ঠান্ডায় আগুন পোহাতে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ, বাঁচতে চায় পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা কল্পনা
Published : Monday, 15 January, 2024 at 3:55 PM Count : 183
গত কয়েকদিন ধরে জেলা জুড়ে চলছে তীব্র শীতের দাপট। সেই শীত নিবারণে আগুন পোহাতে গিয়ে গত বৃহস্পতিবার অসাবধানতা বশত অগ্নিদগ্ধ হয় পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা কল্পনা আক্তার (১৯)।
টাকার অভাবে চিকিৎসা নিতে না পারায় সেই কল্পনা এখন মৃত্যুর প্রহর গুনছেন। গর্ভের সন্তান আর নিজেকে বাঁচাতে সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা চেয়েছেন হতদরিদ্র কল্পনা।
কল্পনা লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের কোদালখাতা গ্রামের কৃষি শ্রমিক রুবেল মিয়ার স্ত্রী এবং একই উপজেলার ফুলগাছ গ্রামের আব্দুল করিমের মেয়ে।
কল্পনার স্বামী দিনমজুর রুবেল জানান, দেড় বছর আগে কল্পনার সাথে পারিবারিকভাবে তাঁদের বিয়ে হয়। পাঁচ মাস আগে কল্পনার গর্ভে সন্তান আসে। চলমান শৈত্য প্রবাহে শীত নিবারনের জন্য বৃহস্পতিবার দুপুরে উনুনের পাশে আগুন পোহাতে বসে। এসময় অসাবধানতাবশত তার পরনের কাপড়ে আগুন লেগে যায়। এতে তার শরীরের হাঁটুর নিচ থেকে গলা অব্দি পুড়ে যায়। খবর পেয়ে রুবেল তাৎক্ষণিকভাবে লালমনিরহাট জেলা সদর হাসপাতালে কল্পনাকে নিয়ে যায়। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রংপুরে নিয়ে যেতে বলেন। রুবেল ওইদিন বিকেলে কল্পনাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করান। পরদিন শুক্রবার থাকায় চিকিৎসক আসেননি।
রুবেল আরো জানান, শনিবার চিকিৎসক কল্পনাকে দেখে ওইদিনই ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে যেতে বলেন।
ডাক্তার বলেছেন, কল্পনার শরীরের সত্তর শতাংশ পুড়ে গেছে। লম্বা সময় ধরে নিবিড় পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে কল্পনার চিকিৎসা করা না গেলে তাঁকে ও তাঁর গর্ভের সন্তানকে বাঁচানো সম্ভব হবে না।
রুবেল ব্যয়বহুল এই চিকিৎসা করাতে না পেরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে নিয়ে আসেন। বর্তমানে কল্পনা তাঁর বাবার বাড়ি ফুলগাছে বিছানায় পুড়ে যাওয়া ক্ষতের যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে।
চিকিৎসকদের মতে, একজন মানুষের শরীরের যত শতাংশ আগুনে পুড়ে যায় তত শতাংশই তার মৃত্যু ঝুঁকি থাকে। লালমনিরহাটের সিভিল সার্জন ডাঃ নির্মলেন্দু রায় বলেন, এরকম অবস্থায় মা এবং সন্তান দু'জনেই মৃত্যু ঝুঁকিতে আছে। বিশেষায়িত হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যার মাধ্যমে তাঁর চিকিৎসা হওয়া দরকার।
কল্পনার স্বামী রুবেল বলেন, আমি দিন এনে দিন খাওয়া মানুষ। যে সামান্য জমানো টাকা ছিল তা রংপুর যাওয়া আসায় এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। নিকটাত্মীয়ের কাছে ধার চেয়েও পাচ্ছি না।
কান্না জড়ানো কন্ঠে রুবেল বলেন, আমার সুখের সংসারটায় সৃষ্টিকর্তা কেন এমন বিপদ দিলো ? কি করবো বুঝতে পারছি না।
কল্পনা আক্তার বলেন, আমি বাঁচতে চাই, আমার সন্তানকে পৃথিবীর আলো বাতাস দেখাতে চাই। এসময় কল্পনা সমাজের বিত্তশালী ব্যক্তিদের কাছে আর্থিক সাহায্যের জন্য আকুতি জানান।
এমএস/এমবি