথা থাকলেও তা থেকে এক হাজার মেট্রিক টন কম হয়েছে। যা নিয়ে চিন্তিত মৎস বিভাগ।

-এসএফ/এমএ

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,