ছুটিতে এলাকায় এসে নৌকা প্রার্থীর পক্ষে ভোট করে বেড়াচ্ছেন প্রতিরক্ষা অডিট অধিদপ্তরের নীরিক্ষা ও হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা রেজাউল করিম। রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার শিলমাড়িয়া ইউনিয়নের সাতবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা তিনি।
ছুটিতে এসে তিনি রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনের নৌকা প্রার্থী ও এ আসনের সাবেক এমপি আবদুল ওয়াদুদ দারার পক্ষে ভোট চেয়ে বেড়াচ্ছেন। নৌকার প্রার্থীর পক্ষে আয়োজন করা বিভিন্ন সভা-সমাবেশেও উপস্থিত থাকছেন স্বশরীরে।
গতকাল শনিবার রাতে পুঠিয়ার ভাড়ারা এলাকায় নৌকার নির্বাচনী কার্যালয়ে এক সভায় তিনি অংশ নেন। এ সময় নৌকার প্রার্থীর নির্বাচনী এজেন্ট অ্যাডভোকেট আবদুস সামাদ তাকে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন।
ভিডিও দেখা যায়, আবদুস সামাদ বলছেন, ‘আমি আপনাদের মাঝে পরিচয় করিয়ে দিই। আমার সঙ্গে সফরসঙ্গী হিসেবে এসেছেন উনি একজন ডিফেন্সের কর্মকর্তা। ডিফেন্স অর্থাৎ ডিফেন্সের হিসাব কর্মকর্তা। মানে অডিট, উনি অডিট কর্মকর্তা। একটি উপজেলায় অডিটের কর্মকর্তা থাকে না? ওই রকম উনি সারা বাংলাদেশের সেনাবাহিনীদের অডিট করেন। আমাদের ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ছিলেন উনি। ওনার বাড়ি হলো সাতবাড়িয়া, মোল্লাপাড়ার পাশে, শিলমাড়িয়া ইউনিয়নে। উনি ঢাকায় অবস্থান করেন।’
সামাদ আরও বলেন, ‘উনি (রেজাউল করিম) এই নির্বাচনের জন্য এলাকায় চলে আসছেন। এলাকায় শ্রম দিচ্ছেন। আজকে একটু আগে আমাকে ডেকেছিলেন। আমি মোল্লাপাড়ায় দোকান দোকানে ভোট ভিক্ষা করলাম। তারপর একটা মিছিল করলাম। তারপর নেতার ডাকে বাসায় আসলাম। তারপরে আমি এখানে আসলাম। উনার নাম হলো জনাব মো. রেজাউল করিম।’
বিএনপির ভোট নৌকায় নিশ্চিত করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়ে আবদুস সামাদ বলেন, ‘আমরা সকলেই চেষ্টা করবো কেন্দ্রে সকলকে নিয়ে আসার এবং যে বিএনপির মানুষ আসবে তাদেরকে নৌকা মার্কার ভোটটা নিশ্চিত করাবেন। যারা আমার নৌকার ভোটার, তাকে আনার দরকার নাই। সে তাহলে অন্য কাহিনি করবে। যার কারণে সেইভাবে আপনারা কাজ করবেন। নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত।’
জানতে চাইলে নৌকা প্রার্থীর নির্বাচনী এজেন্ট আবদুস সামাদ বলেন, ‘রেজাউল করিম ছুটিতে এসেছেন। আমার সঙ্গে বেড়াতে এসেছিলেন।’
বিএনপির ভোট কীভাবে নৌকায় নিশ্চিত করা হবে এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি মোবাইল ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
এ আসনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও পুঠিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ কে এম নূর হোসেন নির্ঝর বলেন, ‘সরকারি কর্মকর্তা কোনোভাবেই প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন না। এটা আচরণবিধির লঙ্ঘন। কোনো ছবি বা ভিডিও পেলে আমি ব্যবস্থা নেবো।’
জানতে চাইলে প্রতিরক্ষা অডিট অধিদপ্তরের নীরিক্ষা ও হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, ‘সামাজিকতা রক্ষার জন্য আমি প্রোগ্রামে গিয়েছি। এটা আচরণবিধির লঙ্ঘন তা আমি জানতাম না। আপনি বললেন, এখন থেকে আর যাবো না।’
রেজাউল করিমের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিরক্ষা অডিট অধিদপ্তরের প্রশাসনিক কর্মকর্তা তাসনিমা পারভীন বলেন, এ রকম হয়ে থাকলে বিধিবিধান দেখে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে।
আরএইচ/এমবি