জিপিএ-৫ পাওয়া মেয়ের উচ্চশিক্ষা নিয়ে দুশ্চিন্তায় মা-বাবা
Published : Wednesday, 6 December, 2023 at 4:58 PM Count : 276
খুলনার কয়রা উপজেলার ২ নম্বর কয়রা গ্রামের ভ্যানচালক আবুল বাশার গাজীর মেয়ে সাদিয়া সুলতানা রুপা এবার এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন। রুপা কয়রা কপোতাক্ষ মহাবিদ্যালয়ের মানবিক বিভাগ থেকে তিনি এ সাফল্য পান।
এর আগে ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষায় কয়রা সুন্দরবন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন।
দারিদ্র্যের কারণে বর্তমানে সাদিয়া সুলতানার পড়ালেখার খরচ চালানো নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তাঁর মা-বাবা। সাদিয়া সুলতানার পিতা আবুল বাশার গাজী পেশায় ভ্যান চালক। কোমরে ব্যাথার কারণে দীর্ঘ সময় ভ্যন চালাতে পারেননা।
এ কারণে প্রতিদিন ভ্যান ঠেলে মানুষের বাড়িতে সুপেয় পানি পৌঁছে দিয়ে তিন-চারশো টাকার মতো পান। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে তিনি পানির ফেরিওয়ালা নামেও পরিচিত।
আবুল বাশার গাজী বলেন, আমার দুই ছেলে ও এক মেয়ে। মেয়েটাই সবার বড়। অভাবের সংসারে মেয়ের লেখাপড়ার খরচ ঠিকমতো জোগাতে পারিনি। টাকার অভাবে তারা ভালো পোশাক ও স্কুলে যাওয়া-আসার খরচও দিতে পারেনি কখনো। এখন শুনছি, মেয়ে পরীক্ষায় ভালো করেছে। সবাই আমার মেয়ের সুনাম করছে। কিন্তু আমি তো এখন চিন্তায় আছি, মেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চায়। আগামীতে মেয়েকে কীভাবে পড়াবো, এমন ক্ষমতা তো আমার নেই।'
তিনি আরও বলেন, 'মেয়েটা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কোচিং করার বায়না ধরলে, এক মহাজনের কাছ থেকে কিছু টাকা ধার নিয়ে মেয়েকে দিছি।
কয়রা কপোতাক্ষ মহাবিদ্যালয়ে অধ্যক্ষ অদ্রিশ আদিত্য মন্ডল বলেন, সাদিয়া সুলতানা অত্যন্ত মেধাবী। তাঁর আচার-আচরণও ভালো। কিন্তু খুবই গরিব। সমাজের সচেতন মানুষের একটু সহায়তা পেলে মেয়েটির মেধার পরিপূর্ণ বিকাশ ঘটবে।
সাদিয়া সুলতানা রুপা জানায়, উচ্চশিক্ষা অর্জন করে সমাজের অবহেলিত মানুষের জন্য কিছু করতে চাই। আমার বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে চাই। কিন্তু অভাবের কারণে সেটা সম্ভব হবে কি না, জানি না।
তার মা নাসিমা বেগম বলেন, বিয়ের পর থেকেই অভাবের সঙ্গে যুদ্ধ করতে করতে এ পর্যন্ত এসেছেন। সহায়সম্পদ বলতে কিছুই নেই। দুই শতক জমির ওপর বাড়ি করে আছেন। মেয়েটাকে নিয়ে তাঁদের অনেক আশা। কষ্ট করে হলেও মেয়েকে পড়াতে চাই।
এসএম/এমবি