For English Version
রবিবার ৬ অক্টোবর ২০২৪
হোম

স্বর্ণের চালান ধরিয়ে দেওয়াকে কেন্দ্র করে ঝিনাইদহে জোড়া খুন

Published : Friday, 19 January, 2024 at 10:17 PM Count : 155


ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার নেপা ইউনিয়নের ভারত সীমান্ত ঘেঁষা ৫ কিলোমিটার জুড়ে বাঘাডাঙ্গা গ্রাম।  গ্রামের বেশ কিছু মানুষ চোরাকারবারির সঙ্গে জড়িত। তাদের মধ্যে কেউ কেউ পূর্বে গরু চোরাচালান করতো, এখন সবাই স্বর্ণ চোরাচালান করে বলে জানা গেছে। 

গত বুধবার (১৭ জানুয়ারি) গুলি করে দুইজনকে হত্যার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিরাও স্বর্ণের চোরাচালানের সাথে জড়িত। স্বর্ণের চালান ধরিয়ে দেওয়ার কারণেই তাদের মধ্যে দ্বন্দ্বে দুজনকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

জানা যায়, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্তে হঠাৎ স্বর্ণ চোরাচালানকারিরা সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি স্বর্ণের চালান আটকের পর বিষয়টি দৃশ্যমান হয়েছে। 
সর্বশেষ বুধবার মহেশপুর উপজেলার মাটিলা সীমান্ত থেকে ৪০টি স্বর্ণের বার জব্দ করে মহেশপুর ৫৮ বিজিবি। এসময় রিমন হোসেন নামের একজনকে আটক করা হয়।

পুলিশের দেওয়া তথ্যে জানা যায়, ২০০১ সালের পর থেকে শুধু বাঘাডাঙ্গা সীমান্তে চোরাচালানের সময় বিএসএফের গুলিতে অন্তত ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে।

বিজিবি'র দেওয়া তথ্যে জানা যায়, ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মহেশপুর সীমান্ত এলাকা থেকে ৩০৪টি স্বর্ণের বার জব্দ করে বিজিবি। যেখানে ৩৮ কেজি ৪০ গ্রাম ওজনের ওই স্বর্ণের বাজারমূল্য আনুমানিক ২৬ কোটি ২৯ লাখ ১৪ হাজার টাকা। এ সময় আটজন চোরাকারবারি আটক হয়েছে। মামলা হয়েছে শুধু মাত্র ১২টি।

স্থাণীয় জনপ্রতিনিধিদের থেকে জানা যায়,  স্বর্ণের চালান ধরিয়ে দেওয়াকে কেন্দ্র করে, উপজেলার বাঘাডাঙ্গা বাজারে বেশকিছুদিন আগে ইব্রা-আকালে (তরিকুল ইসলাম) দু'জন মিলে শামীম ও মন্টুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মারধর করে। ওই মারামারির ঘটনায় শামীমের মাথা কেটে যায়। 

ওই ঘটনায় ইব্রা ও আকালের বিরুদ্ধে মামলা হলে দুজনকে বেশ কিছুদিন হাজতবাস করতে হয়। জেল থেকে বের হয়ে ইব্রা ও আকালে বাড়িতে আসার পর শমীম ও মন্টুসহ লোকজন তাদের বাড়িতে হামলা করে ওদের দুজনকে মারার জন্য। এসময় হামলা থেকে বাঁচার জন্য অবৈধ অস্ত্র ( আগ্নেয়াস্ত্র) তাদের দিকে তাক করে প্রথমে সতর্ক করে। তারপরও শামীম, মন্টু যখন বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করে তখন তারা গুলি করে। ওই গুলিতে তারা মারা যায়।

শামীমের চাচাতো ভাই মান্নান জানান, ২ মাস আগে বিজিবির হাতে স্বর্ণের একটি চালান ধরা পড়ে। গ্রামের আকালে (তরিকুল ইসলাম) ওই স্বর্ণের চালান ধরিয়ে দেন বলে অভিযোগ করে অন্য কারবারিরা। এ নিয়ে বাঘাডাঙ্গা বাজারে মারামারির ঘটনাও ঘটে। ওই মারামারিতে আকালেরা শামীমকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেয়। ওই ঘটনা এখনো মিমাংসা হয়নি। বুধবার শামীমরা আকালেদের বাড়িতে যায় প্রতিশোধ নিতে। এসময় ইব্রারা প্রকাশ্যে গুলি করে। শামীমের সাথে সাথে মৃত্যু হয় এবং মন্টুকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায়।

বাঘাডাঙ্গা ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ওবাইদুল ইসলাম জানান, গত দুই মাস আগে আকালেদের (তরিকুল) সাথে শামীমদের মারামারির ঘটনা ঘটে। ওই মারামারিতে শামীমের মাথা কেটে যায়। আকালেদের (তরিকুল) বিরুদ্ধে মামলা হলে, ইব্রা-আকালে (তরিকুল) কিছুদিন জেল খেটে বাড়িতে এসেছে। শামীমরা ওই মারামারির প্রতিশোধ নিতে আকালের বাড়িতে আসে। আকালের (তরিকুল) বাড়িতে হামলা হলে তিনি প্রথমে অস্ত্র বের করে তাঁদের (শামীম-মন্টু) চলে যেতে বলে। তাঁরা না যাওয়ায় তরিকুল বাড়ির সাদে উঠে গুলি চালান। এতে শামীম -মন্টু দুজন নিহত হন। ঘটনার পর থেকে আকালে ( তরিকুল) ও ইব্রা পলাতক রয়েছে।

তিনি আরো জানান, গুলি করে হত্যার ঘটনার পর থেকেই চোরাচালানের বিষয়টি সবার সামনে আসে। তাদের বিরুদ্ধে এরআগে কখনো এমন অভিযোগ পাওয়া যায়নি।

মহেশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাবুবুর রহমান জানান, আমাদের প্রাথমিক ধারণা স্বর্ণ চোরাচালানের ঘটনায় তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল। যার কারণে দুজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।

তিনি জানান, নিহত শামীমের ভাই বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ এ পর্যন্ত কাউকে আটক করতে পারেনি। হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্তসহ জড়িত অন্যদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।

এসএমআর/এমবি


« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,