শীতকাল আর পিঠা একসূত্রে গাঁথা। দুপুর গড়িয়ে বিকাল হতেই চরফ্যাশনে বাড়তে থাকে শীতের প্রকোপ। সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় কনকনে শীত।
এমন পরিবেশে শীতের পিঠা খেতে কার না ভালো লাগে। শীতের দাপট সামাল দিতে গরম গরম চিতই কিংবা ভাপা পিঠার চাহিদা বাড়ে পিঠা প্রেমীদের কাছে।
আর এই শীতকে ঘিরে চরফ্যাসনে জমে উঠেছে ফুটপাতে শীতের পিঠা তৈরীর ব্যবসা। তাই শীতের বিকাল কিংবা সন্ধ্যার হিমেল হাওয়ায় খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে পিঠা খেতে অনেকেই ভিড় জমাচ্ছেন চরফ্যাশনে ভ্রাম্যমাণ পিঠার দোকানগুলোতে।
এক সময় শীত এলে বাসা বাড়িতে পিঠা তৈরির ধুম পড়ে যেতো। মা বোনেরা তৈরি করতেন নানান রকমের পিঠা। কিন্তু এখন আর তা হয়না। এ কারণে অনেকে বন্ধুবান্ধব কিংবা পরিবার নিয়ে ছুটছেন পিঠার দোকানে। বিকাল থেকে রাত দশটা পর্যন্ত হিমেল হাওয়ায় খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে পিঠা খেতে অনেকেই ভিড় জমাচ্ছেন ভ্রাম্যমান পিঠার দোকানগুলোতে।শীতের পিঠার চাহিদাকে কেন্দ্র করে চরফ্যাশন পৌরসভার বাউন্ডারি ওয়াল ঘেষে সড়কেরর পাশে গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি পিঠার দোকান। শীত আসার সঙ্গে সঙ্গে মৌসুমি পেশা হিসাবে সড়কের পাশে অস্থায়ীভাবে পিঠা বিক্রি করছেন মো.মাজেদ ,মো. বাহাউদ্দিনসহ আরো অনেকেই।
সরেজমিন দেখা যায়, রিকশাচালক, দিনমজুর, শিশু-কিশোর, চাকুরীজীবী, শিার্থী সব শ্রেনী-পেশার মানুষ পিঠার দোকানের ক্রেতা। কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে অনেককে আবার পিঠা খেতে দেখা যায়। অনেকে আবার পরিবারের সদস্যদের জন্য পছন্দের পিঠা নিয়ে যাচ্ছেন বাড়িতে। এক সঙ্গে অনেক পিঠা তৈরির সুবিধার্থে স্থানীয় প্রযুক্তিতে এক সঙ্গে ১২টি চুলা তৈরি করা হয়েছে। যা এক সিলেন্ডারেই চালানো হচ্ছে। গরম গরম ভাপা পিঠা এবং চিতই পিঠা নামছে গ্যাসের চুলা থেকে। ক্রেতারা সারিবদ্ধ হয়ে পিঠা কিনছেন।
কেউ নিয়ে যাচ্ছেন। কেউ আবার দাঁড়িয়ে খাচ্ছেন। কিছু চুলায় ভাপা পিঠা, কিছুতে চিতই আবার কোনোটিতে ডিম পিঠা তৈরি হয়। শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে এসব দোকানে পিঠা বিক্রি। পিঠার পাশাপাশি দোকানগুলোতে রয়েছে নানান প্রকারের ভর্তা।
দোকানী মো. মজিদ জানান, বিকাল চারটা থেকে পিঠা বিক্রি শুরু হয়। সন্ধ্যা হলে ক্রেতা সমাগম বাড়ে, যা রাত দশটা পর্যন্ত চলে। শুঁটকি, কালোজিরা, সর্ষে, ধনিয়াপাতা বাটা, ভর্তাসহ বিভিন্ন উপকরণ মিলিয়ে চিতই পিঠা বিক্রি করা হয় ।এখানে ভাপা আর চিতই পিঠার চাহিদা বেশি। চিতই পিঠা প্রতিটি পাঁচ টাকা এবং ভাপা পিঠা প্রতিটি দশ টাকা করে বিক্রি হয়। ডিম পিঠা প্রতিটি বিক্রি হচ্ছে ত্রিশ টাকা।
পিঠা বিক্রেতা বাহাউদ্দিন বলেন, বছরের এই সময়টা শীতকালীন পিঠা বিক্রি বেশি হয়। বর্তমানে চিতই, ভাপা ও ডিম পিঠা তৈরি করছেন। আর চিতই ও ভাপা পিঠা খাওয়ার জন্য থাকছে নারকেল এবং গুড়সহ নানান পদের ভর্তা।
লাভও ভালো। প্রতিদিন চল্লিশ কেজি(এক মন) চালের গুড়ির পিঠা বিক্রি করেন। এতে প্রতিদিন সাত থেকে আট হাজার টাকার পিঠা বিক্রি হয়। পিঠা খেতে আসা শরিফুল আলম সোয়েব এবং হুমায়ুন কবির জানান, আগে বাসা বাড়িতে মহিলারা হরেক রকমের পিঠা তৈরি করতো, সকলে মজা করে খেতাম। এখন মহিলারা কষ্ট করতে চায়না তাই নিজেরা বাজারে খাই এবং পরিবারের সদস্যদের জন্য বাসায় নিয়ে যাই।
এসএফ/এমবি